লঞ্চে আগুন: পোড়াদের চিকিৎসা দিতে বরিশালের পথে চিকিৎসকরা

বরিশালে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি লঞ্চের আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসা দিতে ঢাকা থেকে জরুরিভিত্তিতে চিকিৎসকদের একটি দল রওনা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Dec 2021, 12:25 PM
Updated : 24 Dec 2021, 01:52 PM

ওই হাসপাতালের বার্ন ইউনিট বন্ধ থাকায় সেখান থেকে গুরুতর পোড়া রোগীদের ঢাকায় স্থানান্তরের মধ্যেই দলটি রওনা দিয়েছে।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পাঁচ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত এ দলের বরিশাল যাওয়ার কথা শুক্রবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেক।

শুক্রবার গভীর রাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিপুল সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ রোগীদের বেশির ভাগকে বরিশালে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আহতদের মধ্যে ৭০ জনকে এ হাসপাতালে আনা হয় জানিয়ে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমাদের এখানে বার্ন ইউনিট বন্ধ। যারা এসেছেন তাদের অনেকেই দগ্ধ হয়েছেন। ৬৭ জনকে সার্জারি ইউনিটে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।”

সবশেষ গুরুতর আহতদের মধ্যে দুই পরিবারের পাঁচ জনকে আনা হয়েছে ঢাকায়; ভর্তি করা হয়েছে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে বলে জানিয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদক।

এদিকে র‌্যাবের সহকারী পরিচালক আ না ম ইমরান খান জানিয়েছে, মহাপরিচালকের নির্দেশে তারা লঞ্চের আগুনে সংকটাপন্ন দগ্ধ দুই জনকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনছেন।

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অভিযান- ১০ লঞ্চে আগুনে দগ্ধ সংকটাপন্ন দুই জনকে শুক্রবার রাতে র‌্যাবের হেলিকপ্টারে করে বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকায় আনা হচ্ছে।

বরিশাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গুরুতর আহতদের ঢাকায় পাঠানো সময়সাপেক্ষ ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার পাশাপাশি শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটটি বন্ধ থাকায় সেখানে আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

এমন প্রেক্ষাপটে ঢাকা থেকে বিশেষায়িত এ চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল টিম পাঠানোর উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পাঁচ সদস্যের চিকিৎসক দলটি গঠন করে।

এ দলে রয়েছেন ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. নুরুল আলম, ডা. মাসরুর উর রহমান, রেজিস্ট্রার ডা. মোরশেদ কামাল এবং আবাসিক চিকিৎসক ডা. মৃদুল কান্তি সরকার ও ডা. শাওন বিন রহমান রয়েছেন এ চিকিৎসক দলে।

এ দলের চিকিৎসকরা শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বয় করে দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের চিকিৎসা দেবে বলে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. রায়হানা আউয়াল স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে।

বার্ন ইনস্টিটিউট দগ্ধদের পাশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেক সন্ধ্যায় বার্ন ইনস্টিটিউট এসে দগ্ধদের খোঁজখবর নেন।

সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় তিনি ইনস্টিটিউটের ফটকে সাংবাদিকদের বলেন, লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনায় ৩৫ জন নিহত হয়েছেন। ৮১ জনকে বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০ জনকে ঢাকায় আনা হয়েছে।

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ যাত্রীদের বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

“এই ১০ জনের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। দগ্ধদের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল এর মধ্যেই বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। দগ্ধদের যথাসাধ্য চিকিৎসা চলছে।“

ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ঢাকার উদ্দেশ্যে পাঠানো ১০ জনের মধ্যে পাঁচ জন সন্ধ্যায় পৌঁছেছেন, তাদের ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে।

“মালদ্বীপে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকালে ফোন করে দগ্ধদের খোঁজখবর নিয়েছেন। তাদের চিকিৎসায় যথাসাধ্য চেষ্টা করার নির্দেশনা দিয়েছেন।“

আরও পড়ুন