‘ঢাকা নগর পরিবহনে’ থাকবে ১৫৭ বাস: তাপস

রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রমে ‘ঘাটারচর থেকে মতিঝিল হয়ে কাচপুর পর্যন্ত’ ১৫৭টি বাস নিয়ে চালু হবে 'ঢাকা নগর পরিবহন'।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2021, 04:00 PM
Updated : 13 Dec 2021, 09:08 AM

কয়েক দফা শুরুর তারিখ নির্ধারণের পর এবার প্রায় ২১ কিমি দৈর্ঘ্যের এ রুটে ২৬ ডিসেম্বর থেকে বাস চালু করতে চায় বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশনের জন্য গঠিত কমিটি।

এর আগে ১২০টি বাস নিয়ে ঢাকা নগর পরিবহন গঠন করার কথা জানিয়েছিল বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন কমিটি।

পরীক্ষামূলক এ রুটে আট ব্যক্তি ও কোম্পানি ১৫৭ বাস দেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন কমিটির সভাপতি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

তিনি জানান, জাহান এন্টারপ্রাইজ ১০০টি, ট্রান্স সিলভা ৩৮টি, ইকবাল এন্টারপ্রাইজ দুটি, এমএল লাভলি পরিবহন চারটি, রজনীগন্ধা পরিবহন একটি, মোস্তফা হেলাল কবির ছয়টি, মোহাম্মদ ওলিউল্লাহ একটি এবং এইচ আর ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি পাঁচটি বাস পরিচালনা করতে সম্মতি দেখিয়েছে।

কোরবানির ঈদের আগে লকডাউন তুলে নেওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার গাবতলী এলাকায় ছিল তীব্র যানজট। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

প্রতিষ্ঠানগুলো পরীক্ষামূলক রুটে বাস পরিচালনা করতে বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নে সাচিবিক দায়িত্ব পালনকারী ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) অফিসে তাদের আগ্রহপত্র জমা দিয়েছে।

মেয়র তাপস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আমরা ১৯তম সভায় ১২ ডিসেম্বর সময়সীমা নির্ধারণ করে বেসরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রমে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছিলাম।

“সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিষয়টি বেশ ইতিবাচক ও উৎসাহব্যঞ্জক।

এসব আগ্রহপত্র যাচাই বাছাই শেষে এ রুটে প্রয়োজনীয় বাসের অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানান কমিটির সভাপতি তাপস।

এর আগে রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনা ও যানজট নিরসনে ‘বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশনের’ পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরুর কথা ছিল গত ১ ডিসেম্বর।

কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে কাচপুর পর্যন্ত প্রায় ২১ কিমি দৈর্ঘ্যের রুটে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ নামে একটি নতুন কোম্পানি গঠন করে ১২০টি নতুন বাস নামানোর কথাও কমিটির অষ্টাদশ সভা শেষে জানানো হয়েছিল।

এ তারিখে ওই রুটে বাস চলাচল শুরু না হওয়ায় পরের ২৮ নভেম্বরের সভার পর দুই মেয়র বলেন, বাস মালিকরা বাস দেওয়ার কথা বলেও দেয়নি। এমনকি তারা কথার বরখেলাপ করেছে। বাস মালিকদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণে ১ ডিসেম্বর থেকে ঘাটারচর-কাচপুর রুটে নগর পরিবহনের বাস চালু করা যাচ্ছে না।

তবে অসহযোগিতার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ওইদিন বাংলাদেশে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেছিলেন, ভুল বোঝাবোঝি হয়েছে মাত্র।

এর আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে কমিটির ১৪তম সভায় এ বছর এপ্রিল থেকে বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশনের কার্যক্রম শুরুর প্রাথমিক সময় নির্ধারণের কথা জানিয়েছিল কমিটি। ওই সময় তা নানা জটিলতায় শুরু করা যায়নি।

রাজধানীজুড়ে বিভিন্ন রুটে পরিবহন সংস্থাগুলোর বাসের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে এবং পুরনো বাস তুলে নিতে এমন পদক্ষেপের চিন্তাভাবনা শুরু হয় প্রায় দেড় দশক আগে। সেই পরিকল্পনাকে বাস্তব রূপ দিতে এ চেষ্টা।

এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির কাছে রাজধানীতে নয়টি ক্লাস্টারের মাধ্যমে ২২টি কোম্পানির ৪২টি রুটে বাস রুট রেশনালাইজেশনের প্রস্তাব দেন বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যে এসব ক্লাস্টার চূড়ান্ত করেছে এ কমিটি।