সড়কে ফের বিক্ষোভে ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা

সারাদেশে সব গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের ‘হাফ’ ভাড়ার প্রজ্ঞাপন প্রকাশসহ ছয় দফা দাবিতে ঢাকার নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Dec 2021, 11:19 AM
Updated : 9 Dec 2021, 11:19 AM

ছয় দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ছিল এই শিক্ষার্থীদের।

সেই কর্মসূচি পালনে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নীলক্ষেত মোড় থেকে গণভবনের দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের সেখানেই আটকে দেয়।

পুলিশের সঙ্গে কিছুক্ষণ বাক বিতণ্ডার পর তারা নীলক্ষেত মোড়েই অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। এতে আজিমপুর-মিরপুর সড়কে যানজট তৈরি হয়।

এরপর বেলা সোয়া ১২টার দিকে আগামী ১৯ ডিসেম্বর আবার গণভবনে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে সড়ক ছাড়ে শিক্ষার্থীরা।

সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ইসমাইল সম্রাট বলেন, “আমরা আমাদের ছয় দাবি নিয়ে গণভবনে রওনা হতে চেয়েছি, কিন্তু পুলিশ আমাদের বাধা দিয়েছে।

সারাদেশে সব গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের ‘হাফ’ ভাড়ার প্রজ্ঞাপনের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার নীলক্ষেত থেকে মিছিল নিয়ে রওনা হয়েছিল ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা। পুলিশ বাধা দিলে নীলক্ষেত মোড়ে রাস্তার মধ্যে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে তারা। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

“আমাদের সংখ্যা বিবেচ্য নয়, আমাদের দাবি যৌক্তিক কি না, সেটা আমাদের প্রশ্ন। পুলিশ আজকে আমাদের বাধা দিয়েছে। তাই আমরা আগামী ১৯ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় আবার একই দাবি নিয়ে গণভবন অভিমুখে রওনা হব।”

শিক্ষার্থীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে ডিএমপির রমনা বিভাগের নিউমার্কেট জোনের সহকারী উপকমিশনার শাহেন শাহ মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, “আন্দোলনকারীরা সংখ্যায় খুবই কম। তারপরও তাদের দাবি নিয়ে তারা অবস্থান করেছে। আমরা ছাত্রদের সবসময় সহযোগিতা করে আসছি, যতক্ষণ না তারা সহিংসতার পথে যায়।

“তারা যখন মিছিল নিয়ে গণভবন অভিমুখে রওনা হচ্ছে, তখন যানজট ও জন দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে তাদেরকে রাস্তা ছেড়ে দিতে বলেছি । তবে কোন ধরনের হামলা হয়নি।”

সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ৬ দফায় রয়েছে

১. গণপরিবহনে সকল শিক্ষার্থীর জন্য প্রজ্ঞাপন দিয়ে অর্ধেক ভাড়া নিশ্চিত করতে হবে। বিআরটিসি বাস শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি করতে হবে।

২. সকল গণপরিবহনে ছাত্রী বা নারীদের জন্য অবাধ নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে হবে এবং ট্রাফিক আইনের প্রতি জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনে একে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

৩. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারকে ন্যূনতম ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহত বা ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসাসহ সকল দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হবে।

৪. দুর্ঘটনায় দোষী চালক এবং ফিটনেসবিহীন যানবাহন মালিকদের বিচারের জন্য ‘দ্রুত বিচার আদালত’ স্থাপন করতে হবে।

৫. প্রতিটি গণপরিবহনের ভিতরে দৃশ্যমান স্থানে ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি ও গাড়ির নম্বর প্লেট স্থাপন করতে হবে। সাথে সাথে সারা দেশে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা স্বয়ংক্রিয় ও আধুনিকায়ন করতে হবে।

৬. পরিবহন খাতে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি বন্ধ করে সড়কে শতভাগ শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। সাথে সাথে সকল প্রাইভেট বাস, ট্রাক, অটোরিকশার উপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে।