বুধবার সকালে নীলফামারী সদরের কুন্দরপুর ইউনিয়নের বউবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ওই গ্রামের প্রয়াত আনোয়ার হোসেনের ছেলে সালমান ফারাজী শামীম (২৬), রিকশা চালক রেজওয়ান আলীর দুই মেয়ে লিমা আক্তার (৭), শিমু আক্তার (৪) ও ছেলে মমিনুর রহমান (৩)।
এলাকাবাসী জানায়, পরোপকারী হিসেবে সালমান ফারাজী শামীম এলাকায় সবার প্রিয় ছিলেন। গ্রামের মানুষের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তেন তিনি। এবার তিন শিশুকে ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে বাঁচাতে নিজের জীবনটাই দিয়ে দিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ট্রেন প্রায় কাছাকাছি। এ সময়ও তিন অবুঝ শিশু দাঁড়িয়েছিল রেল লাইনে। রেল লাইনের পাশে দাঁড়ানো শামীম ওই তিন শিশুর বিপদ দেখে ঝাঁপিয়ে পড়েন সেখান থেকে বের করে আনতে।
তিনি এক শিশুকে কোলে তুলে চলে আসার সময় ট্রেনের ধাক্কায় লাইনে পড়ে যান মুখ থুবড়ে।
হাসপাতালে নেওয়ার পর শামীম ও এক শিশুর মৃত্যু হয়। অপর দুই শিশু ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
বুধবার সকালে সে দায়িত্বে সেখানে অবস্থান করছিলেন বলে জানান তিনি।
“শামীম অত্যন্ত একজন ভদ্র স্বভাবের ছেলে। মানুষের উপকার করা তার নেশা। এলাকার কোনো মানুষের বিপদে তাকে এগিয়ে যেতে দেখেছি। গ্রামের কোনো মানুষ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া নেশায় পরিণত হয়েছিল তার।”
শামীমের মামি রুমি আক্তার বলেন, প্রায় সাত বছর আগে সুমি আক্তারকে বিয়ে করেছিলেন শামীম। তাদের মিত্তাহুল জান্নাত নামে ছয় বছরের এক মেয়ে রয়েছে। তার বাবা আনোনয়ার হোসেন মারা গেছেন অনেক আগে। স্ত্রী, সন্তান এবং মা চিনু বেওয়াকে নিয়ে তার পরিবার।
“শামীমের মৃত্যুতে অসহায় হয়ে গেল পরিবারটি।”
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদ ওয়াদুদ রহমান বলেন, “নিজের জীবন বিপন্ন করে ওই তিন শিশুকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন।”