অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য জজ আদালতে নীলা রায় হত্যা মামলা

অভিযোগপত্র জমার সাত মাস পর অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য হাকিম আদালত থেকে জজ আদালতে গেল সাভারের স্কুলছাত্রী নীলা রায় হত্যা মামলা।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2021, 02:20 PM
Updated : 7 Dec 2021, 02:36 PM

ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফাইজুন্নেসার আদালতে আগামী বছর ৯ ফেব্রুয়ারি এ মামলার আসামিদের উপস্থিতির দিন রাখা হয়েছে। সেখানেই অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষে সিদ্ধান্ত হবে, এ মামলা বিচারে যাবে কি না।  

প্রেমের প্রস্তাবে ‘রাজি না হওয়ায়’ দশম শ্রেণির ছাত্রী নীলা রায়কে গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সাভার পৌরসভার পালপাড়া এলাকায় ছুরি মেরে হত্যা করা হয়।

তদন্ত শেষে গত ২৮ এপ্রিল বখাটে মিজানুর রহমান ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এম এ কাইয়ূম মোল্লা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, হাকিম আদালত থেকে গত ২৮ নভেম্বর মামলাটি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়।

“৯ ফেব্রুয়ারি হাজিরার পর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের তারিখ পড়বে। অভিযোগ গঠন হলে শুরু হবে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ।”

অভিযোগপত্রের প্রধান আসামি মিজানুর রহমান চৌধুরী গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। বাকি দুই আসামি সাকিব হোসেন ও সেলিম পালোয়ান হাই কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন।

মানিকগঞ্জ জেলার বালিরটেক এলাকার নারায়ণ রায়ের মেয়ে নীলা সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনির অ্যাসেড স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ত। পৌর এলাকার কাজিমুকমাপাড়ায় এক বাড়িতে তার পরিবার ভাড়া থাকত।

সাভারের স্কুলছাত্রী নীলা রায় হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে

মামলায় অভিযোগ করা হয়, নীলাকে প্রায় দেড় বছর ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন ব্যাংক কলোনি এলাকার মিজানুর। তাতে রাজি না হওয়ায় নীলাকে সে ছুরি মেরে হত্যা করে।

নীলার বাবা নারায়ণ চন্দ্র রায় পরদিন মিজানুর রহমান, তার বাবা আব্দুর রহমান ও মা নাজমুন নাহার সিদ্দিকাকে আসামি করে সাভার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি জানিয়ে মিজানুরের বাবা-মায়ের নাম অভিযোগপত্র থেকে বাদ দিয়ে অভিযোগপত্রে তাদের অব্যাহতির আবেদন করেন।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মঙ্গলবার মামলার বাদী নীলার বাবা নারায়ণ রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান,  অব্যাহতির বিষয়ে আপত্তি আছে কি না জানাতে গত ২২ নভেম্বর তাকে আদালতে ডাকা হয়।

“আদালত ডেকে বলেছিল, অভিযোগপত্রে যে দুজনকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল, তাদের অন্তর্ভুক্ত না করার বিরুদ্ধে আপত্তি আছে কি না? জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শাহজাদী তাহমিদার কাছে আমি বলি কোনো আপত্তি নাই।”

গ্রেপ্তার হওয়ার পর মিজানুর গত বছর ১ অক্টোবর ঢাকার একজন বিচারিক হাকিমের কাছে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেন।

অভিযোগপত্রে রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে এবং আটটি আলামতের বিবরণ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার সময় আদালত পুলিশ জানিয়েছিল, মহামারীর মধ্যে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হলে যাচাই-বাছাই করে মামলাটি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর গত ১২ অগাস্ট আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হলেও নীলা রায় হত্যা মামলা আর এগোয়নি।

আরও পড়ুন