খালেদার নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠন আবার পেছাল

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি আরও এক দফা পিছিয়ে গেছে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2021, 12:54 PM
Updated : 7 Dec 2021, 12:54 PM

ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমান এই শুনানির জন্য আগামী ১৮ জানুয়ারি নতুন দিন ঠিক করে দিয়েছেন।

এ মামলার কার্যক্রম চলছে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ২ নম্বর ভবনে ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে। মঙ্গলবার সেখানেই অভিযোগ গঠনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু খালেদা জিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় শুনানি পেছানোর আবেদন করেন তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার। আদালত তার সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১৮ জানুয়ারি দিন ধার্য করে দেয়।

সর্বশেষ এ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান ছুটিতে থাকায় ভারপ্রাপ্ত বিচারক নজরুল ইসলাম শুনানির জন্য ৭ নভেম্বর শুনানির তারিখ ঠিক করেছিলেন।

গত ২ মার্চ খালেদা জিয়ার অব্যাহতির আবেদনের আংশিক শুনানি হয়। সেদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে ফৌজদারি কার্যবিধির ২০৫ ধারায় আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দাখিলের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করে।

কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে ‘অস্বচ্ছ’ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন।

২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। সেখানে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

এছাড়া সাবেক আইনমন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন এই মামলায় আসামি থাকলেও তারা মারা যাওয়ায় অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

দুর্নীতির অপর দুটি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ইতোমধ্যে ১০ ও সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন।

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর পরিবারের আবেদনে গত বছর ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়’ শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার।

এরপর গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে এবং চলতি বছরের মার্চে ও সেপ্টেম্বরে ছয় মাস করে মোট তিন দফায় বাড়ানো হয় সাজা স্থগিতের মেয়াদ। এ নিয়ে মোট ১৮ মাস সেই মেয়াদ বাড়ানো হয়।

৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা নিয়ে গত ১৩ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তার লিভার সিরোসিস ধরা পরে। পরিবার তাকে বিদেশ নিতে চাইলেও সরকার তাতে সাড়া দেয়নি।

আরও পড়ুন