ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনের উদ্যোগে ‘মৈত্রী দিবস’ পালন

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের স্বীকৃতি দেওয়ার দিনটি ‘মৈত্রী দিবস’ হিসেবে সাড়ম্বরে পালন করেছে ভারতীয় হাইকমিশন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2021, 04:10 PM
Updated : 6 Dec 2021, 04:10 PM

সোমবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এক সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ২০২০ এবং ২০২১ সালে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মানের জন্য নির্বাচিত বাংলাদেশি নাগরিকদের সংবর্ধনা জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, “ভারত ও বাংলাদেশের জনগণের গভীর সম্পর্কের ধারাবাহিকতার বহিঃপ্রকাশ মৈত্রী দিবস ২০২১। বাংলাদেশ সরকার ও এদেশের জনগণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতা ও অবদান সর্বদা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে।”

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমন্বিত প্রচেষ্টায় ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছার কথাও বলেন তিনি।

স্পিকার বলেন, “ভারত ও বাংলাদেশ একই সীমান্ত ব্যবহারের পাশাপাশি ৫৪টি সাধারণ নদী ব্যবহার করে থাকে। পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, ব্যবসা-বাণিজ্য, সন্ত্রাস দমন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, অর্থনীতি ইত্যাদি বিভিন্ন খাতে উভয় দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ঘটেছে।”

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার ঠিক আগে আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর শুরু হয় প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ।

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী এই যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়ে। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত মিত্রবাহিনীর কাছে ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ওই যুদ্ধে ১ হাজার ১৬১ ভারতীয় সেনা শহীদ হয়েছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় এক কোটির বেশি শরণার্থী সীমান্তবর্তী ভারতের রাজ্যগুলোতে আশ্রয় নিয়েছিল; মুক্তিবাহিনীর গেরিলাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও হয়েছিল ওইসব এলাকায়।

মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের আগেই ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দিয়েছিল প্রতিবেশী ভারত। একই দিন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় ভুটানও।

বাংলাদেশে ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী অনুষ্ঠানে বলেন, “এত বড় আকারে অন্য কোনো দেশের সাথে যৌথভাবে এই ধরনের মাইলফলক উদযাপনের চেষ্টা আগে কোনো দেশ করেনি। কোভিড মহামারীর অব্যাহত চ্যালেঞ্জ এবং একটি জটিল বৈশ্বিক পরিস্থিতি সত্ত্বেও, প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকীকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে সফর এবং আমাদের সামরিক বাহিনীর মার্চিং কন্টিনজেন্টের একে অপরের বার্ষিক দিবসের প্যারেডে অংশগ্রহণের মত বিশেষ ঘটনাগুলোতে বন্ধুত্বের প্রতিফলন ঘটে।”

অনুষ্ঠানে ভারত ও বাংলাদেশের ৫০ জন শিল্পী সংগীত পরিবেশন করেন।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মসিউর রহমান, তৌফিক ই এলাহী চৌধুরী ও সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক উপস্থিত ছিলেন।

ভারতীয় হাইকমিশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিগত ৫০ বছরে দুই দেশের ‘স্মরণীয় অগ্রযাত্রার সাক্ষ্য হিসেবে’ উভয় দেশ শুধু দিল্লি এবং ঢাকা নয়, বিশ্বের আরও ১৮টি শহরে মৈত্রী দিবস উদযাপন করছে।