পানির দাম ‘এক পয়সাও’ বাড়েনি: ঢাকা ওয়াসা এমডি
নিজস্ব প্রতিবেদক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 04 Dec 2021 08:34 PM BdST Updated: 04 Dec 2021 08:40 PM BdST
-
করোনাভাইরাসের কারণে অবরুদ্ধ অবস্থায় পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে ঢাকার সায়দাবাদ এলাকায়। তাই সায়দাবাদ টার্মিনালে ওয়াসার একটি লাইন থেকে পানি সংগ্রহে এই লাইন এবং তা সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে। (ফাইল ছবি)
-
ঢাকার কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনে শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান। ছবি: কাজী সালাহউদ্দিন রাজু
-
ঢাকার কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনে শনিবার সংস্থার চলমান কর্মকাণ্ড নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা হয়। ছবি: কাজী সালাহউদ্দিন রাজু
উন্নয়ন ও মূল্যস্ফীতির হিসাবে ‘প্রকৃত মূল্যে’ (উৎপাদন খরচে) রাজধানীতে পানির দাম ‘এক পয়সাও’ বাড়েনি বলে দাবি করেছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচলক তাকসিম এ খান।
নিয়মিত বিরতিতে ঢাকায় পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা) পানির দাম বাড়ালেও এক যুগ ধরে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বে থাকা এ কর্মকর্তা বলেন, আপেক্ষিকভাবে দেখলে পানির দাম কমেছে।
“সেই সঙ্গে ২০১০ সালের মূল্যস্ফীতি আর এখনকার মূল্যস্ফীতি তুলনা করলে দেখা যাবে ‘প্রকৃত মূল্যে’ পানির দাম এক পয়সাও বাড়েনি। তবে আপতদৃষ্টিতে দেখলে পানির দাম অনেক বেড়েছে।“
শনিবার কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনে ঢাকা ওয়াসার চলমান কার্যক্রম নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সবশেষ চলতি বছর ১ জুলাই থেকে ঢাকা ওয়াসার পানির দাম ৫ শতাংশ হারে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত মে মাসে প্রতিষ্ঠানটির পর্ষদ সভায় নেওয়া হয়।
এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আবাসিকে প্রতি ইউনিট (এক হাজার লিটার) পানির দাম ১৪ টাকা ৪৬ পয়সা পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৫ টাকা ১৮ পয়সা করা হয়।
আর বাণিজ্যিক সংযোগে প্রতি ইউনিট পানির দাম ৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪২ টাকা করা হয়েছে।
২০২০ সালের এপ্রিলেও আবাসিকে প্রতি ইউনিটের দাম বাড়ানো হয় ২ টাকা ৯০ পয়সা।
এর আগে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে, ২০১৮ সালের জুলাইতে, ২০১৭ সালের অগাস্টে পানির ‘মূল্য সমন্বয়’ করে ওয়াসা।

ঢাকার কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনে শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান। ছবি: কাজী সালাহউদ্দিন রাজু
“আমার উৎপাদন খরচ হচ্ছে ২৫ টাকা। আমি বিক্রি করছি ১৫ টাকায়। তাহলে কিভাবে হবে? এখন যদি বলেন, আগে তো ছয় টাকা ছিল, তখন কিভাবে হয়েছে। তখন উৎপাদন খরচ ছিল ১২ টাকা।“
নতুন পানি শোধনাগার ও পয়ঃনিষ্কাশন স্থাপনের কারণে ঋণ ও খরচ বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এ টাকা ফেরত দিতে হবে। যদিও সরকার কিছু ভর্তুকি দিচ্ছে; কিন্তু মূল টাকাটা আমাদের ফেরত দিতে হবে।
“এখন মূল টাকাকে পানির দামের মধ্যে আনতে হবে না? তাহলে পানির দাম কোথায় বাড়ালাম? এখন সরকার ভর্তুকি দিচেছ। আর সরকারই বা কতদিন দিবে? “
পানির দাম বাড়ানোর যুক্তি হিসেবে রাজধানীবাসীর পানির চাহিদা ও সরবরাহ দেখভালকারী প্রতিষ্ঠানটির এমডি বলেন, সরকার মনে করে ভর্তুকি দিয়ে কোনো সেবা সংস্থা স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে না। যদি তাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হয়, তাহলে তাকে প্রকৃত মূল্যেই চলতে দেওয়া উচিত।
ঢাকায় পানির চাহিদার চাইতে সক্ষমতা বেশি দাবি করে তিনি জানান, প্রতিদিন ২৭০ থেকে ২৮০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করছে ওয়াসা। মৌসুমভেদে চাহিদা ২১০ থেকে ২৬৫ কোটি লিটার পর্যন্ত হয়।
চলতি শীত বা শুষ্ক মৌসুমে ঢাকায় পানির সঙ্কট হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সঙ্কট হলেও তা মোকাবেলা করার মত প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।
‘সে কারণেই বলি পানি ফুটিয়ে খান’
পানযোগ্য পনি নিয়ে এক প্রশ্নে তাকসিম বলেন, ঢাকা শহরের ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ জায়গায় আমাদের পানি পানযোগ্য। পাইপলাইন যদি না ভাঙা থাকে তাহলে তো পানি দুষণের সুযোগ নেই।
“তবে একটা জায়গায় ঝুঁকি থেকে যায়, সেটি হলো ঢাকা শহরে ভবনের নিচে যেখানে পানি জমা করে রাখা হয়। ভবনের নিচের রিজার্ভ ট্যাঙ্ক যদি পরিষ্কার করা হয়, তাহলে শতভাগ বিশুদ্ধ নিশ্চিত করা সম্ভব। এখন আমি তো জানি না কোন জায়গায় রিজার্ভ ট্যাংক থেকে পানি দূষিত হচ্ছে। সে কারণেই বলি পানি ফুটিয়ে খান।“
পানযোগ্য পানি সরবরাহের ব্যয়ের হিসাব তুলে ধরে তিনি বলেন, “আপনি ফুটিয়ে খান কতটুকু? ১০০ লিটার পানি যদি আপনি প্রতিদিন ব্যয় করেন তার মধ্যে ৩ থেকে ৪ লিটার আপনি পান করেন। এখন ফোটানো পানির মতো করে পানি সরবরাহ করলে ব্যয় বাড়বে ৯ গুণ।
ঢাকায় ওয়াসার পানির দাম আরও বাড়ল
ওয়াসার পানি আরও দামি, ক্ষুব্ধ নগরবাসী
পানি ‘যত বেশি ব্যবহার তত বেশি হারে বিলের’ পরিকল্পনা
“ব্যয়টা সরকারের হোক আর যারই হোক, ব্যয় তো হবে। সেটা কি আমাদের কাম্য কিনা। কাজেই ফুটিয়ে খাওয়াটা হচ্ছে একটা পছন্দ।“
ঢাকা ওয়াসার এমডি জানান, ডিএমএ (ডিস্ট্রিক্ট মিটার এরিয়া) সিস্টেমে আসার পর ওয়াসার পানি না ফুটিয়ে পান করা যাবে; যদি রিজার্ভ ট্যাঙ্কের পানি পরিষ্কার থাকে।
১৪৪টি ডিএমএ নেটওয়ার্কের মধ্যে ৭১টি প্রস্তুত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় লিখিত বক্তব্যে।
৮০% জায়গায় ওয়াসার পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা নেই
পানি পরিশোধন ব্যবস্থাপনা টেকসই করার পর ঢাকা শহরের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার মূল কাজ শুরু হবে জানিয়ে তাকসিম এ খান বলেন, পুরো ঢাকা শহরকে পাঁচ ভাগে ভাগ করে পাঁচটি পয়ঃশোধনাগার করে শতভাগ পাইপলাইনের মাধ্যমে পয়ঃনিষ্কাষণ ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্প; যেটাতে হাতিরঝিলের পয়ঃবর্জ্য পরিশোধন হবে, সেটির কাজ আগামী বছর এপ্রিলে শেষ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ঢাকার কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনে শনিবার সংস্থার চলমান কর্মকাণ্ড নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা হয়। ছবি: কাজী সালাহউদ্দিন রাজু
তিনি বলেন, জমি অধিগ্রহণ করতে পারলে প্রকল্পের কাজ ৩০ শতাংশ শেষ হয়ে যায়। এখন বিশ্ব ব্যাংক ঋণ দিলেই বাকি কাজ শুরু করা যাবে। রায়ের বাজারে ৫২ একর জমিতে মাটির নিচে পয়ঃশোধনাগার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর উপরটা খেলার মাঠ করে দেওয়া হবে, যা উন্মুক্ত থাকবে।
তিনি জানান, এরপর থেকে সবকটা পয়ঃশোধনাগার হবে মাটির নিচে। মহারিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও তিন বছর আগেই ঢাকা শহরকে পয়ঃনিষ্কাষণ ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনার কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন না করে নদীর পানি পরিশোধন করে ব্যবহার উপযোগী করতে কাজ করছে ঢাকা ওয়াসা। বর্তমানে ৩৪ শতাংশ পানি আসছে নদী থেকে, যা ৭০ শতাংশে নিয়ে যেতে চায় ঢাকা ওয়াসা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিতি ছিলেন ঢাকা ওয়াসার উন্নয়ন পরিচালক মো. আবুল কাশেম, সচিব শারমিন হক আমীর, ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার রায় ও প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা নিশাত মজুমদার প্রমুখ।
-
রাজনৈতিক শক্তি, আমলাতন্ত্র পুলিশের পরিবর্তন চাইবে না: শহীদুল
-
স্ত্রীর পাশে শায়িত হলেন গাফ্ফার চৌধুরী
-
গাফফার চৌধুরীকে সাংবাদিকদের শ্রদ্ধা
-
বাহরাইনে ছবির গল্পে-কথায় এক টুকরো বাংলাদেশ
-
প্রচার শুরু: মাঠ পর্যায়ে যাচ্ছেন সিইসি ও কমিশনাররা
-
শহীদ মিনারে শনিবার দুপুরে গাফফার চৌধুরীকে শ্রদ্ধা
-
শান্তি মিশনে নিহত ২ বাংলাদেশির জন্য ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড’ পদক
-
কোভিডে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে গেছি: পিএসসি চেয়ারম্যান
সর্বাধিক পঠিত
- অবিশ্বাস্য পথচলা শেষে শিরোপা হাসি রিয়ালেরই
- ২৫ বছরের চেষ্টা বিফল, বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে কানাডা
- এগিয়ে আসছে রুশ বাহিনী, পূর্বাঞ্চল ছাড়তে পারে ইউক্রেইনীয় সেনারা
- দুর্দান্ত কোর্তোয়া, অবিশ্বাস্য কোর্তোয়া
- ‘৩০ বলে ৩০ রান থেকে ৫০ বলে ৯০ করে ফেলতে পারে বাটলার’
- ‘আর্জেন্টিনার জন্য প্রতিটি মিনিট, ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ’
- ‘ব্যালন ডি’অর জিততে মেসি-রোনালদো হও, নয়তো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতো’
- টিভি সূচি (শনিবার, ২৮ মে ২০২২)
- ইতিহাস গড়লেন আনচেলত্তি
- ইউক্রেইনের ‘শত্রু’ তালিকায় উঠল কিসিঞ্জারের নাম