পায়ে হেঁটে মুক্তিযুদ্ধের বীরগাথা জানলেন ব্রিটিশ হাই কমিশনার

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও স্থাপনাগুলো পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখলেন ঢাকায় ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট ডিকসন ও তার স্ত্রী টেরিজা আলবর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2021, 06:17 PM
Updated : 3 Dec 2021, 06:17 PM

শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ১৯৭১ সালের ২ মার্চ প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনের স্থান থেকে তাদের যাত্রা শুরু হয়।

‘চলমান জাদুঘর’ নামে এ কর্মসূচিতে তাদের সঙ্গে শিক্ষক, গবেষক, লেখক, চিকিৎসক, স্থপতি, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ প্রায় ২৫ জনের একটি দল অংশ নেন।

তাদের সামনে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা তুলে ধরা হয়। এরপর তারা মধুর ক্যান্টিনে কিছু সময় কাটান।

বেলা ১টা পর্যন্ত তারা একাত্তরের শহীদ ১৯৫ জন ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও কর্মচারীর তালিকা সংবলিত স্মৃতি চিরন্তন, বিট্রিশ কাউন্সিল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জগন্নাথ হল, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের জনসভাস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শিক্ষকদের সমাধিস্থল, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিস্থল, ডাকসু সংগ্রহশালা পরিদর্শন করেন।

১৯৭১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নারকীয় গণহত্যার স্থানগুলো পায়ে হেঁটে দেখার এই আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ।

অতিথিদের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা ঘটনা ও স্থান সম্পর্কে জানান মুক্তিযোদ্ধা অজয় দাশগুপ্ত এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ।

অজয় দাশগুপ্ত বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ধুলিকণায় মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের রক্ত। একাত্তরে এখানে ১৯৫ জন ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারী শহীদ হয়েছেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে।

“তাদের সেই স্মৃতিজড়িত স্থানগুলোই আজ ঘুরে দেখেছেন ব্রিটিশ হাই কমিশনার ও তার স্ত্রীসহ ২৫ জনের একটি দল।”

অতিথিদের প্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়ে অজয় দাশগুপ্ত বলেন, “ব্রিটিশ হাই কমিশনার বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এত ইতিহাস, গোটা বিশ্বের কাছে একাত্তরের বীরত্বগাথা তুলে ধরা দরকার।

“আমরা আজকে ঘুরে দেখে এটা অনুভব করলাম। আমরা বিশ্ববাসীকে, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে এগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব।”

মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যা ও ঐতিহাসিক স্থানগুলোকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে ২০১৮ সাল থেকে ‘চলমান জাদুঘর’ কার্যক্রম শুরু করে সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ।

এর আগে গত ৫ নভেম্বর ‘চলমান জাদুঘর’ কর্মসূচিতে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার, জাতিসংঘ মিশন প্রধান মিয়া সেপো, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা ওসমান তুরান এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) প্রধান জয়েন্দু ডি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জড়িত এসব স্থান ঘুরে দেখেন।