বিদ্যুৎ বিল বকেয়া: মামলা ঝুলছে ২২ হাজার গ্রাহকের বিরুদ্ধে

বিল পরিশোধ না করায় গ্রাহকদের বিরুদ্ধে ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির এখন মোট ২১ হাজার ৮৩৮টি মামলা চলছে।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Dec 2021, 04:20 PM
Updated : 2 Dec 2021, 04:20 PM

৫৯৪ কোটি ১৬ লাখ ৬৫ হাজার ১০০ টাকা বকেয়া আদায়ে এই মামলাগুলো করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই তথ্য জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

সভা থেকে এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে বলে সংসদীয় কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা আয়শা খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

বিদ্যুতের বকেয়া বিল সম্পর্কিত সব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়কে গত অক্টোবর মাসে একটি তালিকা তৈরি করে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ নিতে বলেছিল সংসদীয় কমিটি।

এর আগে গত জানুয়ারিতে বিদ্যুৎ বিভাগ সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছিল, সারাদেশে গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ বিভাগের পাওনা রয়েছে ৮ হাজার ৫৫৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি মামলা দায়ের করেছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। তাদের দায়ের করা চলমান মামলার সংখ্যা ৯ হাজার ৮৪৫টি। এসব মামলার বিপরীতে বকেয়ার পরিমাণ ৫২ কোটি ২৭ লাখ ৫৩ হাজার ২৫৪ টাকা।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের করা মামলা আছে ৪ হাজার ৪৬৬টি। তাদের পাওনা ৫৮ কোটি ২৭ লাখ ৫৪ হাজার ১৩৪টাকা। 

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) দায়ের করা মামলা আছে ৩ হাজার ৫৩৮টি। মোট ১৮৪ কোটি ৭৩ লাখ ৯০ হাজার ৮৯৭ টাকা বকেয়া আদায়ের জন্য এসব মামলা করেছে সংস্থাটি। 

ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) দায়ের করা মামলার সংখ্যা ১৪টি। এসব মামলার বিপরীতে তাদের পাওনা প্রায় ১৪০ কোটি টাকা।

নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) মামলা করেছে ৩ হাজার ৯৮৮টি। এসব মামলায় তাদের পাওনা প্রায় ৪৪ কোটি টাকা।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) দায়ের করা মামলা আছে ৪৭টি। এসব মামলার বিপরীতে তাদের পাওনা প্রায় ১১৫ কোটি টাকা।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক কেবল স্থাপন নিয়ে আলোচনা হয়।

মন্ত্রণালয় জানায়, এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৬৯২ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ লাইন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে ডিপিডিসির ২ হাজার ৪২২ কিলোমিটার এবং ডেসকোর ৪৮৮ কিলোমিটার লাইন স্থাপন করা হবে। ভূগর্ভস্থ লাইন নির্মাণ কাজের পরামর্শক বিদেশি। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে কাঙ্ক্ষিতভাবে কাজ আগানো যায়নি।

সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক তার স্থাপনের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে বলেছে সংসদীয় কমিটি। এ ছাড়া বিদ্যুতায়িত হয়ে হাতির মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে মন্ত্রণালয়কে একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ওয়াসিকা আয়শা খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, আবু জাহির, এস এম জগলুল হায়দার, আছলাম হোসেন সওদাগর, খালেদা খানম ও নার্গিস রহমান অংশ নেন।