তল্লাশি শেষ হওয়ার পর বুধবার মধ্যরাতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরে সংবাদ সম্মেলন করে একথা জানায়।
কুয়ালালামপুর ছেড়ে আসা মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি রাত ৯টা ৪৮ মিনিটে শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এরপর ট্যাক্সিওয়েতে নিয়ে এটিতে তল্লাশি চালায় বিমানবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। আর এই অভিযানে সেনাবাহিনী, র্যাব, এপিবিএন, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সহায়তা করে।
এরপর রাত দেড়টার দিকে সাংবাদিকদের সামনে এসে শাহজালাল বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদুল আহসান বলেন, যে তথ্য তারা পেয়েছিলেন, তার কোনো সত্যতা না মিললেও তারা ‘স্টান্ডার্ড অব প্রসিডিউর (এসওপি)’ অনুযায়ী পুরো উড়োজাহাজটি এবং যাত্রীদের তল্লাশি চালান।
তিনি বলেন, “তথ্যটার সত্যতা পাওয়া যায়নি, তবে আমরা এটা হালকাভাবে নিইনি। সে কারণে এয়ারক্রাফট নামার পর ডিটেইল তল্লাশি চলে। এসওপি অনুযায়ী, প্রথমে আমরা প্যাসেঞ্জারকে অফলোড করি। তারপর তাদের তল্লাশি করি। একে একে বিমানের দুটি লাগেজ কম্পার্টমেন্ট তল্লাশি করে বিমান বাহিনীর সদস্যরা। তবে ডেঞ্জারাস কিংবা বোম্ব সদৃশ কিছুই পাওয়া যায়নি।”
তিনি জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় র্যাবের কাছ থেকে তারা খবর পেয়েছিলেন যে মালয়েশিয়া থেকে ‘সন্দেহভাজন’ এক ব্যক্তি ‘সন্দেহজনক বস্তু’ নিয়ে ঢাকায় আসছেন।
মালয়েশিয়ার একটি নম্বর থেকে র্যাবকে ফোন করে এই তথ্য দেওয়া হয়েছিল বলে তিনি জানান। তবে এ বিষয়ে আর কিছু বলতে চাননি তিনি।
র্যাব জানানোর পরপরই তৎপর হয়ে ওঠেন বলে জানান তৌহিদুল।
“আমরা মিটিং করি, বিমানবাহিনীকে খবর দেওয়া হয়, তাদের বিশেষায়িত সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ দল খুব অল্পসময়ের মধ্যেই চলে আসে।”
পাকিস্তানি একজন ব্যক্তি ওই উড়োজাহাজে আসছিলেন- এমন কোনো তথ্য ছিল কি না- প্রশ্ন করা হলে তৌহিদুল বলেন, “এমন কথা আমরা শুনেছি। তবে ওই বিমানে পাকিস্তানি কোনো যাত্রী ছিলেন না।”
বিমানটিতে থাকা ১৩৫ জন যাত্রীর মধ্যে ১৩৪ জন বাংলাদেশি এবং একজন মালয়েশিয়ার নাগরিক বলে জানান তিনি।
বিমানটি জরুরি অবতরণ করেনি বলেও তৌহিদুল জানান।
এটি কুয়ালালামপুর থেকে ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী নিয়মিত বিমান জানিয়ে তিনি বলেন, এটি অবতরণের পর তল্লাশির জন্য একটু দূরে সরিয়ে রাখা ছিল। তল্লাশি শেষে এটিকে বিমানবন্দরের নিয়মিত জায়গায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এটি এখন নিরাপদ, ফিরতি ফ্লাইটের জন্যও তৈরি।
এর আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার তাপস কুমার দাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “বিমানবন্দরে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ ঘিরে সন্দেহজনক কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর অবস্থানের কথা জানানো হয়েছে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিতরা বিষয়টি দেখছেন।”
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজে বোমা রয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিন-চারটি গাড়ি সেখানে যায়।”