নারায়ণগঞ্জ সিটির ভোট ১৬ জানুয়ারি

সব কেন্দ্রে এবার ইভিএমে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ জানুয়ারি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2021, 11:29 AM
Updated : 30 Nov 2021, 11:57 AM

মঙ্গলবার বিকালে কমিশন সভা শেষে এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।

এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে কমিশন সভায় ভোটের তারিখ অনুমোদন দেওয়া হয়।

২০১১ সালে সিটি করপোরেশন হিসেবে যাত্রা শুরুর পর এটি হচ্ছে তৃতীয় নির্বাচন।

এর আগের দুই নির্বাচনেই মেয়র নির্বাচিত হন সেলিনা হায়াৎ আইভী।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী- আগ্রহী প্রার্থীরা মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

২০ ডিসেম্বর বাছাইয়ের পর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৭ ডিসেম্বর এবং ভোট হবে ১৬ জানুয়ারি।

এ সিটিতে প্রথমবার ৯টি ওয়ার্ডে ইভিএমে এবং বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে ভোট হয়। ২০১৬ সালে সব কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে এবং এবার ইভিএমে পুরো সিটিতে ভোট হবে।

প্রথমবার নির্দলীয় প্রতীকে ভোট হয় এ সিটিতে। দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন চালুর পর এটি দ্বিতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

একই তফসিলে টাঙ্গাইল ৭ উপনির্বাচন এবং ৫ পৌরসভাতেও ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এগুলোতেও ভোট হবে ইভিএমে।

গত ১৬ নভেম্বর টাঙ্গাইলের মির্জাপুর আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মো. একাব্বর হোসেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একাব্বর চারবার সংসদে টাঙ্গাইল-৭ আসনের ভোটারদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

নারায়ণগঞ্জে ভোট

>> একজন মেয়র, ৯ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর এবং ২৭টি ওয়ার্ডে একজন করে কাউন্সিলর পদ।

>> এবার ভোটার সংখ্যা বাড়বে বেশ; পাঁচ বছর আগে ভোটার ছিল চার লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১ জন। ভোট নেওয়া হয় ১৭৪ কেন্দ্রের এক হাজার ৩০৪টি কক্ষে।

>> নারায়ণগঞ্জে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার।

ফিরে দেখা

২০১১ সালের ৫ মে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা, কদম রসুল পৌরসভা ও সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভাকে বিলুপ্ত করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন গঠনের গেজেট প্রকাশ করে সরকার।

সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন হয় ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর। এতে ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত প্রার্থী সাবেক সাংসদ শামীম ওসমানকে এক লাখেরও বেশি ভোটে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন শহর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সেলিনা হায়াৎ আইভী।

>> আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী পান এক লাখ ৮০ হাজার ৪৮ ভোট; তার প্রতীক ছিল দোয়াত কলম।

>> নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত শামীম ওসমানের দেয়াল ঘড়িতে ভোট পড়েছিল ৭৮৭০৫ ভোট।

>> বিএনপি সমর্থিত তৈমুর আলম খন্দকারের প্রতীক ছিল আনারস; তিনি পান ৭৬১৬ ভোট।

>> এছাড়া গরুর গাড়ি প্রতীকে আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সী ৬৬১২ ভোট, হাঁস প্রতীকে শরীফ মোহাম্মদ ১৪৯৩ এবং তালা প্রতীকে আতিকুল ইসলাম জীবন ১৮৫৫ ভোট পান।

২০১১ সালের ২৭ নভেম্বর দেশের প্রথম নারী সিটি মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়া আইভী ১ ডিসেম্বর দায়িত্ব নেন। ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর সিটি করপোরেশনের প্রথম সভা হওয়ায় ২০১৬ সালের ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট করার আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল ইসির।

দ্বিতীয় নির্বাচন হয় ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর।

দলীয় প্রতীকের এ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানকে পৌনে ১ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র পদে পুনঃনির্বাচিত হন নৌকা প্রতীকের আইভী।

>> আইভী পান এক লাখ ৭৫ হাজার ৬১১ ভোট। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত পান ৯৬ হাজার ৪৪ ভোট।

>> মেয়র পদে দুই প্রধান প্রার্থীর পর তৃতীয় সর্বোচ্চ ভোট পান হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি মাছুম বিল্লাহ ১৩ হাজার ৯১৪টি। কোদাল প্রতীকে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মাহবুবুর রহমান ইসমাইল পান ৬৭৪ ভোট; মিনার প্রতীকে ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি এজহারুল হক প্রাপ্ত ভোটসংখ্যা ৯১০।

২০১১ সালে ভোটের হার ছিল ৬৯ শতাংশ। ২০১৬ সালে তা কমে ৬২ দশমিক ৩৩ শতাংশে দাঁড়ায়।

টানা দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হয়ে আইভী ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি শপথ নেন।

এরপর ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি করপোরেশনের প্রথস সভা হয়। সে অনুযায়ী ২০২২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মেয়াদ শেষ হবে বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের।

মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে, চলতি বছরের ১১ অগাস্ট থেকে আগামী বছরের ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটির নির্বাচন করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

৫ পৌরসভার ভোটও একই তফসিলে, ১৬ জানুয়ারি

এই পাঁচ পৌরসভা হচ্ছে- নোয়াখালী, নাটোরের বাগাতিপাড়া, যশোরের ঝিকরগাছা, চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও স্থগিত থাকা নাটোর পৌরসভা।

এসব পৌরসভায় ইভিএমে ভোট হবে।

নাটোর পৌরসভায় নতুন প্রার্থীদের মনোনয়ন জমার সুযোগ দিয়ে যে পর্যায় থেকে নির্বাচন স্থগিত হয়েছিল, সেখান থেকে ভোটের কাজ শুরু হবে। তবে যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে তাদের নতুন করে দিতে হবে না।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী- আগ্রহী প্রার্থীরা মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। 

২০ ডিসেম্বর বাছাইয়ের পর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৭ ডিসেম্বর।

পঞ্চম ধাপের ইউপি ভোটের পুনঃতফসিল

পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ ডিসেম্বর। আর বাছাই ১২ ডিসেম্বর ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৯ ডিসেম্বর করে পুনঃতফসিল করা হয়েছে।

ইসি সচিব জানান, ভোটের তারিখ আগের ঘোষিত ৫ জানুয়ারি বহাল রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন