অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ‘ভেন্টিলেশনে’

নিউমোনিয়া নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামকে কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2021, 05:25 PM
Updated : 26 Nov 2021, 05:25 PM

শুক্রবার সকালে তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়েছে বলে তার ছেলে বর্ষণ ইসলাম জানিয়েছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বাবাকে আগেই তারা ভেন্টিলেশন দিতে চেয়েছিল, আমরা রাজি হইনি। উনার অনেক কষ্ট হচ্ছিল, আর কত সহ্য করব বলেন...

”আজ সকাল থেকে ভেন্টিলেশন দিয়েছে। লাইফ সাপোর্ট না, শুধু ভেন্টিলেশনে আছেন উনি।”

অধ্যাপক রফিকুল এখন ঘুমাতে পারছেন জানিয়ে বর্ষণ বলেন, “নিউমোনিয়া যাতে কেটে যায়, সেজন্য আমরা ৫-৭ দিন অপেক্ষা করব এখন।”

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্বেও আছেন।

পেটের ব্যথা নিয়ে গত ৭ অক্টোবর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি হন তিনি।

পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার ফুসফুসে পানি ধরা পড়ে। তখন থেকে তিনি সেখানে বক্ষব্যাধি (রেসপিরেটরি মেডিসিন) বিভাগের অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেনের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের সদস্যরা রফিকুল ইসলামকে ভারতে নিয়ে যেতে চাইলেও তিনি রাজি হননি।

চার দিন আগে রফিকুল ইসলামকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় জানিয়ে বর্ষণ বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, “এখানে একটা টেস্ট করতে গিয়ে সমস্যাটা দেখা দিয়েছে। ভালো করতে গিয়ে খারাপ হয়ে গেছে। আগে থেকে অনেক সমস্যা ছিল। কিন্তু শ্বাসকষ্টের তেমন সমস্যা ছিল না। নিউমোনিয়ার প্রবলেমটা এখন ক্রিটিক্যাল।”

চিকিৎসার জন্য অধ্যাপক রফিকুলকে বিদেশে নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তার ছেলে বলেন, দিল্লি যেতে রাজি নন তার বাবা। এভারকেয়ারেও আসতে চাননি। বঙ্গবন্ধু মেডিকেলেই চিকিৎসা নিতে চেয়েছিলেন।

নজরুল গবেষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম নজরুল অধ্যাপক এবং নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পরিচালক ছিলেন।

৮৭ বছর বয়সী এই ভাষাবিজ্ঞানী, লেখক ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। সেই সময়ের দুর্লভ আলোকচিত্রও ধারণ করেন তিনি।

বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের এই প্রত্যক্ষ সাক্ষী সেইসব ইতিহাস গ্রন্থিত করেছেন তার লেখায়। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে প্রথম গ্রন্থ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের ইতিহাসের প্রথম গ্রন্থটিসহ প্রায় ৩০টি বই তার হাত দিয়ে এসেছে।

ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের সাবেক উপাচার্য রফিকুল ইসলাম এক সময় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮ সালে সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক করে নেয়।

স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, গবেষক ও লেখক ড. রফিকুল ইসলাম বেশ কয়েকটি শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বপালন করেছেন।

২০২১ সালের ১৮ মে সরকার তাকে তিন বছরের জন্য বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব দেয়।

এই বছর মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার-প্রসারে অবদান রাখায় তাকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’ দেওয়া হয়।