বাসে শিক্ষার্থীদের ‘হাফ’ ভাড়ার দাবি কেন যৌক্তিক

ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী লুৎফুন্নাহার ফুরকানের বাসা ঢাকার মিরপুরে। সেখান থেকে আজিমপুরে কলেজে যেতে তাকে এখন ভাড়া দিতে হয় ২৬ টাকা।

কাজী নাফিয়া রহমানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2021, 07:21 PM
Updated : 27 Nov 2021, 03:49 AM

বাসা থেকে মিরপুর-১ বাসস্ট্যান্ডে যেতে তার খরচ হয় আরও ২০ টাকা। অর্থাৎ কলেজে যাওয়া-আসায় এক দিনেই তাকে গুণতে হচ্ছে ৯২ টাকা।

এই হিসাব বলছে, কলেজে পড়ার জন্য কেবল যাতায়াতেই লুৎফুন্নাহারের মাসে খরচ যাবে দুই হাজার টাকার বেশি।

ডিজেলের দাম বাড়ার পর পুননির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী ওই পথের ভাড়া হয় ২১ টাকা, কিন্তু যাত্রীদের কাছ থেকে ৫ টাকা বেশি আদায় করা হচ্ছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে লুৎফুন্নাহার বলেন, আগে কলেজ যাওয়ার জন্য বাস ভাড়া ছিল ২০ টাকা, তখন ‘হাফ’ ভাড়া নেওয়ায় তাকে দিতে হত ১০ টাকা। এখন বাসে আর হাফ ভাড়া নিচ্ছে না।

“হাফ ভাড়া দিলে উল্টো বাজে ব্যবহার করে। আগে আমার কলেজ যেতে আসতে ৬০ টাকা লাগত, এখন প্রায় একশ টাকা। আরে ভাই আমাদের তো কোনো আয় নেই, সবার পরিবারের অবস্থাও তো সমান না। প্রতিদিন এত টাকা রাস্তায় যদি দিতে হয়, সেটা তো কঠিন।”

এই সঙ্কট লুৎফুন্নাহারের মত কয়েক লাখ শিক্ষার্থীর। বাস ভাড়া বাড়ার পর তাদের কারও কারও যাতায়াত ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে গেছে।  আর সেটাই রাজধানীতে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনের কারণ।   

ডিজেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানোর পর পরিবহন মালিকদের চাপে সরকার বাসের ভাড়া ২৭ শতাংশ বাড়ায়। এর পর থেকেই বাসে অর্ধেক ভাড়া দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষার্থীরা।

বুধবার সড়কে সিটি করপোরেশনের গাড়ির ধাক্কায় নটর ডেম কলেজের এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর সেই আন্দোলন আরও গতি পায়। বৃহস্পতিবার পথে পথে তাদের বিক্ষোভ-অবরোধে রাজধানী ঢাকা কার্যত অচল হয়ে পড়ে।

সরকার ১ ডিসেম্বর থেকে বিআরটিসির বাসে শিক্ষার্থীদের জন্য ‘হাফ’ ভাড়া চালুর ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত এ কোম্পানির বাসের সংখ্যা ঢাকার যাত্রী সংখ্যার তুলনায় নগন্য।

বেসরকারি বাসেও একই নিয়ম চালু না হলে শিক্ষার্থীদর উপকার হবে খুব বেশি না। কিন্তু পরিবহন মালিকরা তাতে নারাজ। তারা বলছেন, সব শিক্ষার্থীর ভাড়া অর্ধেক নিতে গেলে তাদের বড় লোকসান গুণতে হবে।

এই প্রেক্ষাপটে শনিবার পরিবহন মালিক এবং শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ। পরিবহন মালিকদের সেখানে ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংবেদনশীল থেকে’ ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শনিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল; দাবি না মানলে শনিবার আবার রাস্তায় নামার ঘোষণা রয়েছে তাদের। 

ইডেনছাত্রী লুৎফুন্নাহার ফুরকানের ভাষায়, “হাফ ভাড়া আমাদের অধিকার। অনেক আগে থেকেই এটা ছিল। তাহলে এখন নতুন করে কেন এটা মানা হবে না?”

 

আন্দোলন বার বার

গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের অর্ধেক ভাড়া দেওয়ার এই দাবি নতুন নয়। আইডি কার্ড থাকলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ‘হাফ’ ভাড়া নেওয়াও হত। কিন্তু কখনোই তা আইনি কাঠামোতে আসেনি।

১৯৬৯ সালে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতারা যে ১১ দফা দাবি দিয়েছিলেন, তার প্রথম দফাতেই বিষয়টি এসেছিল।

১ (ঢ) দফায় বলা হয়েছিল, “ট্রেনে, স্টিমারে ও লঞ্চে ছাত্রদের ‘আইডেন্টিটি কার্ড’ দেখাইয়া শতকরা পঞ্চাশ ভাগ ‘কন্সেসনে’ টিকিট দেওয়ার ব্যবস্থা করিতে হইবে। মাসিক টিকিটেও ‘কন্সেসন’ দিতে হইবে।

“পশ্চিম পাকিস্তানের মত বাসে ১০ পয়সা ভাড়ায় শহরের যে কোনো স্থানে যাতায়াতের ব্যবস্থা করিতে হইবে। দূরবর্তী অঞ্চলে বাস যাতায়াতেও শতকরা ৫০ ভাগ ‘কন্সেসন’ দিতে হইবে। ছাত্রীদের স্কুল-কলেজে যাতায়াতের জন্য পর্যাপ্ত বাসের ব্যবস্থা করিতে হইবে।”

২০১৮ সালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন আন্দোলনেও ‘হাফ’ ভাড়ার দাবিটি ছিল।

বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর নিহত হওয়ার পর শুরু হওয়া ওই আন্দোলনে নয়টি দাবির সপ্তম দফায় বলা হয়েছিল, “শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।”

ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বাস ভাড়া অর্ধেক করার দাবিতে সোমবার ঢাকার মোহাম্মদপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় মোহাম্মদপুর সরকারী কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছবি: কাজী সালাহউদ্দিন রাজু

শিক্ষার্থীদের এখনকার আন্দোলনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ঊনসত্তরের সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা ও বর্তমানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকারি বাসে সব সময় কম ভাড়া দেওয়া হত। সরকারে আছি বলেই সব কিছু আমরা দেখছি, নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) তো ছাত্রছাত্রীদের অর্ধেক ভাড়া দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের দাবি প্রেক্ষিতে বিআরটিসির বাসে শিক্ষার্থীদের ভাড়া ৫০% কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির এক সভায় গিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে কথা বলেন।

শিক্ষার্থীদের জন্য বিআরটিএর মাধ্যমে যৌক্তিক ভাড়া ঠিক করার চিন্তা চলছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “পৃথিবীর সকল দেশে শিক্ষার্থীরা কনসেশন পায়। পাকিস্তান আমলে আমরাও এটা ভোগ করেছি।”

পাকিস্তানের মত পাশের দেশ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেও শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনে চড়ার ক্ষেত্রে ছাড় পান। সেখানে একেক রাজ্যে একেক রকম ছাড়ের নিয়ম। ক্ষেত্রবিশেষে বিনা ভাড়ায় যাতায়াতেরও সুযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের।

কেবল ভারত ও পাকিস্তান নয়, দক্ষিণ এশিয়ায় নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কার মত দেশগুলোতেও শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনে ভাড়ার ক্ষেত্রে ছাড় পেয়ে আসছে।

শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ অংশীজনদের সাথে বৈঠকে বসলেও তাতে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সম্মেলনে সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা খন্দকার এনায়েত উল্যাহ শিক্ষার্থীদের অর্ধেক ভাড়ার দাবি নাকচ করে বলেন, “বেসরকারি খাতে গাড়িতে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নেওয়ার কোনো প্রভিশন নেই। সেটি বিআরটিসিতে আছে।”

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা আমাদেরই ছেলে-মেয়ে। আমি মনে করি করোনাকালীন দীর্ঘ সময় তারা পড়ালেখা করতে পারেনি। তারা পড়ালেখার প্রতি মনোযোগী হবে, এটা আমাদের অনুরোধ থাকবে।”

বোঝার ওপর শাকের আঁটি

বুধবার সিটি করপোরেশনের ট্রাকের চাপায় নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের মৃত্যুর পর ‘হাফ’ ভাড়ার দাবি আরও জোরালো করেছে শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন মুখপাত্র ঢাকা কলেজের স্নাতকের শিক্ষার্থী তামিম ইকবাল বলেন, নতুন করে ভাড়া নির্ধারণের পর রাস্তায় যে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে, তা তাদের মাসের ‘টানাটানি’ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এ নিয়ে বাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের বাক-বিতণ্ডা, এমনকি হাতাহাতিও হচ্ছে।

কলেজের ছাত্রাবাসে থাকলেও টিউশনি করতে সপ্তাহে পাঁচদিন মিরপুর সাড়ে ১১ তে যাতায়াত করতে হয় তামিমকে। এই পথে এতদিন ভাড়া ছিল ২৬ টাকা, তিনি দিতেন তার অর্ধেক।

নতুন তালিকায় ভাড়া ২৬ টাকা থাকলেও বাসগুলো তা আরও বাড়িয়ে আদায় করছে ৩২ টাকা।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তামিম বলেন, “টিউশনি করে অনেক কষ্টে খরচ চালাতে হয়। যাতায়াতেই যদি একেক দিনে ৬০ টাকার বেশি খরচ হয়ে যায়, তাহলে মাসে ১২০০ টাকা চলে যাচ্ছে। টিউশনিতে পাই ৩৫০০ টাকা। তাহলে এতো কষ্টে টিউশনি করে লাভ কী?”

জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় আর মহামারীর ধাক্কায় অনেক শিক্ষার্থীকে ভুগতে হচ্ছে। সেখানে গণপরিবহনের ভাড়া তাদের নতুন সঙ্কটে ফেলেছে।

“আগে দুইটা টিউশনি করতাম। মহামারীর কারণে এখন একটা করি। সবকিছুর দাম বেড়েছে, কিন্তু আয় তো বাড়েনি। আমার অনেক বন্ধু টিউশনি পাচ্ছে না, তারা মানবেতন জীবনযাপন করছে। সবার কথা চিন্তা করেই আমরা গণপরিবহনে হাফ ভাড়ার দাবিতে লড়ছি।”

ঢাকা কলেজের আরেক শিক্ষার্থী ইকরাম হোসেন নতুন তালিকায় সর্বনিম্ন ১০ টাকা ভাড়ার নিয়ম নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

“শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশপাশেই বেশি যাতায়াত করে। কলেজ থেকে নীলক্ষেত, আজিমপুরে আমাদের নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। এতটুকু রাস্তায় ৫ টাকাও ভাড়া হওয়া উচিত না, সেখানে উঠলেই ১০ টাকা নিচ্ছে। মগের মুল্লুক পেয়ে বসেছে ওরা।”

বকশিবাজারের বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তারের বাসা বাড্ডায়। এখন তার কালেজে যাতায়াতে দিনে ১০০ টাকার মত চলে যায় ভাড়ার পেছনে।

“মাস শেষে খরচটা অনেক বড় অ্যামাউন্টে দাঁড়ায়। সে চিন্তা করে আমরা অনেক সময় বাইরে কিছু খাইও না। হাফ ভাড়া দিয়ে কিছু টাকা বাঁচলে সেটা অন্য কাজে লাগে। আমরা সবাই স্বচ্ছল পরিবারের না, চাকরিও করি না। বাসায় তো বাড়তি টাকা চাইতেও খারাপ লাগে। বিষয়গুলো ভেবে সরকারের একটা ডিসিশনে আসা উচিত।”

পুরান ঢাকার সরকারি কবি নজরুল কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেরিয়ান বিনতে মাসুদকে জিগাতলার বাসা থেকে গুলিস্তান হয়ে সদরঘাটে যেতে হয়।

তিনি জানান, এতদিন জিগাতলা থেকে গুলিস্তানে ভাড়া নেওয়া হত ৩০ টাকা, ‘হাফ’ ভাড়ায় তিনি দিতেন ১৫ টাকা।

“এখন ভাড়া নিচ্ছে ৪০ টাকা। হাফ ভাড়া নিচ্ছে না। অথচ নতুন চার্ট অনুযায়ী ভাড়া ১১ টাকা হয়। কিন্তু তাদের এটা মানাবে কে?”

ক্ষোভের সঙ্গে মেরিয়ান বলেন, “সবার তো ইনকাম সোর্স এক রকম হয় না, অনেকের ফ্যামিলি ক্রাইসিস থাকে। বেশিরভাগ স্টুডেন্ট থাকে হোস্টেলে, সেটারও খরচ আছে। মাসের শেষে টানাটানি হয়ে যায়। সে কারণেই ভাড়াটা এখন গায়ে লাগছে।”

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে পরিবহন মালিকদের সাথে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চলাচল করা বাসে ‘হাফ’ ভাড়া ও সর্বনিম্ম ৫ টাকা ভাড়া দিতে বলেছে শিক্ষার্থীদের।

তবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাকসুদুর রহমান বলছেন, অন্যান্য রুটে চলাচলের ক্ষেত্রে ‘অন্যায্য’ ভাড়া দিতে হচ্ছে।

মাকসুদুর থাকেন মিরপুরের মাটিকাটা এলাকায়। তার অভিযোগ, ক্যান্টনমেন্টের ইসিবি চত্বর হয়ে চলাচল করা কোনো বাসই তালিকা মেনে ভাড়া নিচ্ছে না।

“বাসে উঠলেই নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে। আগে থেকেই ওরা ভাড়া বেশি নিত, এখন ভাড়া বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে আরও বেশি নিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের জন্য এটা জুলুম হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দেখার কেউ নেই।”

সন্তান এভাবে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করলে অভিভাবকের দুঃশ্চিন্তা বাড়ে। কিন্তু গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধির জের শেষ পর্যন্ত তাদেরই মেটাতে হয়।  

নটরডেম কলেজের এক শিক্ষার্থীর বাবা আরাফাত মোল্লা বলেন, “আমরা ছাত্র থাকতে হাফ ভাড়া দিয়েছি। এটা তো নতুন কোন বিষয় না। এটা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার। সেটা থেকে তাদের বঞ্চিত করা ঠিক হবে না।

“আর অনেক পরিবারের আর্থিক অবস্থা তো ভালো না। অনেকের জন্য বাচ্চাদের পড়ালেখা করানোটাই কঠিন। তার ওপর যদি প্রতিদিন ভাড়ার জন্য এতো টাকা গুণতে হয়, তাহলে সেটা বাড়তি বোঝা হয়ে যাচ্ছে।”

বেসরকারি চাকরিজীবী আবদুল হকের তিন সন্তান কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। মাস খরচের হিসাবটা তাকে স্বস্ত্বিতে থাকতে দেয় না।

“সব কিছুর দাম বাড়ছে, কিন্তু আমাদের মত বেসরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কতটা বাড়ছে? মহামারীর মধ্যে আমাদের চাকরি যায় যায় অবস্থা। লকডাউনে বেতন কমিয়ে দিয়েছে। এরপরও কষ্ট করে সংসার চালাচ্ছি।

“আমাদের ছেলেমেয়েদের বেতন কিন্তু ঠিকই দিতে হয়েছে। আমরা তো ওদের পড়াশোনার জন্য পাঠাচ্ছি। কিন্তু ওরা দাবি নিয়ে নামছে রাস্তায়। এগুলোর দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।”