নতুন জনবল কাঠামোতে নিয়োগ হলে বন্ধ স্টেশন খুলবে: মন্ত্রী

বাংলাদেশ রেলওয়ের নতুন জনবল কাঠামো অনুযায়ী শূন্যপদে লোক নিয়োগ শুরু হলে বন্ধ থাকা কিছু স্টেশন আবারও চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2021, 07:17 AM
Updated : 16 Nov 2021, 07:17 AM

মঙ্গলবার সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

সাংসদ মমতা হেনা লাভলী জানতে চেয়েছিলেন, টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল, সখীপুর ও টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মানুষের সুবিধার কথা বিবেচনা করে করটিয়া রেল স্টেশনটি চালু করা হবে কি না।

উত্তরে রেলপথ মন্ত্রী বলেন, করটিয়া একটি ‘ডি’ ক্লাস স্টেশন। এ ধরনের স্টেশন মূলত বাণিজ্যিক কার্যক্রমে পরিচালিত হয়।

বর্তমানে রেলওয়েতে বাণিজ্যিক বিভাগে মঞ্জুরিকৃত দুই হাজার ৫১৬ জটি পদের বিপরীতে এক হাজার ৪৬০ জন কর্মরত আছেন। অর্থাৎ ৪২ শতাংশ পদই সেখানে শূন্য।

সম্প্রতি রেলওয়ের জন্য ৪৭ হাজার ৬৩৭ জনের নতুন জনবল কাঠামোর অনুমোদন পাওয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, নতুন নিয়োগ সম্পন্ন হলে করটিয়া স্টেশনও চালু করা সম্ভব হবে।

১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ের জনবল কাঠামোতে পদ ছিল ৬৮ হাজার ৫২৪টি। পরে নতুন করে আরও ১৪ হাজার ৩৬৮টি পদ সৃষ্টি করা হয়। তাতে জনবল কাঠামোতে পদ দাঁড়ায় ৮২ হাজার ৮৯২।

সর্বেশষ ১০২টি ক্যাডার পদসহ মোট ৪০ হাজার ৭২৮টি পদ বিলুপ্ত করে ১৯৫টি ক্যাডার পদসহ ৫ হাজার ৪৭৩ নতুন পদ সৃষ্টির মাধ্যমে ৪৭ হাজার ৬৩৭ জনের নতুন জনবল কাঠামোর অনুমোদন দেওয়া হয়।

ওয়ার্কার্সস পার্টির লুৎফন নেসা খানের প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী জানান, বর্তমানে রেলওয়ের ২৮৩টি ইঞ্জিন রয়েছে। এর মধ্যে ১৯১টি মিটারগেজ ও ৯২টি ব্রজ গেজ।

মিটারগেজ ইঞ্জিনের মধ্যে ১৩২টি এবং ব্রডগেজ ৪৩টিসহ মোট ১৭৫টির (৬১%) অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল উত্তীর্ণ হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, বর্তমানে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ১০০টি মিটার গেজ ও ৪০টি ব্রড গেজ নতুন ইঞ্জিন সংগ্রহের কাজ চলছে। নতুন ২০টি মিটার গেজ ইঞ্জিন রেলওয়েতে যুক্ত হয়েছে এবং ১০টি বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। ব্রডগেজ ইঞ্জিনের মধ্যে আটটি কমিশনিং পর্যায়ে আছে। আরো আটটি শিগগিরই বন্দরে পৌঁছবে।

বেগম লুৎফন নেসা খানের আরেক প্রশ্নেবর উত্তরে নুরুল ইসলাম সুজন দাবি করেন, দেশে রেলওয়ের দুর্র্ঘটনা ‘ক্রমান্নয়ে কমে আসছে’।

তিনি বলেন, ২০২০ সালে রেলে মোট ১৪৫টি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দুর্ঘটনা ঘটেছে ১০৬টি।

সওজের মোট রাস্তা ২২৪২৮ কিলোমিটার

মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামানের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতায় এখন মোট ২২ হাজার ৪২৮ কিলোমিটার মহাসড়ক রয়েছে।

তিনি জানান, বর্তমান সরকারের আমলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতায় ৩৫৭টি প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছে। এ সময়ে সাত হাজার ৩২১ কিলোমিটার মহাসড়ক সংস্কার, নয় হাজার ৩৩ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্ত করা হয়েছে। ৬৩২ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেইন বা ছয় লেইনে উন্নীত করা হয়েছে।

দীর্ঘ মেয়াদী ইজারায় পাটকল

এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, রাষ্ট্রায়াত্ত পাটকলগুলোকে পিপিপির মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে না। সেগুলো বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘ মেয়াদী ইজারা দেওয়া হচ্ছে।

“ইতোমধ্যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ‘এনওএ’ জারি করা হয়েছে। আশা করা যায় স্বল্প সময়ের মধ্যে এগুলো চালু হবে।”

জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে পাটকলের সংখ্যা ২২৭টি। এর মধ্যে সরকারি ২৬টি এবং বেসরকারি ২২১টি। সরকারি ২৬টিসহ দেশের ৮২টি পাটকল বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

কাজিম উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশে বার্ষিক বস্ত্রের চাহিদা ২৪০০ মিলিয়ন মিটার। চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন ১৭০০ থেকে ২০০০ মিলিয়ন মিটার। প্রতি বছর ৪০০ থেকে ৭০০ মিলিয়ন মিটার আমদানি করা হয়।