আর এই কাজের জন্য ডিসেম্বর থেকে প্রায় ছয় মাস প্রতিদিন রাত থেকে সকাল পর্যন্ত আট ঘণ্টা বন্ধ থাকবে বাংলাদেশের রাজধানীর একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি।
রানওয়ে সংস্কারের কাজটি গুরুত্বপূর্ণ মানলেও এই কাজটি মহামারীর শুরুতে যখন উড়োজাহাজ চলাচল প্রায় বন্ধ ছিল, তখন করা যেত বলে মনে করেন এই শিল্প সংশ্লিষ্টরা।
করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর নানা বিধি-নিষেধে গত বছরের শুরুতে সারা বিশ্বেই আকাশপথ সীমিত হয়ে এসেছিল। যাত্রীবাহী অধিকাংশ ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, চলেছিল শুধু কার্গো ফ্লাইট।
বাংলাদেশেও তাই ঘটেছিল; দেড় বছর গড়ানোর পর এখন অধিকাংশ রুটে বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই শাহজালালে রানওয়ে সংস্কার কাজ শুরু হতে যাচ্ছে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ১০ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ৩১ মে পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মান সময় ১৮টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ থাকবে।
যার অর্থ, ছয় মাস বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বিমানবন্দরের রানওয়ে। ফলে তখন বিমান ওঠানামা হবে না।
বিমানবন্দর কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, রাত ১২টা থেকে সকাল ৮টার মধ্যে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ওঠানামা বেশি।
১১ নভেম্বরের শিডিউলে দেখা যায়, রাত ১২টা থেকে সকাল ৮টার মধ্যে ২৫টি ফ্লাইট ছেড়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ১৫টি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গন্তব্যের।
বাংলাদেশ এভিয়েশন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এ টি এম নজরুল ইসলাম মনে করেন, মহামারীর সময় সংস্কার কাজটা করলে খুব ভালো হতো। কাজটা যেহেতু জমেই ছিল, ফাঁকা সময়ে তা করে ফেলা যেত।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাত ১২টা থেকে সকাল ৮টার মধ্যে মূলত আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো থাকে। ওই ফ্লাইটগুলোকে অন্য সময়ে সরিয়ে নেওয়া একটা সঙ্কট তো বটেই। বিমানবন্দরে ভিড়ও বাড়বে। করোনার মধ্যে এমনিতেই বাড়তি স্ক্রিনিংয়ের কারণে ভিড় বেশি।
“তবে রানওয়ের কার্পেটিং করাটাও জরুরি। এই সংস্কার কাজটা ছয় মাস আগে মহামারীর মধ্যেও করা যেত। মহামারীর কারণে দীর্ঘ বন্ধ থাকার পর এখন আন্তর্জাতিক যোগাযোগ আবার স্বাভাবিক হচ্ছে। দেশগুলো ভ্রমণের জন্য দ্বার খুলে দিচ্ছে। ডিসেম্বর থেকে ভারত টুরিস্ট ভিসা দেবে। এই সময়টা আবার টুরিস্ট সিজন। এখন আট ঘণ্টা রানওয়ে বন্ধ থাকায় চাপ অনেক বাড়েবে।”
তবে শীতকালে ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ভোরের দিকে কুয়াশার কারণে এমনিতেই বিমান ওঠানামা হয় না বলে জানান নজরুল।
রানওয়ে বন্ধ থাকার সময় এক ঘণ্টা কমিয়ে রাত ১টা থেকে করার পরামর্শ দেন তিনি। তাতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো ছেড়ে যাওয়ার জন্য বেশি সময় পাবে।
আর সংস্কারের পাঁচ মাস সিলেট ও চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ‘স্ট্যান্ডবাই’ রাখার পরামর্শও দেন তিনি, যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়।