ঢাকার ৩ শতাংশ বাস সিএনজিচালিত, দাবি মালিক সমিতির

ঢাকা মহানগরে চলাচলকারী  ছয় হাজার বাস-মিনিবাসের মধ্যে মাত্র ১৯৬টি সিএনজিচালিত বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Nov 2021, 12:38 PM
Updated : 10 Nov 2021, 12:38 PM

বুধবার দুপুরে রাজধানীর কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি করেন।

মহাসচিব বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাস-মিনিবাসের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ নিয়ে নানা সমালোচনা চলছে। ১০ থেকে ১২ বছর আগে ঢাকায় গ্যাস চালিত গাড়ি চলাচল করত এখন এসব বাসের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে।

“বলা হচ্ছে, ঢাকা এবং দূরপাল্লার বাস-মিনিবাসের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ সিএনজিচালিত। এসব বাসে বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু আমরা ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় অনুসন্ধান করে ১২০টি কোম্পানির ছয় হাজার মধ্যে মাত্র ১৩ কোম্পানির ১৯৬টি বাস সিএনজিচালিত পেয়েছি। এটি মোট গণপরিবহনের মাত্র ৩ দশমিক ২৬ শতাংশ।”

তবে ভাড়া নিয়ে অনিয়ম এড়াতে আগামী তিন দিনের মধ্যে ডিজেল ও সিএনজি চালিত বাসে স্টিকার লাগানো হবে এবং এসব গাড়ি যাতে অতিরিক্ত ভাড়া নিতে না পারে সেজন্য মালিক-শ্রমিকদের ১১টি দল মাঠে নজরদারি করবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান খন্দকার এনায়েত উল্লাহ।

ডিজেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘটে তিন দিন বাস বন্ধ থাকার পর মালিকদের দাবির মুখে গত রোববার দূরপাল্লার বাসে ২৭ শতাংশ এবং ঢাকায় ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ ভাড়া বাড়ায় সরকার।

এ ভাড়া বৃদ্ধি শুধু ডিজেলচালিত বাসের জন্য কার্যকর হবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ জানালেও সিএনজিচালিত বাসেও বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

পরে মঙ্গলবার বিআরটিএ কার্যালয়ে বাস মালিক-শ্রমিক নেতা এবং পুলিশ ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বৈঠকে দুই জ্বালানিতে চালিত বাসগুলো আলাদাভাবে চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত আসে।

তার পরদিন বাস ভাড়া পুনর্নির্ধারণ ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা।

‘সিটিং সার্ভিসে কোনো নিয়মনীতি নেই’ মন্তব্য করে এনায়েত উল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিন দিন পর ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ‘সিটিং সার্ভিস’ এবং ‘গেইটলক সার্ভিস’ থাকবে না।

 “সিটিং সার্ভিস এবং গেইটলক সার্ভিসের নামে আমরা নানা ধরনের অভিযোগ পাচ্ছি। আজ থেকে তিন দিন সময় দেব। এর মধ্যে সিটিং সার্ভিস-গেটলক লেখা তুলে ফেলতে হবে। তিন দিন পর অভিযান চালিয়ে সিটিং সার্ভিস পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

কিছু বাস আসন সংখ্যার সমান যাত্রী পরিবহন করে নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি ভাড়া আাদয় করে। এসব বাসের গায়ে লেখা থাকে ‘সিটিং সার্ভিস। আবার এসব বাস নির্ধারিত স্টপেজ ছাড়া থামে না বলে কখনও কখনও বলা হয় ‘গেইটলক সার্ভিস’। 

বাসের ৯৫ শতাংশ আসনে যাত্রী থাকবে, ৫ শতাংশ সিট খালি থাকবে হিসাব ধরেই বাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। সেখানে সব বাসই সিটিং হওয়ার কথা, দাঁড়িয়ে কোনো যাত্রী যাওয়ার কথা নয়।

এর আগে ২০১৭ সালেও সিটিং সার্ভিস বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেই উদ্যোগ আর কার্যকর হয়নি।

খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, “এই সিস্টেম দূরপাল্লার বাসে থাকবে। ঢাকায় অফিস সময়ে এটা সম্ভব না। অফিস টাইমে ঢাকা শহরে যে পরিমাণ গাড়ি দরকার তা নাই।”

আরও পড়ুন: