এস কে সিনহা: বিচারাঙ্গনের চূড়া থেকে দণ্ডিত অপরাধী

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে ২২ জন বিচারক প্রধান বিচারপতির পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা অনেক দিক দিয়েই প্রথম।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Nov 2021, 09:28 AM
Updated : 16 Nov 2021, 07:44 AM

তিনিই প্রথম প্রধান বিচারপতি, ২০১৭ সালের নভেম্বরে যার দায়িত্বের অবসান হয়েছিল পদত্যাগের মধ্য দিয়ে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনিই প্রথম সাবেক প্রধান বিচারপতি, দুর্নীতির দায়ে যার সাজার রায় এসেছে আদালতে।

ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের মামলার মঙ্গলবার তাকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালত।

বিচারক শেখ নাজমুল আলম তার রায়ে বলেছেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এস কে সিনহা। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে তিনিই একমাত্র অমুসলিম ও আদিবাসী বিচারক, যিনি বিচারাঙ্গণের শীর্ষ পদে পৌঁছেছিলেন। 

প্রধান বিচারপতি হওয়ার আগে থেকেই নানা কারণে আলোচিত এস কে সিনহা তার ১০৩০ দিনের দায়িত্বে বার বার সংবাদ শিরোনামে এসেছেন নানা ঘটনায়।

বয়স অনুযায়ী ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নজিরবিহীন এক পরিস্থিতির মধ্যে তবে কার্যকাল শেষ হয় মেয়াদের ৮১ দিন আগেই।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের তোপের মুখে ছুটি নিয়ে বিদেশ যাওয়ার পর ২০১৭ সালের ১১ নভেম্বর তিনি সেখানে থেকেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন।

তিনি ছুটি নিয়ে বিদেশ যাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, আর্থিক অনিয়ম ও নৈতিক স্খলনসহ সুনির্দিষ্ট ১১টি অভিযোগ পাওয়ার কথা সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আসা বিচারপতি সিনহা যুক্তরাষ্ট্রে বসেই ২০১৮ সালে একটি বই প্রকাশ করেন। তাতে তিনি দাবি করেন, তাকে ‘পদত্যাগে বাধ্য করে নির্বাসনে’ পাঠানো হয়েছে।

বিচারপতির এক জীবন

সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের আলীনগর ইউনিয়নের তিলকপুর গ্রামে। তার জন্ম ১৯৫১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি।

১৯৭৪ সালে সিলেট বারে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর ১৯৭৮ সালে হাই কোর্টে এবং ১৯৯০ সালে আপিল বিভাগে তালিকাভুক্ত হন এস কে সিনহা।

হাই কোর্টে তিনি বিচারক হিসাবে নিয়োগ পান ১৯৯৯ সালের ২৪ অক্টোবর। আপিল বিভাগে আসেন ২০০৯ সালের ১৬ জুলাই।

ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আনা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আপিল বিভাগের যে বেঞ্চ বাতিল করেছিল, এস কে সিনহা ছিলেন তার অন্যতম সদস্য। এছাড়া ২০১১ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চূড়ান্ত রায় দেওয়া বেঞ্চেও সদস্য ছিলেন তিনি।

আপিল বিভাগে আসার ছয় বছর পর ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এস কে সিনহা।

অবসরের পর রায় লেখা নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত সহকর্মীর সঙ্গে বাদানুবাদ, বিচার বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করার অভিযোগ আনা, অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরিবিধির গেজেট প্রকাশ নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিরোধ, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ভাস্কর্য স্থাপন নিয়ে উত্তেজনা- এরকম বহু ঘটনায় বিচারপতি সিনহা বহুবার সংবাদ শিরোনামে এসেছেন।

বাংলাদেশে কোনো প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে এত আলোচনা হয়নি; দায়িত্বরত আর কোনো প্রধান বিচারপতিকে ক্ষমতাসীনদের এত সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়নি।

বিচারপতি এসকে সিনহা (ফাইল ছবি)

ঝঞ্ঝামুখর শেষ সময়

সিনহার শেষ বিতর্কের শুরু সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে, যা প্রথমে ছুটি এবং শেষে পদত্যাগে গিয়ে শেষ হয়। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ওই রায় প্রকাশের পর থেকে পাঁচ মাসেই ঘটে যায় সব ঘটনা।

উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল রেখে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই রায় দেয় আপিল বিভাগ।

পরের মাসের প্রথম দিন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। এই রায়ে প্রধান বিচারপতি সিনহার ৪০০ পৃষ্ঠার পর্যবেক্ষণ থাকে।

৯ অগাস্ট এই রায়ের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেন আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। রায়ের পর্যবেক্ষণ নিয়ে কঠোর সমালোচনাও করেন তিনি।

পরদিন ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে প্রধান বিচারপতির ‘অগ্রহণযোগ্য’ বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

১২ অগাস্ট প্রধান বিচারপতি সিনহার সঙ্গে দেখা করে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে দলীয় বক্তব্য জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

পরদিন  সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে রায় নিয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল রেখে আপিল বিভাগের আদেশের ৪৩ দিন পর ১৬ অগাস্ট বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২২ অগাস্ট প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব ছাড়তে বিচারপতি এস কে সিনহাকে সময় বেঁধে দেয় আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা। তা না হলে তাকে অপসারণে আন্দোলনের হুমকি দেওয়া হয়।

সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শুরুর আগে ২৪ অগাস্ট শেষ অফিস করেন বিচারপতি সিনহা। এদিন আদালতের কার্যক্রম চলার সময় বক্তব্য ভুলভাবে উদ্ধৃত না করতে সংবাদকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান বিচারপতি সিনহা।

সুপ্রিম কোর্টে অবকাশের মধ্যে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরের ১০ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত বিদেশ সফরে ছিলেন এস কে সিনহা।

এর মধ্যেই ১৩ সেপ্টেম্বর ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং তার কিছু পর্যবেক্ষণের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে জাতীয় সংসদে প্রস্তাব গ্রহণ করে বিচারপতি সিনহার তীব্র সমালোচনা করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের ১৪ অক্টোবরের বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গত ৩০ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের বিচারপতিদের ডেকে নিয়ে বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে ‘১১টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ’ তুলে ধরেন।

বঙ্গভবনের ওই বৈঠক থেকে ফিরে পরদিন ১ অক্টোবর আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি- বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার, বিচারপতি ইমান আলী নিজেরা বৈঠক করে বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন।

পরে তারা প্রধান বিচারপতির হেয়ার রোডের বাড়িতে গিয়ে এ বিষয়ে কথা বললে বিচারপতি সিনহা ‘দুর্নীতি, আর্থিক অনিয়ম ও নৈতিক স্খলনের’ওই অভিযোগগুলোর ‘গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা’ দিতে পারেননি বলে বিবৃতিতে জানায় সুপ্রিম কোর্ট।

নানা নাটকীয়তার পর অসুস্থতাজনিত কারণ দেখিয়ে পরদিনই ৩ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর ছুটিতে যাওয়ার আবেদন করেন বিচারপতি সিনহা। পরে আরেক আবেদনে ছুটির সময় বাড়িয়ে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত করা হয়।

প্রধান বিচারপতির ‘খোঁজ নিতে’ ওই বছর ৬ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট থেকে তার বাসায় যেতে চান বিএনপি সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণে থাকা আইনজীবী সমিতির নেতারা। তবে পুলিশ তাদের গাড়ি আটকে দেয়।

 

১৩ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ায় বড় মেয়ের কাছে যান ৩৯ দিনের ছুটিতে থাকা প্রধান বিচারপতি সিনহা। তার আগে সাংবাদিকদের বলেন, ক্ষমতাসীনদের সমালোচনায় তিনি বিব্রত, শঙ্কিত।

পরদিন ১৪ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ করে বিরল বিবৃতি দেয় আদালত।

সিঙ্গাপুর থেকে কানাডায় ছোট মেয়ের বাড়িতে যাওয়ার আগে ১১ নভেম্বর সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে পাঠানো এস কে সিনহার পদত্যাগপত্র বঙ্গভবনে পৌঁছায়।

পদত্যাগ করার পর বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, আর্থিক অনিয়ম ও নৈতিক স্খলনসহ সুনির্দিষ্ট ১১টি অভিযোগ ওঠার কথা সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়। বলা হয়, ওইসব অভিযোগের কারণে আপিল বিভাগের অন্য বিচারকরা আর প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বসে মামলা নিষ্পত্তিতে রাজি নন। সেসব অভিযোগ নিয়ে দুদক পরে অনুসন্ধানও শুরু করে।

ক্ষমতাসীন দলের নেতা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সে সময় বলেন, একজন বিচারপতির মাধ্যমে দেশে জুডিশিয়াল ক্যু করার চেষ্টা হয়েছিল।  আর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, বিচারকদের নিয়ন্ত্রণে সংবিধান রাষ্ট্রপতিকে যে ক্ষমতা দিয়েছে, শৃঙ্খলা বিধির নামে তা কেড়ে নিতে চেয়েছিলেন বিচারপতি সিনহা।

বিচারপতি সিনহার পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে আসেন বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা। তার সময়ে বিচারকদের চাকরিবিধির গেজেট নিয়ে সরকারের সঙ্গে সর্বোচ্চ আদালতের টানাপড়েনের অবসান ঘটে।

উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে নেওয়া অবৈধ ঘোষণার যে রায় নিয়ে সঙ্কট জটিল মাত্রা পেয়েছিল, সেই রায় পুনর্বিবেচনার জন্যও সরকার আবেদন করে।

অবশ্য সরকার সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব দিলে আপিল বিভাগের তখনকার জ্যেষ্ঠতম বিচারক ওয়াহহাব মিঞাও চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে বিদায় নেন।

 

আত্মপক্ষ সমর্থনে আত্মচরিত

দেশে পদত্যাগপত্র পাঠানোর পর ২০১৭ সালের কোনো এক সময় যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এস কে সিনহা। নিউ জার্সিতে ছোট ভাই অনন্ত কুমার সিনহার নামে কেনা একটি বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে তার আবেদন করার খবর আসে।

ওই বছর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত হয় তার বেই ‘আ ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’।

আত্মজীবনীমূলক ওই বইয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি দাবি করেন, তিনি দেশ ছেড়েছেন ‘হুমকির মুখে’; একই কারণে বিদেশ থেকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন।  

৬১০ পৃষ্ঠা বইটির ভূমিকায় বিচারপতি সিনহা লিখেছেন, ১৯৭৪ সাল থেকে বাংলাদেশের বিচারাঙ্গনে যুক্ত থাকার সুবাদে এর রূপান্তর এবং বাধাগ্রস্ত হওয়ার ঘটনাগুলো দেখার সুযোগ পেয়েছেন তিনি।

সিলেটের নিম্ন আদালতের একজন আইনজীবী হিসেবে শুরু করে বাংলাদেশের বিচারালয়ের শীর্ষ অবস্থানে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালনের সৌভাগ্য হয়েছে তার।

শৈশব থেকে নিজের ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনাল নিয়েও সেখানে লিখেছেন সিনহা।

দেশ ছাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, দেশে তাকে তার বাসভবনে আটকে থাকতে হচ্ছিল। আইনজীবী ও বিচারপতিদেরকে তার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছিল না। সংবাদমাধ্যমকে বলা হচ্ছিল- তিনি অসুস্থ, ছুটির আবেদন করেছেন।

“আমি আশা করছিলাম, আদালতে আমার অনুপস্থিতি আর আদালতের নিয়মিত অবকাশের মধ্যে পরিস্থিতি কিছুটা থিতিয়ে আসার সুযোগ পাবে এবং সুবিবেচনার উদয় হবে, সরকার হয়ত ওই রায়ের মর্ম বুঝতে পারবে, তারা বুঝবে যে বিচারবিভাগের স্বাধীনতা রাষ্ট্র ও দেশের জন্যই দরকার।”

যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়ের আবেদনের ফল জানা না গেলেও ২০১৯ সালের জুলাই মাসে খবর আসে, এবার কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি।

কানাডার দি স্টার সে সময় জানায়, ফোর্ট এরি সীমান্ত হয়ে সিনহা কানাডায় প্রবেশ করেন এবং সেখানে তার রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন জমা দেন।  

সিনহার সঙ্গে তার স্ত্রী সুষমাও কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় চান বলে টরন্টো থেকে প্রকাশিত কানাডিয়ান কুরিয়ারের খবরে জানানো হয়।

কানাডায় করা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনে বাংলাদেশে এই সাবেক প্রধান বিচারপতি ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে সরকারের সঙ্গে টানাপড়েনের প্রসঙ্গ টানেন।

সে সময় দি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসকে সিনহা বলেছিলেন, “আমাকে টার্গেট করা হয়েছে কারণ বিচারক হিসেবে আমি ছিলাম একজন অ্যাকটিভিস্ট। আমি যেসব রায় দিয়েছি তাতে আমলাতন্ত্র, প্রশাসন, রাজনীতিবিদ, এমনকি সন্ত্রাসীরাও ক্ষিপ্ত হয়েছে। আমি এখন নিজের দেশেই অবাঞ্ছিত।”