ভাড়া ৪০ শতাংশের বেশি বাড়ানোর দাবি বাস মালিকদের

ডিজেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়লেও প্রতি কিলোমিটারে বাসের ভাড়া ৪০ শতাংশের বেশি বাড়াতে চান পরিবহন মালিকরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Nov 2021, 09:33 AM
Updated : 7 Nov 2021, 10:16 AM

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সঙ্গে ভাড়া পর্যালোচনার বৈঠকে তাদের এই প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। 

ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে সারা দেশে তিন দিন ধরে চলা ধর্মঘটের মধ্যেই রোববার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ঢাকার বনানীতে বিআরটিএ দপ্তরে এ বৈঠক শুরু হয়।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদারের সভাপতিত্বে এ বৈঠকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ,  বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসাধারণ সম্পাদক রাকেশ ঘোষ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন  শ্রমিক ফেডারেশনসহ সরকারি-বেসরকারি সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।

সরকার ডিজেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানোর পর শুক্রবার সকাল থেকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরু হয়। তখন থেকেই নগরপরিবহন ও দূরপাল্লার বাসের পাশাপাশি পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে তিন দিন ধরে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

সবশেষ ২০১৫ সালে নগর পরিবহনে বাসের ভাড়া প্রতি কিলেমিটারে ১ টাকা ৭০ পয়সা এবং মিনিবাসের জন্য ১ টাকা ৬০ পয়সা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। আর ২০১৬ সালে দূরপাল্লায় ডিজেলচালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয় ১ টাকা ৪২ পয়সা।

রোববারের বৈঠকে পরিবহন মালিকদের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব করা হয়েছে, সেখানে মহানগরে বাস ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ৪১ শতাংশ বাড়িয়ে ২ টাকা ৪০ পয়সা এবং মিনিবাসে ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ২ টাকা ৪০ পয়সা করার কথা বলা হয়েছে।

এছাড়া দূরপাল্লার বাস ভাড়া ৪১ শতাংশ বাড়িয়ে প্রতি কিলোমিটারে ২ টাকা করার দাবি ‍তুলেছেন পরিবহন মালিকরা। 

ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটে শুক্রবার ঢাকার সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার বাস। ছবি: কাজী সালাহউদ্দিন রাজু

অন্যদিকে বিআরটিএ বৈঠকের যে কার্যপত্র তৈরি করেছে, সেখানে বলা হয়েছে, “সবশেষ ব্যয় বিশ্লেষণ অনুযায়ী ভাড়া হতে পারে দূরপাল্লা ও মহানগরী এলাকায় যথাক্রমে ১ টাকা ৮২ পয়সা ও ২ টাকা ১০ পয়সা। তবে বর্তমান বাস ভাড়ার সঙ্গে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির হার ২৩ দশমিক ০৮ শতাংশ সমন্বয় করে বাস ভাড়া পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি আলোচনা হতে পারে।

“২০১৯ সালের ব্যয়বিশ্লেষণ বাস্তবতার নিরিখে পুনর্বিশ্লেষণ ও বিআরটিএর সর্বশেষ ব্যয় বিশ্লেষণ পর্যালোচনাপূর্বক সার্বিক বিবেচনায় ভাড়া পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি সভায় চূড়ান্ত করা যেতে পারে।”

ভাড়ার হার পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়ে ২০১৯ সালেও বিআরটিএর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন পরিবহন মালিকরা।

সে সময় নগর পরিবহনের বাস ও মিনিবাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৭০ পয়সা বাড়িয়ে দুই টাকা ২১ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। আর দূরপাল্লা বাস ভাড়া এক টাকা ৪২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২ টাকা ৭ পয়সা করার কথা বলা হয়েছিল। তবে সে সময় ভাড়া বাড়ানোর কোনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি।

বিআরটিএ রোববারের বৈঠকের কার্যপত্রে বলেছে, “ব্যয় বিশ্লেষণে হিসাব করার ক্ষেত্রে কিছু কিছু বিষয়ে করণীক ভুল পরিলক্ষিত হয়, যা পরে চিহ্নিত করা হয়। ২০১৯ সালের অননুমোদিত সুপরিশের ব্যয় বিশ্লেষণ অনুযায়ী দূরপাল্লা ও মহানগর এলাকায় চলাচলকারী ডিজেল চালিত বাস ভাড়া যথাক্রমে ১ টাকা ৯৪ পয়সা ও ২ টাকা ৩৩ পয়সা।

“ওই ব্যয় বিশ্লেষণে ডিজেলের মূল্য ব্যতীত ব্যয়ের সকল আইটেম অপরিবর্তিত রেখে শুধু ডিজেলের মূল্য ৬৫ টাকার পরিবর্তে ৮০ টাকা পুনঃস্থাপন করা হলে দূরপাল্লা ও মহানগর এলাকায় চলাচলকারী ডিজেল চালিত বাস ভাড়া দাঁড়ায় যথাক্রমে ২ টাকা ৯ পয়সা এবং ২ টাকা ৪৯ পয়সা।”