ডিজিটাল আইন নিয়ে ইইউর উদ্বেগ মোমেনের চোখে ‘গৌণ’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) উদ্বেগকে গুরুত্বই দিচ্ছেন না পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Oct 2021, 06:53 PM
Updated : 28 Oct 2021, 06:56 PM

তার ভাষায়, “আমরা আমাদের দেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করি। কে কী আপত্তি করল না করল, সেটা গৌণ বিষয়।”

বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে সচিব পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে ইইউ আপত্তি তোলার দুদিন পর বৃহস্পতিবার ঢাকায় সাংবাদিকদের প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই প্রতিক্রিয়া আসে।

অনলাইনে অপরাধ দমন করার উদ্দেশ্যের বাইরে গিয়ে বাংলাদেশের বিতর্কিত আইনটির কয়েকটি ধারা ব্যবহারের ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইইউ।

একইসঙ্গে আইনটির অধীনে চলমান কয়েকটি মামলার বিষয়েও বৈঠকে জানতে চায় ইউরোপীয় দেশগুলোর এ জোট।

মোমেন বলেন, “আপত্তি করলে আমরা তাদের বোঝাব যে, আমাদের অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে এটা করেছি।”

নানা পক্ষের আপত্তি, সাংবাদিকদের উদ্বেগের মধ্যে ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ার আগে থেকে এর সমালোচনা চলছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ব্যাপক সমালোচিত ৫৭সহ কয়েকটি ধারা বাতিল করে নতুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হলেও পুরনো আইনের বাতিল হওয়া ধারাগুলো নতুন আইনে রেখে দেওয়া হয়।

২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অনলাইনে কোনো মন্তব্য শেয়ার করার কারণেও বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি, ডিজিটাল ডিভাইস জব্দ করা এবং গ্রেপ্তারের সুযোগ দেওয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।

আইনটি পাস হওয়ার আগে থেকেই এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনারের কার্যালয়ের সর্বশেষ ইউনিভার্সাল পেরিওডিক রিভিউয়ে (ইউপিআর) আইনটির পর্যালোচনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করার সুপারিশ করা হয়েছে।

এ কে আব্দুল মোমেন। ফাইল ছবি

বৃহস্পতিবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠান শেষে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে ইইউয়ের আপত্তির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন মোমেন।

তিনি বলেন, এমন আপত্তি এলেও তারা এই আইনের পথে পিছু হটছেন না।

সারসহ কৃষিপণ্যে ভর্তুকি দেওয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) আপত্তি এবং পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের অবস্থানের বাইরে গিয়েও বাংলাদেশ ‘সাফল্য’ পাওয়ার কথা বলেন মোমেন।

“উনারা অনেক সময় বকবক করবেন। কিন্তু আমরা আমাদের মঙ্গলের জন্য (যা দরকার), সেটা করব।”

পোশাক খাতের পরিবেশ ঠিক করতে ইইউর অবস্থানের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “উনারা হুঁশিয়ারি দেন। হুঁশিয়ারি যথেষ্ট নয়।

“তারা যে আমার কাছ থেকে কাপড় নেয়, সেটা কিন্তু দয়া করে নয়, বাধ্য হয়ে নেয়। না হলে তাদের মানুষ জামাকাপড় পাবে কোথায়? সস্তা দরে নেয়। বিশ্ব ব্যাংক যে আমাদের টাকা দেয় এর অর্থ এই নয় যে, তারা আমাদের দয়া করে দেয়। তারা টাকা দেয়, কারণ টাকা না দিলে তাদের চাকরি চলে যাবে।”