তিনি বলেছেন, “দেখা যাচ্ছে যখনই একটু শীতকাল আসছে, পৃথিবীর সব দেশে আবার কিন্তু করোনাভাইরাস দেখা দিচ্ছে। এমনকি ইউএসএ বা ইংল্যান্ড বা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ইতোমধ্যে এর প্রার্দুভাব কিছুটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে সবাইকে একটু সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করছি।”
বৃহস্পতিবার বিকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভাণ্ডারে কম্বল গ্রহণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে এই আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
গত বছর দেশে করোনাভাইরাস মহামারীর প্রাদুর্ভাবের পর এই বছরের জুলাই-অগাস্ট সবচেয়ে বেশি বিপর্যয়কর অবস্থা পার করে। তখন দৈনিক সংক্রমণের হার ৩২ শতাংশে উঠেছিল।
সেপ্টেম্বর থেকে কমতে শুরু করে এখন দৈনিক সংক্রমণের হার দুই শতাংশের নিচে নেমেছে। একই সঙ্গে কমেছে মৃত্যুও। বুধবার ছয় বিভাগে নতুন কারও মৃত্যুর তথ্য মেলেনি বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়।
সংক্রমণের হার কমলেও তা আবার বাড়তে পারে বলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর গুরুত্ব দিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সংক্রমণের হার কমে আসায় অনেকের মধ্যে একটু আয়েসি ভাব চলে এসেছে। কিন্তু এখন সময় এসেছে আবার সর্তকতা অবলম্বন করার। আর সর্তকতা অবলম্বন করতে পারলে ইনশাল্লাহ আমাদের আর এই প্রার্দুভাব বাংলাদেশকে আক্রান্ত করতে পারবে না।”
প্রধানমন্ত্রী সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন, দৈনিক খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি যুক্ত খাবারও রাখতে বলেছেন। কোনোভাবেই যেন ‘ঠাণ্ডা না লাগে’, সে দিকেও সজাগ থাকতে বলেছেন তিনি।
পাশাপাশি মহামারী নিয়ন্ত্রণে টিকা দিয়ে যাওয়ার কথাও বলেন শেখ হাসিনা। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে সব নাগরিককে টিকার আওতায় আনার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
“যেমন আজকে ৮০ লক্ষ টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে এবং টিকাদান কর্মসূচি চলছে সারা বাংলাদেশ ব্যাপী। পাশাপাশি দেশের ছাত্র সমাজকে টিকা দেওয়া হচ্ছে এবং স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদেরও টিকা দেওয়া হবে। দুই-একদিনের মধ্যেই আমরা কাজ শুরু করব।”
টিকা দেওয়ার পর অনেকে সংক্রমিত হলে তার তেমন সমস্যা না হলেও তার সংস্পর্শে এসে অন্য কেউ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন বলেও মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
সেজন্য টিকা দিলেও মাস্ক পরার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “কারণ ভ্যাকসিন দেওয়ার পরে যদি কারও করোনা হয়, তাহলে সে কিন্তু মানুষকে ছড়াতে পারে। নিজেও হয়ত অত বুঝবে না, কিন্তু দেখা যাচ্ছে সে অন্যকে সংক্রমিত করছে।”
মহামারীতে বিশ্বব্যাপী স্থবিরতা সৃষ্টি হলেও বাংলাদেশে যেন সব কিছু সচল থাকে, সেজন্য সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপও তুলে ধরে তিনি বলেন, “সেদিক থেকে আমরা মনে করি, বাংলাদেশ যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে।”
অনুষ্ঠানে ৩৭টি ব্যাংক প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভাণ্ডারে মোট ২৬ লাখ ৪৫ হাজারটি কম্বল এবং ১০ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে দেয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রান্তে থেকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস এই অনুদান গ্রহণ করেন। সেখানে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ বিভিন্ন ব্যাংকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মানুষের যে কোনো দুঃসময়ে ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এগিয়ে আসায় তাদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।