সাম্প্রদায়িক হামলা: প্রশাসনের ‘সমন্বয়হীনতার’ তদন্ত চান ঢাবি শিক্ষকরা

কুমিল্লাসহ দেশের স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়হীনতা তদন্তসহ চার দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Oct 2021, 04:01 PM
Updated : 26 Oct 2021, 04:01 PM

মঙ্গলবার বিকেলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক রহমত উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়ার নেতৃত্বে শিক্ষকদের ৮ জনের একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

প্রতিনিধি দলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল মনসুর আহাম্মদ, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ  হুমায়ুন কবির, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী, স্যার এ এফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক কেএম সাইফুল ইসলাম খান,  গণিত বিভাগের অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার ও সহকারী প্রক্টর মো. আব্দুর রহিম  উপস্থিত ছিলেন।

চার দাবি হলো-

১. আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট স্থানে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার এবং হামলার সময়ে স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়হীনতার যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, তা তদন্ত করা। এক্ষেত্রে কারো কোনো অবহেলা বা শিথিলতা থাকলে তা চিহ্নিত করে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।

২. হামলার ঘটনায় নিহতদের পরিবার, ক্ষতিগ্রস্ত পূজামণ্ডপ, আশ্রম, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

৩. এ ধরনের ঘটনাসমূহ রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল বিধায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারের ব্যবস্থা করা। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ধরনের আক্রমণের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।

৪. ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের নামে যেকোনো সহিংসতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী যেকোনো অপতৎপরতা রোধে সর্বাত্মক সতর্কতা এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়,  “সম্প্রতি কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার কথিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজামণ্ডপ, প্রতিমা, মন্দির, আশ্রম, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

“যে মুহূর্তে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হচ্ছে, সেই মুহূর্তে ষড়যন্ত্রকারীরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করতে তৎপর রয়েছে। এই একই অপশক্তি পূর্বে কক্সবাজারের রামু, সুনামগঞ্জের সাল্লা ও বগুড়ায় গুজব সৃষ্টি করে এবং বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। এই অপশক্তির উদ্দেশ্য জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রয়াসকে বাধাগ্রস্ত করা।”

এর আগে গত ১৮ অক্টোবর শিক্ষক সমিতির ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কুমিল্লার নানুয়া দিঘিরপাড়ের পূজামণ্ডপ ও ঠাকুরপাড়া রক্ষাময়ী কালীমন্দির এলাকা পরিদর্শন করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।

আরও পড়ুন