বিদ্যুতের বকেয়া বিলের মামলার তালিকা তৈরির সুপারিশ

বিদ্যুতের বকেয়া বিল সম্পর্কিত সব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়কে একটি তালিকা তৈরি করে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ নিতে বলেছে সংসদীয় কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2021, 04:06 PM
Updated : 25 Oct 2021, 04:10 PM

সোমবার সংসদ ভবনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা আয়শা খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা বকেয়া বিল সংক্রান্ত মামলাগুলোর একটা তালিকা তৈরি করতে বলেছি। কতগুলো মামলা আছে, কত বকেয়া বিল আছে সেসব তালিকা করে তারপর এ সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ নিতে হবে।”

গত ৭ জানুয়ারি সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানায়, সারাদেশে গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ বিভাগের পাওনা রয়েছে আট হাজার ৫৫৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে বেসরকারি খাতে ছয় হাজার ৯৬২ কোটি ৭৪ লাখ। আর সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কাছে বিদ্যুৎ বিভাগের পাওনা ৭৪৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।

এদিকে বৈঠকে দেশের জেলা ও উপজেলার পোস্ট পেইড বিদ্যুৎ মিটারকে স্মার্ট প্রি-পেইড মিটারে প্রতিস্থাপন কার্যক্রম আরো জোরদার করার সুপারিশ করা হয়।

এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি বলেন, “বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ছে। ফলে বিদ্যুৎ উৎদনের খরচও বাড়ছে। বিদ্যুতের অপচয় যাতে না হয়, সেজন্য সংসদীয় কমিটি স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার প্রতিস্থাপন কার্যক্রম জোরদার করার সুপারিশ করেছে।”

বিদ্যুতের অপচয় কমানোর পাশাপাশি ভুতুড়ে বিলের ভোগান্তি থেকে গ্রাহকদের মুক্তি দিতে সরকার ২০১১ সালে দেশে প্রিপেইড মিটার চালু করে।

২০২১ সালের মধ্যে দেশের আড়াই কোটি গ্রাহকের মধ্যে অন্তত দেড় কোটি গ্রাহকের কাছে প্রিপেইড মিটার পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট ৪১ লাখ ছয় হাজার প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হয়েছে।

দেশের বিদ্যুৎ খাতের চলমান প্রকল্পগুলোর সার্বিক পরিস্থিতিও এদিন বৈঠকে তুলে ধরা হয়।

বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে ৩৩টি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে মোট দুই হাজার ১৮৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত করা হয়। এর মধ্যে এক হাজার ৯৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৭টি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র মেয়াদ শেষে অবসরে গেছে এবং ৪৩৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার পাঁচটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা অনুযায়ী বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়িত না হওয়ায় কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে ৬৫২ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু আছে, যা ২০২৪ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে অবসরে যাবে। 

সংসদীয় কমিটি এর আগে ‘জনগণের অর্থ সাশ্রয়ের জন্য’ দ্রুততম সময়ে রেন্টাল/কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া সুপারিশ করেছিল।

কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা আয়শা খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটি সদস্য বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, এস এম জগলুল হায়দার, নূরুল ইসলাম তালুকদার, আছলাম হোসেন সওদাগর, খালেদা খানম, নার্গিস রহমান এবং নুরুজ্জামান বিশ্বাস অংশ নেন।