সম্প্রীতির আহ্বানে সমাবেশ থেকে ৭ দাবি

কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের উপর হামলার প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আহ্বানে সমাবেশ করেছে ৮৯টি সংগঠন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2021, 02:55 PM
Updated : 25 Oct 2021, 02:55 PM

সোমবার বিকালে ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’র আহ্বানে এই সমাবেশ থেকে সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িতদের শাস্তিসহ সাতটি দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে সাত দফা দাবি তুলে করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।

দাবিগুলো হলো- সাম্প্রতিক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, অতীতের ঘটনার দ্রুত বিচার সম্পন্ন করতে হবে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ঘটনা আর না ঘটে সেজন্য প্রশাসনকে আরও বেশি তৎপর হতে হবে, সাম্প্রতিক ঘটনার ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি-ঘর এবং উপাসনালয় দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদসহ শিক্ষা ব্যবস্থায় মানবিক মূল্যবোধ ও সহনশীলতার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, আবহমান বাঙলার সংস্কৃতি চর্চায় তরুণ ও যুব সমাজকে অধিকতর সম্পৃক্ত করতে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ও উস্কানি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার অপচেষ্টার প্রতিবাদে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী অসাম্প্রদায়িক ৮৯টি সংগঠন আজ ঐক্যবদ্ধ।

“মনে রাখতে হবে, একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য বীর শহীদরা আত্মাহুতি দিয়েছিলেন। শহীদদের রক্ত যেন বৃথা না যায়, সেজন্য শুভবোধ সম্পন্ন সকলকে একাত্তরের মত ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, “মুক্তিযোদ্ধারা এখনও বেঁচে আছে, সবাই মরে যায়নি। ধর্মীয় উগ্রবাদ বন্ধ কর, এসব থামাও। না পারলে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ক্ষমতা দাও। কীভাবে উগ্রবাদীদের দমাতে হয় হয়, সেটা আমরা জানি।”

সমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান খান বলেন, “এ হামলার মন্দির কিংবা একটি সম্প্রদায়ের উপর নয়, এই হামলা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপর, অসাম্প্রদায়িকতার উপর। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ্য থাকলে এই হামলা প্রতিরোধ করা সম্ভব।”

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক ভূঁইয়া, জগন্নাথ হলের সাবেক প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক অসীম সরকার, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহ-সম্পাদক নুজহাত চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি ওমর ফারুক, বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোট সভাপতি জিয়াউল হাসান, বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের নির্বাহী সভাপতি অশোক বড়ুয়া, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি জেএল ভৌমিক, যুবমৈত্রীর সভাপতি সাব্বাহ আলী খান কলিন্স, গৌরব একাত্তরের সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন, ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক সনজিত চন্দ্র দাস, বাংলাদেশ অনলাইন এক্টিভিস্ট ফোরামের সভাপতি কবির চেীধুরী তন্ময়, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বক্তব্য দেন।

সম্প্রীতি সমাবেশে যেসব সংগঠন সংহতি জানিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, প্রজন্ম একাত্তর, উদীচী, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন (ঢাকা, বাংলাদেশ), বঙ্গবন্ধু পরিষদ, জাতীয় কবিতা পরিষদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মীলন, বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট, শ্রী শ্রী বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির, বাংলাদেশ ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংঘ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন, মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামি জোট, বাংলাদেশ পথ নাটক পরিষদ, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হেপাটোলজি এলামনাই এসোসিয়েশন, হিন্দু হেরিটেজ ফাউন্ডেশন, খ্রিস্টান এসোসিয়েশন বাংলাদেশ, অপরাজেয় বাংলা, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদ, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ মোৰ্চা, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, চিকিৎসা সহায়ক কমিটি (একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি) বিবেকানন্দ শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদ, লা ইয়ার্স সম্প্রীতি, মুক্তচিন্তা এবং যুক্তিবাদ চর্চা ফোরাম, ইন্টার রিলিজিয়া হারমনি সোসাইটি, মাইনরিটি রাইট্স ফোরাম, বঙ্গবন্ধু অভিযাত্রিক, স্বাধীনতা সরকারি চাকরিজীবী জাতীয় পরিষদ, বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্ট, গৌরব ৭১, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড, বঙ্গবন্ধু সমাজ কল্যাণ পরিষদ, বাংলাদেশ অনলাইন একটিভিস্ট ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ মত, বঙ্গবন্ধু গবেষণা সংসদ, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন সমিতি, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্য, ইউনিটি কর ইয়াং জার্নালিস্ট, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, রমনা কালীবাড়ি ও আনন্দময়ী মন্দির কমিটি, প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম, জাগো বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ফার্মাসিস্ট ফোরাম, পল্লী বাউল সমাজ উন্নয়ন সংস্থা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বৌদ্ধ ছাত্র সংসদ, নাট্যস্নাতক মঞ্চ, ফার্মাসি স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক পরিষদ, বাংলাদেশ বেকার ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ নারী মুক্তি সংসদ, বাংলাদেশ গণশিল্পী সংস্থা, গণসাংস্কৃতিক মৈত্রী, স্থপতি পরিষদ, বাংলাদেশ, শিক্ষক সমিতি, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, নাট্যকেন্দ্র, মুক্তিযুদ্ধ একাডেমী ফাউন্ডেশন, মুক্তিযুদ্ধ সংহতি পরিষদ, সাউথ এশিয়া স্টাডি সার্কেল, শালুক, লিটল ম্যাগাজিন, মাসিক চিকিৎসক বার্তা, বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর ডেভেলাপমেন্ট রিসার্স, ৭২ ফাউন্ডেশন, রুটস অফ হিউমেন রাইটস ফাউন্ডেশন, হিউমেন রাইটস ফর এভরিওয়ান বাংলাদেশ সচেতন হিন্দু পরিষদ, সাউথ এশিয়ান দলিত ফোরাম, বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।