পরীমনির রিমান্ড: ব্যাখ্যা দিতে সময় পেলেন দুই হাকিম

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ডে পাঠানোর বিষয়ে ঢাকার দুই মহানগর হাকিমকে ব্যাখ্যা দিতে আরও এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2021, 01:08 PM
Updated : 24 Oct 2021, 01:08 PM

তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে রোববার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের ভার্চুয়াল বেঞ্চ শুনানি পিছিয়ে দেয়।

আদালতে দুই হাকিমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল আলীম মিয়া জুয়েল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান।

এছাড়া রিটকারী পক্ষের আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও পরীমনির আইনজীবী মো. মজিবুর রহমানও যুক্ত ছিলেন।

জুয়েল পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ব্যাখ্যা দিতে এক সপ্তাহের সময় চেয়েছিলাম। আদালত শুনানি পিছিয়ে দিয়েছেন। এ সপ্তাহে আর হচ্ছে না।”

আগামী রোববার শুনানি হতে পারে বলে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান জানান।

পরীমনিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ডে পাঠানোর ক্ষেত্রে ঢাকার দুই মহানগর হাকিমের আগের ব্যাখ্যায় অসন্তুষ্ট হাই কোর্ট গত ২৯ সেপ্টেম্বর ফের ব্যাখ্যা দিতে বলে রোববার শুনানি ও পরবর্তী আদেশের জন্য রাখে।

বনানী থানার মাদকের মামলায় পরীমনিকে দ্বিতীয় দফায় দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছিলেন ঢাকার মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস। পরে একই মামলায় মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম তৃতীয় দফায় আরও এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

কী কী তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে পরীমনিকে শেষ দুই দফা রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছিল, দুই হাকিমের কাছে সে ব্যাখ্যাই জানতে চেয়েছিল হাই কোর্ট।

জামিন সংক্রান্ত রুল ও রিমান্ডের বৈধতা প্রশ্নে স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারির এক আবেদনের শুনানিতে হাই কোর্টের এই বেঞ্চ গত ২ সেপ্টেম্বর সেই আদেশ দেয়। দুই হাকিমকে ১০ দিনের মধ্যে তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

সেই সাথে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মামলার নথিসহ (কেস ডকেট) আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। পরীমনিকে শেষ দুই দফা রিমান্ডে নেওয়ার বিষয়ে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বলা হয়।

নির্দেশ অনুযায়ী তদন্তকারী কর্মকর্তা গত ১৫ সেপ্টেম্বর মামলার নথি নিয়ে হাজির হন। মার্জনা চেয়ে দুই মহানগর হাকিমের জমা দেওয়া লিখিত ব্যাখ্যাও সেদিন আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

কিন্তু দুই হাকিমের ব্যাখ্যায় উষ্মা প্রকাশ করে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক মোস্তফা জামান ইসলাম সেদিন বলেন, “রিমান্ড নিয়ে হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের যে গাইডলাইন এবং আমাদের প্রচলিত আইন আছে, তারা এগুলোর বিরুদ্ধে। যে কারণে আমরা তাদের জবাবে আমরা সন্তুষ্ট নই। যে কারণে পরবর্তী আদেশের জন্য ২৯ সেপ্টেম্বর তারিখ রাখলাম।”

পরে ২৯ সেপ্টেম্বর দুই মহানগর হাকিমের আইনজীবী আব্দুল আলিম মিয়া জুয়েল আদালতকে বলেন, “আপনারা গত ২ সেপ্টেম্বর আমাদের কাছে ব্যাখ্যা তলব করেছিলেন। আমরা সেই ব্যাখ্যা রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে আপনাদের কাছে দাখিল করেছি। আপনার হস্তগত হয়েছে। কি কারণে দিয়েছি সে কারণগুলো বলেছি।”

এ সময় তাকে থামিয়ে দিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন আদালতকে বলেন, “দুজনই আমার কাছে এসেছিলেন, দুজনই ইয়াং অফিসার। দুজনই অনুতপ্ত, দুঃখিত। ট্রেনিংয়ের অভাবে প্রপারলি রিপ্লাইটা (ব্যাখ্যা) লেখা হয় নাই। উনারা ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন আপনাদের কাছে।”

বিচারক মোস্তফা জামান ইসলাম তখন বলেছিলেন, “ঠিক আছে, আরেকটা রিপ্লাই দিক। আমরা সময় দিই। আগামী ২৪ অক্টোবর পরবর্তী আদেশের জন্য রাখছি।”

আইন সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী জেডআই খান পান্না তখন বলেছলেন, “হ্যাঁ, আরেকটা রিপ্লাই দিক। কারণ সুপ্রিম কোর্টের আদেশ-নির্দেশনা (রিমান্ড নিয়ে) আছে। সেটা মানতে হবে।”

এরপর আদালত রোববার পরবর্তী আদশের জন্য রেখে এই সময়ের মধ্যে দুই হাকিমকে ফের ব্যাখ্যা দিতে বলে।