সাম্প্রদায়িক হামলাকারীদের শাস্তিসহ ৭ দাবি শাহবাগ থেকে

দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলায় জড়িদের গ্রেপ্তার করে ‘সবোর্চ্চ শাস্তি’ এবং হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ সাত দফা দাবি এসেছে ঢাকার শাহবাগের এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Oct 2021, 07:53 AM
Updated : 18 Oct 2021, 09:53 AM

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ইসকন স্বামীবাগ আশ্রমের ভক্তদের এই কর্মসূচি থেকে এসব দাবি পূরণের জন্য সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে সোমবার  সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগে মোড় অবরোধ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলসহ বিভিন্ন  হলের কয়েকশ শিক্ষার্থী এবং ইসকন স্বামীবাগ আশ্রমের ভক্তরা।

 টানা তিন ঘণ্টা শাহবাগ মোড়  অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানোর পর বেলা সোয়া ২টার দিকে সাত দফা দাবি ঘোষণা করে তারা শাহবাগ ত্যাগ করেন।

 তাদের অবরোধে  শাহবাগ দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় পল্টন, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, বাংলা মোটর ও টিএসসিমুখী সড়কে তীব্র যানজট তৈরি হয়। বিক্ষোভকারীরা  শাহবাগ মোড় ত্যাগ করলে ধীরে ধীরে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হতে থাকে।

কর্মসূচিতে সাত দফা দাবি ঘোষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ছাত্র সংসদের সাবেক সাহিত্য সম্পাদক ও আন্দোলনের সমন্বয়ক জয়দীপ দত্ত।

 দাবিগুলো হল- সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার মন্দিরগুলোর সংস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে,  রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ড ও লুটপাটের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, জাতীয় সংসদে আইন করে মন্দির ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে হবে, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও কমিশন গঠন করতে হব,  হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের আধুনিকায়ন করে ফাউন্ডেশনে উন্নীত করতে হবে,  জাতীয় বাজেটে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য ১৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখতে হবে।

জয়দীপ দত্ত বলেন, “আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ দাবিগুলো যদি মেনে নেওয়া না হয়, অথবা সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ না করেন, তাহলে আগামীকাল বিকেলে আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব। এই কর্মসূচি আরও কঠোর হবে।”

দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের একটি মন্দিরে কথিত ‘কোরআন অবমাননার’ অভিযোগ তুলে কয়েকটি মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়।

এরপর চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনীসহ কয়েকটি জেলায় মন্দিরে হামলা হয়, তাতে নিহত হয় অন্তত ছয়জন।

এ পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। কিন্তু তারপরও রোববার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জের মাঝিপাড়া জেলেপল্লীতে এক তরুণের বিরুদ্ধে ‘ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগ তুলে হিন্দুদের ২৯টি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।