বায়ু বিদ্যুৎ ‍উৎপাদনে ইউরোপের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ

গভীর সমুদ্রে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Oct 2021, 04:04 PM
Updated : 17 Oct 2021, 04:04 PM

রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইইউভূক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

মন্ত্রী বলেন, “আমরা উইন্ড ইলেকট্রিসিটির কথা বলেছি। আমরা বলেছি যে, কারণ আমাদের ভূখণ্ডে এটা অত সহজ না, অফশোরে সম্ভব।

“আমরা বলেছি যে, তোমরা আমাদের কারিগরি সহযোগিতা দিতে পার, আর্থিক সহযোগিতা দিতে পার। এমনকি প্রাইভেট সেক্টরও আমাদেরকে এসে সাহায্য করতে পারে।”

জাতিসংঘের ২৬তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনকে (কপ২৬) সামনে রেখে ঢাকায় ইইউভূক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সাথে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে ছিলেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন।

পরে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি আরও বাড়াতে চাই। সম্প্রতি আমরা সাতটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাদ দিয়ে দিয়েছি, আপনি বিশ্বাস করতে পারেন।

”আরও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেষ্টা করছি, এগুলো অপারেশনে গেলে ২৪০০ মেগাওয়াট আমরা পাব। আমরা হাইড্রলিক পাওয়ার জন্য চেষ্টা করতেছি, ভারত ও নেপালকে সাথে নিয়ে। আমরা সেখানে বিনিয়োগ করতেছি।”

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, “আমরা ৪৫% নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে নিয়ে যাব। এখন ৩-৪% এ আছি। বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি।”

বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে বসার মূল কারণ আমরা চাই তাদের সহযোগিতা, তাদের পার্টনারশিপ। যাতে আমাদের যে ইস্যুগুলো কপ২৬ এ আমরা রেইজ করব, তারা যেন আমাদের একাত্ম হয়ে আমাদের স্বপক্ষে কথা বলে।”

তিনি বলেন, “আমরা খুব জলবায়ুর ঝুঁকিতে থাকা দেশ। আমরা যদিও বড় কার্বন নিঃসরণকারী নই, তবুও এর কারণে, নদী ভাংগনের কারণে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে আমাদের ১৯টি উপকূলীয় জেলার ১২টি খুব ঝুঁকির মধ্যে।

”এর ফলে বহু লোক বাড়িঘর, প্রথাগত কাজ হারাচ্ছে। এজন্য বিভিন্ন দেশকে এগিয়ে আসতে হবে। কপ২৬ আমাদের আশা। ওটাতে যদি আমরা কার্যকর পদক্ষেপ নিই, তাহলে আমাদের এই সকল সমস্যা দূর হবে।“

বৈঠকের আলোচনার তুলে ধরে তিনি বলেন, “বলেছি, তোমাদের এনডিসিগুলো (ন্যাশনালি ডিটারমিন্ড কনট্রিবিউশনস) এমনভাবে তৈরি করবে, যাতে বৈশ্বিক উষ্ণতা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের বেশি না হয়।

”আমরা তাদেরকে বলেছি, আমাদের অ্যাডাপটেশন-মিটিগেশনের যে সমস্যাগুলো, তোমরা আমাদের কাছে অংগীকার করেছো সেগুলো বাস্তবায়ন করো।”

তিনি বলেন, “তোমরা অংগীকার করেছিলে ২০২০ সালের পর প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার করে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফান্ডে টাকা দেবে। তোমরা দাও নাই। এবার তোমরা যেন নিয়ে আসো। ৫০% যেন যায়, অ্যাডাপটেশনে আর ৫০% যায় মিটিগেশনে।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “সিভিএফের সবগুলো দেশ লস অ্যান্ড ড্যামেজের উপর খুব জোর দিয়েছে। আমরা যেহেতু তাদেরকে প্রতিনিধিত্ব করি, আমরা আলোচনায় বসব।

”গুড নিউজ ইজ, এটা এজেন্ডায় আছে। আলোচনা হবে। তবে এটা খুব সহজ কাজ নয়। এটাতে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হবে। কেউ সহজে কমপেনসেশনের কথা বলবে না।”