স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সজাগ থাকার আহ্বান

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের প্রতিহত করতে স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2021, 10:12 AM
Updated : 16 Oct 2021, 11:04 AM

শনিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ সব প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আমি উদাত্ত আহ্বান জানাবো। স্ব স্ব অবস্থান থেকে জনপ্রতিনিধিদের প্রস্তুত থাকতে। অবশ্যই এদের (সাম্প্রদায়িক শক্তি) প্রতিহত করতে হবে। বাংলাদেশ এদের কাছে নতি স্বীকার করবে না।” 

এবারের শারদীয় দুর্গোৎসবের অষ্টমীর দিন বুধবার কুরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে কুমিল্লার কয়েকটি মন্দিরে হামলা হয়, যা থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে।

এরপর গত দুই দিনে চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, মৌলভীবাজার, গাজীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় একই ধরনের ঘটনা ঘটে।

এ পরিস্থিতিতে দুই ডজন জেলায় বিজিবি নামানো হয়, বিভিন্ন স্থানে পূজা মণ্ডপে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

সোনারগাঁও হোটেলের ওই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী তাজুল বলেন, “আমরা স্বাধীনতা চেয়েছিলাম বলে ৩০ লাখ লোকের প্রাণ নিয়েছে। দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জত নিয়েছে। পাকিস্তান রক্ষার জন্য ইয়াহিয়া খান, টিক্কা খানদের সঙ্গে আঁতাত করেছে। হত্যা এবং ধর্ষণ করার সময় তারা বলেছে, ইসলামকে রক্ষা করতে হবে। ইসলামকে রক্ষার জন্য হত্যা করেছে, ধর্ষণ করেছে, বাড়ি-ঘর জ্বালিয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়েছে। তাকে হত্যার পর ক্ষমতায় এসে ২১ বছর পাকিস্তানের ধারা অব্যাহত রেখেছিলো। মানুষের উন্নতির জন্য কিছুই করেনি।”

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে ৫০ বছরের অর্জন উদযাপন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়।

ওই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরও বলেন, “আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, সেটা কোনভাবে প্রতিহত করা সম্ভব নয়। এই কারণে জনগণ তাদের উচ্ছিষ্ট হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে। গুণ্ডা-পাণ্ডা নিয়ে মাঠে নামার অবস্থা নেই। মাঠে নামলে প্রতিহত করার জন্য মানুষ ঐক্যবদ্ধ। এখন আজকে নতুন কৌশল নিয়েছে। যে কৌশল পাকিস্তান আমলে নেওয়া হয়েছিলো। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নিয়েছিল।

“এখন মন্দিরের মধ্যে কোরআন শরিফ রাখছে। সেখানে কোরআন শরিফ কীভাবে যায়? কারা রেখেছে? বসে ভিডিও করছে, আবার পুলিশকে খবর দিচ্ছে। এই ঘটনাগুলো নাটক সৃষ্টি করে জনগণকে উত্তেজিত করে হিন্দুদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করাচ্ছে। কোরআন শরিফ সেখানে রেখেছে। ওরা জানে মুসলিম মানুষ, নিরীহ মানুষ, সরল মনের মানুষ মন্দিরের ওপর ক্ষেপে যাবে। তখন হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা লাগবে। দেশে অশান্তি লাগবে। আওয়ামী সরকার ব্যর্থ হয়েছে এটা প্রচার করবে। পাকিস্তানের মদদপুষ্ট প্রেতাত্মা আবার ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য স্বপ্ন দেখছে। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য আজকে এসব করছে।”

তাজুল বলেন, “সকল বিবেকবান মানুষের কাছে আহ্বান করবো, এরা, যারা জাতিকে চিরতরে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করছে, তাদেরকে অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য যারা কাজ করবে, সম্মিলিতভাবে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হতে পাবে।”

স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশরেন মেয়র আতিকুল ইসলাম, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান।