ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশ বুধবার আসামিদের উপস্থিতিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করে শুনানির এই তারিখ ধার্য করেন।
ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি হবে। মামলার নথিপত্র সেই আদালতে স্থানান্তরের আদেশ হয়েছে বলে দুদকের আদালত পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন।
সোয়া ৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত বছর ৪ আগস্ট দুদকের উপপরিচালক শাহীন আরা মমতাজ এ মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে চলতি বছরের মার্চ মাসে পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন দুদক কর্মকর্তা শাহীন আরা মমতাজ। সেখানে পাঁচ কোটি ৮৪ লাখ ১৮ হাজার ৭১৮ টাকার অবৈধ সম্পদ নিজেদের দখলে রাখার অভিযোগ আনা হয় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলের প্রেসিডেনসিয়াল স্যুট এবং চেয়ারম্যান স্যুটসহ ২৫টি কক্ষে অবস্থান করে খাবার, মদ, স্পা, লন্ড্রি, বারের খরচ বাবদ তিন কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকার বিল নগদে পরিশোধ করেন পাপিয়া। ওয়েস্টিন হোটেলে থাকার সময় তিনি প্রায় ৪০ লাখ টাকার কেনাকাটা করেছেন, যার কোনো বৈধ উৎস তিনি তদন্তের সময় দেখাতে পারেননি।
বিভিন্ন ব্যাংকে পাপিয়া ও তার স্বামীর নামে ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকা জমা আছে উল্লেখ করে মামলায় বলা হয়, দুদকের অনুসন্ধানে এসব অর্থের বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি।
গত বছর ২২ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানকে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ঢাকা ও নরসিংদীতে পাপিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের বিপুল সম্পদের খোঁজ পাওয়ার কথা জানায় র্যাব।
র্যাবের অভিযানে তাদের বাসা থেকে নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং মফিজুর রহমান সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের একটি গাড়ি জব্দ করা হয়, যার দাম ২২ লাখ টাকা।
সে সময় র্যাবের তরফ থেকে বলা হয়, পাপিয়া গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেল ভাড়া নিয়ে ‘অসামাজিক কার্যকলাপ’ চালিয়ে যে আয় করতেন, তা দিয়ে হোটেলে বিল দিতেন কোটি টাকার ওপরে।
সব মিলিয়ে তাদের নামে ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৭১৮ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে উল্লেখ করে দুদকের মামলায় বলা হয়, এসব অর্থ তারা অপরাধজনক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আয় করেছেন।
গ্রেপ্তারের পর পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে জাল নোটের একটি এবং অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা করে র্যাব। এছাড়া মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনে আরেকটি মামলা করে সিআইডি। পরে দুদকও পাপিয়ার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে নামে।
এর মধ্যে অস্ত্র আইনের মামলায় গতবছর ১২ অক্টোবর এই দম্পতির ২০ বছরের কারাদণ্ডের রায় হয়। মাদক উদ্ধার ও জাল টাকার মামলায় ইতোমধ্যে তাদের বিচার শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন