নুরসহ পাঁচজনকে অব্যাহতি, মামুনকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা

ঢাকার কোতোয়ালি থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরসহ পাঁচজনকে অব্যাহতি দিয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে সাইবার ট্রাইবুনাল ।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Oct 2021, 10:46 AM
Updated : 5 Oct 2021, 10:54 AM

এ মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন মঙ্গলবার এই আদেশ দেয়।

নুর ছাড়া অব্যাহতি পাওয়া চারজন হলেন- ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম ও নাজমুল হাসান সোহাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা এবং কর্মী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবদুল্লাহ হিল বাকি।

এই মামলাটি করেছিলেন হাসান আল মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের এক শিক্ষার্থী।

ধর্ষণের মামলায় সহায়তাকারী হিসেবে নুরকেও আসামি করেছিলেন তিনি। সেই বিচার চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশনেও বসেছিলেন।

তার অনশনের প্রতিক্রিয়ায় তাকে আক্রমণ করে গত বছরের ১১ অক্টোবর ফেইসবুক লাইভে এসে বক্তব্য দিয়েছিলেন নুর, তার জবাবে ১৪ অক্টোবর ছয়জনকে আসামি করে মামলাটি করেছিলেন ওই ছাত্রী।

মামলার তদন্ত শেষে পিবিআই কেবল হাসান আল মামুনকে আসামি করে এ মামলার অভিযোগপত্র দেয়। সেখানে এজাহারের বাকি পাঁচ আসামিকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।

আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন খাদেমুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম শামীম।

পিবিআইর প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের তদন্তে নুরসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

যে শব্দটি ব্যবহার নিয়ে নুরের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়েছিল, তা অভিধানে না থাকায় এ মামলা থেকে তিনি রেহাই পেয়েছেন।

পিবিআই পরিদর্শক ফরিদা পারভীনের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, “বাদীকে উদ্দেশ্য করে নুরের মন্তব্য করা ‘দুশ্চরিত্রহীন’ শব্দের বিষয়ে বাংলা একাডেমির মতামত নেওয়া হয়।

“বাংলা একাডেমির অভিমতে বলা হয়, দুশ্চরিত্রহীন বলে কোনো শব্দ বাংলা ভাষায় নেই। তথাপি দুশ্চরিত্রহীন শব্দটির অর্থ করা হলে দাঁড়ায় উন্নত চরিত্রের অধিকারী বা সদাচারী বা সৎ স্বভাব বিশিষ্ট।”

নুর লাইভে বলেছিলেন- “ছিঃ! আমরা ধিক্কার জানাই যে, এত নাটক করছে, যেই দুশ্চরিত্রাহীন!”

দৃশ্যত অভিযোগকারী ছাত্রীর চরিত্র নিয়ে কটূ কথা বলেছিলেন নুর। ‘দুশ্চরিত্র’ বলতে গিয়ে তিনি ‘দুশ্চরিত্রহীন’ বলেছিলেন বলেই সবাই ধরে নিয়েছিল।

লাইভের বক্তব্যের বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রশ্নে নুর যে কথা বলেছিলেন, তাতেও সবার ধরে নেওয়া কথার সমর্থন মেলে।

তিনি বলেছিলেন, “যেই ঘটনার সাথে আমি জড়িত না, সেই ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে যে আমার সম্মানহানি, আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, অবশ্যই তার ব্যক্তিত্ব, তার উদ্দেশ্য ও চরিত্র নিয়ে আমি প্রশ্ন তুলতে পারি।”

পিবিআইর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নুরের ফেইসবুক আইডি ডিজিটাল ফরেনসিক টিমের মাধ্যমে পরীক্ষা করেও মতামত নেওয়া হয়। তাতে বাদীর অভিযোগ অনুযায়ী বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাই নুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫ (১)ক, ২৯(১) ৩১(২) ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রী কোতয়ালি ও লালবাগ থানায় ধর্ষণের অভিযোগে দুটি মামলা করেছিলেন। 

ওই দুই মামলায় নুরের বিষয়ে কোনো অভিযোগ পায়নি উল্লেখ করে প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ।