যে শব্দটি ব্যবহার নিয়ে নুরের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়েছিল, তা অভিধানে না থাকায় এই যাত্রা বেঁচে যাচ্ছেন তিনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক ফরিদা পারভীন রোববার এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।
তাতে নুরের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা না মেলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে বলে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের পেশকার শামীম আল মামুন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আগামী ১৩ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে প্রতিবেদনটির বিষয়ে শুনানি হবে।
নুরের বিরুদ্ধে এই মামলাটি করেছিলেন তার সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী।
ধর্ষণের মামলায় সহায়তাকারী হিসেবে নুরকেও আসামি করেছিলেন তিনি। সেই বিচার চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশনে বসেছিলেন তিনি।
তার অনশনের প্রতিক্রিয়ায় তাকে আক্রমণ করে গত বছরের ১১ অক্টোবর ফেইসবুক লাইভে এসে বক্তব্য দিয়েছিলেন নূর, তার জবাবে ১৪ অক্টোবর মামলাটি করেছিলেন ওই ছাত্রী।
মামলা তদন্ত করে পিবিআইর দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, “বাদীকে উদ্দেশ্য করে নুরের মন্তব্য করা দুশ্চরিত্রহীন শব্দের বিষয়ে বাংলা একাডেমির মতামত নেওয়া হয়।
“বাংলা একাডেমির অভিমতে বলা হয়, দুশ্চরিত্রহীন বলে কোনো শব্দ বাংলা ভাষায় নেই। তথাপি দুশ্চরিত্রহীন শব্দটির অর্থ করা হলে দাঁড়ায় উন্নত চরিত্রের অধিকারী বা সদাচারী বা সৎ স্বভাব বিশিষ্ট।”
নূর লাইভে বলেছিলেন- “ছিঃ! আমরা ধিক্কার জানাই যে, এত নাটক করছে, যেই দুশ্চরিত্রাহীন!”
দৃশ্যত অভিযোগকারী ছাত্রীর চরিত্র নিয়ে কটূ কথা বলেছিলেন নুর। ‘দুশ্চরিত্র’ বলতে গিয়ে তিনি ‘দুশ্চরিত্রহীন’ বলেছিলেন বলেই সবাই ধরে নিয়েছিল।
লাইভের বক্তব্যের বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রশ্নে নুর যে কথা বলেছিলেন, তাতেও সবার ধরে নেওয়া কথার সমর্থন মেলে।
তিনি বলেছিলেন, “যেই ঘটনার সাথে আমি জড়িত না, সেই ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে যে আমার সম্মানহানি, আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, অবশ্যই তার ব্যক্তিত্ব, তার উদ্দেশ্য ও চরিত্র নিয়ে আমি প্রশ্ন তুলতে পারি।”
পিবিআইর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নুরের ফেইসবুক আইডি ডিজিটাল ফরেনসিক টিমের মাধ্যমে পরীক্ষা করেও মতামত নেওয়া হয়। তাতে বাদীর অভিযোগ অনুযায়ী বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাই নুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫ (১)ক, ২৯(১) ৩১(২) ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রী কোতয়ালি ও লালবাগ থানায় ধর্ষণের অভিযোগে দুটি মামলা করেছিলেন।
ওই দুই মামলায় নুরের বিষয়ে কোনো অভিযোগ পায়নি উল্লেখ করে প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ।