ঢাকার মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার মঙ্গলবার এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তার জমা দেওয়া প্রতিবেদনের ওপর শুনানি করে এ আদেশ দেন।
রোববার সিআইডির পরিদর্শক কাজী মোস্তফা কামাল দুটি জব্দ তালিকায় মোট ১৬টি ‘আলামত’ পরীমনিকে ফেরত দেওয়ার সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।
আদালতের শুনানিতে পরীমণির আইনজীবী নিলাঞ্জনা রেফাত সুরভী জানান, গাড়ি, মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য জিনিসপত্র ফেরত দিলে তদন্তে বিঘ্ন ঘটবে না বলে ওই প্রতিবেদনে জানান তদন্ত কর্মকর্তা।
তিনি পরীমনির বাসা থেকে র্যাবের অভিযানে জব্দ করা মালামালগুলোর উল্লেখ করে তার মধ্যে ১৬টি ফেরত দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আদেশ চান।
গাড়ি, আইফোন ও প্রসাধনীর বাক্স জব্দ করায় ‘ভোগান্তিতে’ পড়েছেন জানিয়ে সেসব ফিরে পেতে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার আদালতে আবেদন করেছিলেন জামিনে থাকা পরীমনি।
আদালত তখন মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) থেকে গাড়ির সঠিক মালিকানা যাচাই এবং অন্যান্য জব্দ করা ‘আলামতের’ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়।
পরে এসব মালামালের মালিকানা যাচাই করে বনানী থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার পুলিশের উপপরিদর্শক মো. আলমগীর হোসেনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
শুনানিতে পরীমনির আইনজীবী সুরভি জানান, গাড়িটি ব্র্যাক ব্যাংক এবং পরীমণির যৌথ মালিকানাধীন। গাড়ি ফেরত দিতে আপত্তি নেই জানিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ একটি অনাপত্তিপত্র তদন্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে আদালতে জমা দিয়েছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন- মহানগর আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল, বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন।
তারা আদালতকে বলেন, পরীমনিকে তার জিনিসপত্র ফেরত দেওয়া হলে তাদের কোনো আপত্তি নেই। পরে গাড়ির দামের সমপরিমাণ অর্থের মুচলেকা (বন্ড) দিয়ে ‘আদালত চাহিবামাত্র ফেরত দেওয়ার শর্তে’ গাড়িটি পরীমনিকে ফেরত দেওয়ার আদেশ দেন বিচারক।
গত ৪ অগাস্ট বিকালে বনানীর ১২ নম্বর সড়কে পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করার সময় মালামালগুলো জব্দ করে র্যাব।
সেসময় পরীমনির বাসা থেকে মদ ও মাদক পাওয়ার কথা জানিয়ে তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলাও করা হয়। সেই মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি।
বনানী থানার ওই মামলায় তিন দফা রিমান্ড শেষে গত ১ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান পরীমনি।
নড়াইলের মেয়ে শামসুন্নাহার স্মৃতি পরীমনি নামে ঢাকাই চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশের পর দুই ডজনের মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
গত মে মাসে ঢাকা বোট ক্লাবে তাকে ‘ধর্ষণ চেষ্টার’ অভিযোগ তুলে শোরগোল ফেলে দেন তিনি। তার করা মামলায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন