সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য আবদুল হামিদ এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতির উপ প্রেস সচিব মুন্সী জালাল উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার বিষয়ে প্রতিনিধি দলটি রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করতে যান।
“এসময় রাষ্ট্রপতি বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার অনেক ক্ষতি হয়েছে। এখন পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়াসহ আরও যেভাবে তাদের ক্ষতির যতটা সম্ভব পুষিয়ে দেওয়া যায় সে চেষ্টা করতে হবে। তবে সবকিছুর উপরে থাকতে হবে স্বাস্থ্যবিধি।“
স্বল্প সময়ের মধ্যে সব শিক্ষার্থীর টিকাদান সম্পন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ ও পর্যবেক্ষণের জন্য রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন উপ প্রেস সচিব।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। পরে অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হলেও অধিকাংশ বিভাগ-ইনস্টিটিউ চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে পারেনি।
ফলে শিক্ষার্থীদের একাধিক সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা আটকে আছে। সেশনজট রোধে গত কয়েক মাস ধরে অগ্রাধিকারভিত্তিতে স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত পরীক্ষা নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসায় গত ১২ সেপ্টেম্বর দেশের সব স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এরপর আগামী ৫ অক্টোবর থেকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী টিকার আওতায় এলে শ্রেণিকক্ষের পাঠদান শুরু হবে জানানো হয়েছে। রোববার খুলেছে গ্রন্থাগার।
রাষ্ট্র্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতে উপাচার্য আখতারুজ্জামান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী কমপক্ষে এক ডোজ টিকা পাওয়ার পর সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম চালু হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ধাপে ধাপে ক্লাস কার্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দলটি সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আগামী ১ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় বর্ণাঢ্য আয়োজনের প্রস্তুতির বিষয়েও রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করা হয়।
প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন প্রো উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, প্রো উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম ও সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।