শুক্রবার এক সেমিনারে এই প্রস্তাব বিবেচনা করতে সিটি করপোরেশন মেয়রদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, “হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ান, গ্যাসের দাম বাড়ান, পানির দাম বাড়ান অভিজাত এলাকার জন্য। মানুষ তখন দামি এলাকা থেকে গিয়ে আরেকটু দূরে যাবে।”
নিজের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিতে আসা এলজিআরডিমন্ত্রী তাজুল বলেন, “আপনি গুলশানে বসবাস করেন, কেউ বসবাস করে যাত্রাবাড়িতে, দূরে; পানির দাম যদি গুলশানেও ১৪ টাকা হয়, যাত্রাবাড়িতেও ১৪ টাকা হয়, এটা কি মানুষের জন্য যথাযথ কিছু হল?
”আমি বলি, এটা যেহেতু অভিজাত এলাকা, এটার জন্য দাম বেশি হবে। জোনভিত্তিক ইউটিলিটি চার্জও নির্ধারণ করতে হবে। আপনি এখানে অভিজাত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন, আপনাকে বেশি দিতে হবে।”
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি আয়োজিত ‘ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা: সমস্যা ও প্রতিকার’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
ঢাকা থেকে লোকজনকে সরানোর জন্য রাজধানীর বাইরের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর উপর জোর দেন তিনি।
“ঢাকা শহরের প্রত্যেকটি খালের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে। খালের দুই পাড়ে বাঁধ দিয়ে ওয়াকওয়ে তৈরি করা হবে। একইসঙ্গে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতায় থাকা খালগুলো শিগগির সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।“
ঢাকার ভবনগুলোর উচ্চতার বিষয়ে গেজেট আগামী ডিসেম্বরে প্রকাশ করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে গেজেট করে ফেলব। এর মাধ্যমে আমরা অনেকগুলো সুযোগ-সুবিধা পাব। ইন্টারনাল-এক্সটার্নাল সুযোগ-সুবিধা সব থাকবে।”
বঙ্গবন্ধুর খুনি, স্বাধীনতা বিরোধীদের কবর জাতীয় সংসদ চত্বরে থাকতে পারে না বলেও সেমিনারে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। বাংলার মানুষ মুক্তি পেয়েছে। তার কবর থাকবে টুঙ্গিপাড়ায় আর পাকিস্তানীদের দোসর যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, ত্রিশ লক্ষ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম নষ্ট করেছে, তাদের কবর জাতীয় সংসদসহ গৌরবোজ্জ্বল জায়গায় থাকতে পারে না।”
সেমিনারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, যেসব ভবনে রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে, সেসব ভবন মালিকদেরকে বিশেষ হোল্ডিং কর রেয়াত দেওয়া হবে।
”কল্যাণপুর জলাধারের জন্য নির্ধারিত ১৭৩ একর জমির মধ্যে মাত্র ৩ একর জলাধার রয়েছে আর বাকি ১৭০ একরই অবৈধ দখলদারদের দখলে রয়েছে, যা খুবই দুঃখজনক।”
অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, মাস্তানি করে খাল দখলের দিন শেষ, বিনা নোটিশে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।
”জনগণের সহায়তায় খাল উদ্ধার ও পরিষ্কার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। প্রতিটি খালের দুই পাড়ের সীমানা নির্ধারণ করে তা যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুরের সভাপতিত্বে সেমিনারে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েট এর অধ্যাপক মফিজুর রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বক্তব্য দেন।