বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন নতুন এ তারিখ ঠিক করে দেন বলে বাদী পক্ষের আইনজীবী জীবনানন্দ চন্দ জয়ন্ত জানিয়েছেন।
গত ১১ অগাস্ট ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আবু বকর ছিদ্দিকী মামলা দুটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
চ্যানেল আই সম্প্রচারিত ‘ঘটনা সত্য’ নাটক এবং ‘টু দ্য পয়েন্ট’ নামে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে ‘নেতিবাচক, ভ্রান্ত ও ক্ষতিকর’ ধারণা ও শব্দ ব্যবহারের অভিযোগে বশির আল হোসাইন নামে একজন প্রতিবন্ধী অধিকার কর্মী আদালতে এই দুটি আলাদা মামলা করেন।
‘ঘটনা সত্য’ নাটক নিয়ে মামলায় আসামি করা হয়েছে চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, চিত্রনাট্যকার মঈনুল সানু, পরিচালক রুবেল হাসান, অভিনেতা আফরান নিশো, অভিনেত্রী মেহজাবিন চৌধুরীকে।
নাটকটি চ্যানেল আইয়ের ঈদুল আজহার আয়োজনে ২৩ জুলাই প্রচার করা হয়েছিল। পরে প্রযোজনা সংস্থা সেন্ট্রাল মিউজিক অ্যান্ড ভিডিওর (সিএমভি) ইউটিউব চ্যানেলে তা প্রকাশ করা হয়।
কিন্তু বিশেষ শিশুদের নিয়ে ‘অবৈজ্ঞানিক বার্তা’ প্রচারের অভিযোগ ওঠার পর তুমুল বিতর্কের মধ্যে নাটকটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে, ‘ঘটনা সত্য’ নাটকে দেখানো সংলাপে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও তাদের বাবা মা ও পরিবারকে ‘ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে’।
চ্যানেল আইয়ের আলোচনা অনুষ্ঠান ‘টু দ্য পয়েন্ট’ এর ১১ জুলাইয়ের পর্ব নিয়ে অপর মামলাটিতে একজন আলোচকের কথায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে ‘নেতিবাচক ধারণা’র প্রকাশ ঘটেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এ মামলায় আসামি করা হয়েছে- ফরিদুর রেজা সাগর, শাইখ সিরাজ, অনুষ্ঠান পরিকল্পনাকারী জাহিদ নেওয়াজ খান, প্রযোজক রাজু আলিম, উপস্থাপক সোমা ইমলাম এবং আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকা ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে।
মামলায় বাদীর অভিযোগ ‘টু দ্য পয়েন্ট’ অনুষ্ঠানে আর্জেন্টিনা বনাম ব্রাজিলের খেলা প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের একটি মন্তব্য নিয়ে।
মামলার আর্জিতে বলা হয়, “ওই টকশোতে সুমন বলেন, ‘আমার নিজের ছেলেটারে প্রতিবন্ধী বানাইয়া রাইখা আমি এখন আর্জেন্টিনার ছেলে এবং ব্রাজিলের ছেলে নিয়া লাফাচ্ছি।… লাফানো ঠিক আছে। আমরা অনেক ছোটবেলা থেকে ম্যারাডোনার ভক্ত, কিন্তু নিজের ছেলেটারে এভাবে প্রতিবন্ধী বানাব?”
দেশের ফুটবল খেলার মানের অবনতি, দুর্বল ব্যবস্থাপনা, ব্যর্থতা ও অবস্থার সঙ্গে তুলনা করে ‘প্রতিবন্ধী বানাইয়া রাইখা’ এবং ‘এভাবে প্রতিবন্ধী বানাব’ শব্দবন্ধ ব্যবহারের মাধ্যমে গণমাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে ‘নেতিবাচক, ভ্রান্ত ও ক্ষতিকর’ ধারণা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।
বাদী আর্জিতে বলেছেন, এ ধরনের নেতিবাচক শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনের ‘স্পষ্ট লঙ্ঘন’ হয়েছে।
মামলা দুটির বাদী বশির আল হোসাইন, সকল সাক্ষী এবং আইনজীবী মোহাম্মদ রেজাউল করিম সিদ্দিকী সকলেই প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বলেও বাদীপক্ষের অন্যতম আইনজীবী জীবনান্দ চন্দ জয়ন্ত জানান।
আরও পড়ুন