শাল্লার ঝুমন দাশ জামিন পাবেন?  বৃহস্পতিবার আদেশ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার সুনামগঞ্জের শাল্লার ঝুমন দাশের জামিন মিলবে কিনা, জানা যাবে বৃহস্পতিবার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2021, 08:49 AM
Updated : 21 Sept 2021, 08:49 AM

মঙ্গলবার তার জামিন শুনানির পর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ বিষয়টি বৃহস্পতিবার আদেশের জন্য রেখেছে।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না। সঙ্গে ছিলেন নাহিদ সুলাতানা যুথি ও মো. আশরাফ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান।

হেফাজত নেতা মামুনুল হককে নিয়ে ফেইসবুকে ‘আপত্তিকর পোস্ট’ দেওয়ার অভিযোগ তুলে গত ১৭ মার্চ শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। সে সময় গ্রামের বাড়িঘর ও মন্দির ভাঙচুর করা হয়। হিন্দুদের অন্তত ৯০টি বাড়িতে হামলা হয় সেদিন।

পরে ওই ফেইসবুক পোস্টের জন্য  ঝুমন দাশের বিরুদ্ধে শাল্লা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। সেই মামলায় এখনও কারাগারে বন্দি এ যুবক।

সুনামগঞ্জের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে জামিন না হওয়ায় ঝুমনের আইনজীবীরা জজ আদালতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানেও জামিন আবেদন নাকচ হয়ে গেলে গত ২২ অগাস্ট হাই কোর্টে জামিন আবেদন করা হয়। 

আইনজীবী জেড আই খান পান্না বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা কোনো মামলাই হতে পারে না। মামলা যাদের বিরুদ্ধে হওয়ার কথা তাদের বিরুদ্ধে না হয়ে মামলা করা হয়েছে ঝুমন দাশের বিরুদ্ধে। ঝুমন দাশের মা যাও একটা মামলা করেছে, সেই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করার পর জামিনে ছাড়া পেয়ে গেছে।”

জেড আই খান পান্না বলেন, “একটা মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। মামুনুল হকের কর্মকাণ্ড, বক্তব্য নিয়ে সরকারও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। অনেক মন্ত্রী এমপি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মামুনুল হকদের কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। ঝুমন দাশ বলেছিলেন, মামুনুল হকরা যা করছে তা পাকিস্তানি অ্যাক্টিভিটি। এ কথা সরকারও বলেছে। তাহলে ঝুমন দাশের বিরুদ্ধে মামলা কেন?”

ঝুমন দাশের গ্রেপ্তার এবং আদালতে হাজির করার ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও হাই কোর্টের শুনানিতে প্রশ্ন তোলেন সুপ্রিম কোর্টের এ আইনজীবী।

পরে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনার তারিখ হচ্ছে ১৬ মার্চ। জব্দ তালিকা অনুযায়ী ঝুমন দাশের মোবাইল জব্দ করার তারিখ বলা হয়েছে ১৬ মার্চ, অর্থাৎ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওইদিনই। কিন্তু পুলিশ মামলা করেছে ২২ মার্চ। আর আদালতে হাজির করা হয়েছে ২৩ মার্চ।

“আসামিকে গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার কথা। প্রশ্ন হল এতদিন তাহলে ঝুমন দাশ কোথায় ছিলেন? এ বিষয়গুলো আজ আমরা শুনানিতে তুলে ধরেছি। আদলত বৃহস্পতিবার আদেশের জন্য রেখেছেন।” 

মার্চের ঘটনার পর থেকেই বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ঝুমন দাশের মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছে।

গত ৮ সেপ্টেম্বর ঝুমন দাশের মুক্তির জন্য সারাদেশে সাংস্কৃতিক কর্মসূচি পালন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।