দণ্ডিতের সাজা নির্ধারণে নীতিমালা নিয়ে হাই কোর্টের রুল

দণ্ডিত ব্যক্তির অপরাধের সাজা নির্ধারণে দেশে ‘অভিন্ন ও সামঞ্জসপূর্ণ’ নীতিমালা প্রণয়ন প্রশ্নে রুল দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Sept 2021, 01:21 PM
Updated : 19 Sept 2021, 01:21 PM

‘সেনটেনসিং গাইডলাইন’ প্রণয়নের নির্দেশনা চাওয়ার রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর এ রুল দিয়েছে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মেস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশ অনুযায়ী দেশে ‘অভিন্ন ও সামঞ্জস্যপূর্ণ’ একটি ‘সেনটেনসিং গাইডলাইন’ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, আইন কমিশনের চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির গত বৃহস্পতিবার রিট আবেদনটি করেন। আদা্লতে শুনানি তিনিই করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

শিশির মনির বিডিনিউজ টোয়ন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যাবজ্জীবন মানে ‘আমৃত্যু কারাবাস নয়’, ৩০ বছরের কারাদণ্ড নির্ধারণ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত বছর ১ ডিসেম্বর রায় দিয়েছিল।

‘আতাউর রহমান মৃধা বনাম বাংলাদেশ’ মামলায় এই রায়ের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “আসামির পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ হওয়া এ রায়ের পর্যবেক্ষণে সেনটেনসিং গাইডলাইনের প্রয়েজনীয়তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যে কারণে এ রিট আবেদনটি করা হয়েছে। আদালত রুল দিয়েছেন।”

এ আইনজীবী বলেন, দণ্ডবিধি বা আইনে বেশিরভাগ অপরাধেরই সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সাজার কথা বলা আছে। এখন কোনো কোনো একটি অপরাধের ক্ষেত্রে যদি বলা থাকে সর্বোচ্চ সাজা ১৫ বছরের কারাদণ্ড, সর্বনিম্ন ৫ বছরের কারাদণ্ড, তাহলে বিচারক বিবেচনা করে হয় সর্বোচ্চ সাজা দেন, নয় সর্বনিম্ন বা মাঝামাঝি কিছু একটা দেন।

“এখন ঘটনাক্রমে কোনো একটা অপরাধ করেছেন এমন ব্যক্তির সাজা নিশ্চয়ই অভ্যাসগতভাবে অপরাধী, এমন একজন ব্যক্তির সাজার সমান হওয়া উচিত না। এ কারণেই রিট আবেদনটি করা হয়েছে।”   

যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডার উদাহরণ তুলে ধরে রিট আবেদনে শিশির মনির বলেন, “আমি দেখিয়েছি, আদালত শুধু দণ্ড ঘোষণা করেন। কিন্তু সাজা ঘোষণা করা হয় ওই নীতিমালা বা নির্দেশিকা মেনে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত সেনটেনসিং গাইডলাইন করার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে।”     

রিট আবেদনে বলা হয়, ‘সেনটেনসিং গাইডলাইন’র অনুপস্থিতি বা না থাকার কারণে বিচারকের বিবেচনার ভিত্তিতে ঘোষিত সাজার ক্ষেত্রে অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয়; যা সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।