জলবায়ু ঝুঁকি: ধনী দেশগুলোর আরও অংশীদারিত্ব চান প্রধানমন্ত্রী

আগামী প্রজন্মের জন্য টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সব অংশীজনের সঙ্গে কাজ করতে প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2021, 05:19 PM
Updated : 17 Sept 2021, 05:33 PM

শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘মেজর ইকোনমিস ফোরাম অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লাইমেট’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে ধারণ করা ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এই কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আহ্বানে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী আগামী নভেম্বরে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিতব্য কপ২৬ সম্মেলনে প্রধান অর্থনীতিরগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার জন্যও আহ্বান জানান। তার প্রত্যাশা ওই সম্মেলন থেকে দৃঢ় ও তাৎপর্যপূর্ণ ফলাফল পাওয়া যাবে।

তিনি সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণ কমানো, জলবায়ু তহবিলে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ, প্রযুক্তি হস্তান্তরসহ ছয় দফা প্রস্তাব শুক্রবারের ফোরামে বিবেচনার জন্য রাখেন।

প্রথম দফায় প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি (প্রাক শিল্পায়ন যুগের তুলনায়) দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখতে শিল্পোন্নত দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

দ্বিতীয় দফায় তিনি বলেন, জলবায়ু তহবিলের জন্য উন্নত দেশগুলোর বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলারের অঙ্গীকার পূরণ করতে হবে এবং অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে ৫০:৫০ অনুপাতের বিতরণ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী তার তৃতীয় প্রস্তাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রযুক্তি হস্তান্তরের পাশাপাশি সবচেয়ে কার্যকর জ্বালানি সমাধান নিয়ে এগিয়ে আসতে উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

চতুর্থ প্রস্তাবে তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে উত্তরণের ক্ষেত্রে, জাতি-রাষ্ট্রগুলোর সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন অগ্রাধিকারগুলো হিসেবে নেওয়া এবং তাদের কতটা লোকসান ও ক্ষতি হয়েছে সেগুলো বিবেচনা করা উচিত।

পঞ্চম প্রস্তাবে তিনি বলেছেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ও লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদীর ভাঙন, বন্যা ও খরার কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষের পুর্নবার্সনের দায়িত্ব সব দেশের ভাগ করে নেওয়া দরকার।

শেখা হাসিনা সবশেষ প্রস্তাবে বলেন, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোকে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী সব অংশীজনদের সঙ্গে কাজ করতে হবে।

এসব প্রস্তাব তুলে ধরার সময় বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ও লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদী ভাঙন, বন্যা ও খরার প্রভাব ছাড়াও ১১ লাখ রোহিঙ্গা জোরপূর্বক মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়ার কারণে বাংলাদেশ গুরুতর জলবায়ু প্রভাবের মুখোমুখি হচ্ছে।

জলবায়ু ঝুঁকি ফোরাম (সিভিএফ) ও ভি-২০ এর সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য হচ্ছে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর স্বার্থ তুলে ধরা।

ঢাকায় ‘গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপ্টেশনের’ দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমেও বাংলাদেশ তার সেরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। 

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে, যা জলবায়ু ঝুঁকি থেকে জলবায়ু সহিষ্ণুতা এবং তা থেকে জলবায়ু সমৃদ্ধি পর্যন্ত একটি কার্যক্রম চালাবে ।