জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে দুই সপ্তাহের সফরে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2021, 04:23 AM
Updated : 17 Sept 2021, 06:36 AM

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গতবছর এই বিশ্ব সভা বসেছিল ভার্চুয়ালি। এ বছর সশরীরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে মিলিত হচ্ছেন বিশ্ব নেতারা।

প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এ বি এম সরওয়ার-ই-আলম সরকার জানান, শুক্রবার সকাল ৯টা ২৩ মিনিটে বিমানের একটি ভিভিআইপি চাটার্ড ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী হেলসিংকির উদ্দেশে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। হেলসিংকি হয়ে রোববার তার নিউ ইয়র্কে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

মহামারীর মধ্যে ১৯ মাস পর এটাই তার প্রথম বিদেশ সফর। সর্বশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ইতালি সফরে গিয়েছিলেন।

আগামী ১৯ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে অবস্থানকালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন এবং বেশ কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী। ২৪ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আহবানে ২০ সেপ্টেম্বর জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।

পরে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘ সদরদপ্তরের উত্তরের লনের ইউএন গার্ডেনে একটি গাছ লাগাবেন এবং সেখানে একটি বেঞ্চ উৎসর্গ করবেন জাতির পিতার সম্মানে।

সেদিন প্রধানমন্ত্রী ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশন নেটওয়ার্ক’ শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে দুই সপ্তাহের সফরে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে শুক্রবার সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে উপস্থিত মন্ত্রিসভার সদস্য ও কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে শুভেচ্ছার জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

পরদিন ২১ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ বিতর্কের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেবেন। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আয়োজিত ‘ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল’ শীর্ষক গোলটেবিলেও যোগ দেবেন।

২২ সেপ্টেম্বর ‘ডারবান ডিক্লারেশন অ্যান্ড প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন’ গ্রহণের বিংশতম বার্ষিকী উপলক্ষে সাধারণ পরিষদের একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া তিনি ‘হোয়াইট হাউস বৈশ্বিক কোভিড-১৯ শীর্ষ সম্মেলন: মহামারীর সমাপ্তি এবং আরও ভালো অবস্থা গড়ে তোলা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেবেন।

সেদিন বিকালে শেখ হাসিনা ‘রোহিঙ্গা সঙ্কট: একটি টেকসই সমাধানের জন্য করণীয়’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন। সেখানে তার পূর্বে-রেকর্ড করা বক্তৃতা দেখানো হবে।

২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সুইডিশ মিশন আয়োজিত ‘জাতিসংঘের সাধারণ কর্মসূচি: সমতা ও অন্তর্ভুক্তি অর্জনের পদক্ষেপ’ শীর্ষক লিডারস নেটওয়ার্কের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

জাতিসংঘ মহাসচিবের সভাপতিত্বে সেদিন ‘ফুড সিস্টেমস সামিট অ্যাজ পার্ট অব দ্য ডিকেড অব অ্যাকশন টু অ্যাচিভ দ্য সাসটেইবল ডেভেলপমেন্ট গোল বাই ২০৩০’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভিডিও বক্তব্য দেবেন শেখ হাসিনা।

জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসেন, বার্বাডোজের প্রধানমন্ত্রী মিয়া আমোর মোটলি কিউসি, নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমা, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ এবং ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট এনগুয়েন জুয়ান ফাইকের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর।

এছাড়া জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেলের সঙ্গেও তার সাক্ষাৎ হবে।

জাতিসংঘ অধিবেশন এবং নিউ ইয়র্কে অন্যান্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে ২৫ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসি সফরের কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

৩০ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন তিনি। হেলসিংকিতে যাত্রা বিরতির পর ১ অক্টোবর তিনি দেশে ফিরবেন।