বুধবার সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম- বিএসআরএফ এ সংলাপের আয়োজন করে।
নদীর তীরে গড়ে ওঠা শিল্প প্রতিষ্ঠানকে কিছুটা সময় ও সুযোগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কারণ তারা অনেক বিনিয়োগ করেছে। বাংলাদেশে কেউ কখনও ভাবেইনি- নদীর আবার নিজস্ব জায়গা আছে। এই ভবনাটা তৈরি করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের, দীর্ঘদিন রাষ্ট্র সেটা করেনি।
"আমরা সীমানা পিলার দিয়েছি। দখলকারী জেনে গেছে তার স্থাপনা নদীর সীমানায় পড়েছে। তাকে ম্যাসেজও দেওয়া হয়েছে।"
শিল্প প্রতিষ্ঠানকে প্রণোদনা দেওয়ার সুযোগ নেই উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “কেননা শিল্প গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যেসব নিয়ম মানা দরকার, সেগুলো তারা মানেনি। বরং তারা জরিমানার আওতায় আসার কথা। আমরা তাদের সুযোগ দিয়েছি।
“এই সুযোগের যদি সঠিক মূল্যায়ন না করা হয়, সেজন্য তাদের অনেক কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হতে পারে।“
নদী দখলকারীরা ক্ষমতাশালী এবং উচ্ছেদে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন কিনা- এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা নদী দখল করেন তারা সবাই রাঘব বোয়াল না, সাধারণ মানুষও আছেন। সাধারণ মানুষ জায়গা নেই- একটা ঘর করলো, সে তো জানে না যে নদী দখল হয়ে গেল। এক্ষেত্রে অসাবধানতা কাজ করেছে।
তিনি বলেন, ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দখল উচ্ছেদের কাজ পুরোপুরি বা শতভাগ সম্পন্ন করতে পারিনি। কিছু মামলা-মোকদ্দমা আছে। সেগুলোর ব্যাপারে আমাদের আইনজীবী প্যানেল কাজ করছে। আমরা বলতে পারি এগুলোতে আমরা সফলতা দেখাতে পারব।
নদীর সীমানা পিলার স্থাপন ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ করার ক্ষেত্রে কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি হয়েছে জানিয়ে খালিদ মাহমুদ বলেন, “সেগুলোর বিষয়ে আমরা হেয়ারিং নিচ্ছি। অনেকগুলো বিষয় আমরা সমাধান করেছি।“
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ তৈরি করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটারের মত নতুন ও পুরনো নৌপথ তৈরি করতে পেরেছি।
যমুনা অর্থনৈতিক করিডোর
যমুনা নদীকে সঠিক ব্যবস্থাপনায় আনতে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে পরামর্শ চলছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “যেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘যমুনা অর্থনৈতিক করিডোর’। এটার সমীক্ষার কার্যক্রম শুরু হবে। সমীক্ষায় যদি সফলতা আসে, কাজটি যদি বাস্তবায়ন করতে পারি- তাহলে এখানে লাখ লাখ হেক্টর জমি শুধু সংগ্রহ করতেই পারব না, যমুনার ভাঙনের একটি সমাধান দিতে পারব।
“যে জমি সংগ্রহণ করা হবে সেখানে স্যাটলাইট সিটি গড়ে তোলা হবে। অর্থনৈতিক করিডোর-১ ও অর্থনৈতিক করিডোর-২ এই দুটি ফেইজে কাজটি হবে।“
দীর্ঘমেয়াদী এই পদক্ষেপে বন্যা ও নদী ভাঙনের ক্ষতির হাত থেকে মানুষ রক্ষা পাবে বলে যোগ করেন তিনি। তিনি জানান, তিস্তা নদী নিয়েও একটি কার্যক্রম কার্যক্রম চলছে।
কেনা হচ্ছে তিনটি প্রমোদ তরী
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক মানের তিনটি ক্রুজ ভ্যাসেল সংগ্রহণ করা হচ্ছে, যেগুলোতে হ্যালিপ্যাডসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকবে।
দেশের দ্বিতীয় টানেল হবে যমুনায়
উত্তরাঞ্চলের বালাসীঘাট ফের চালু করা কিংবা সেখানে সেতু করার কোনো চিন্তা সরকারের আছে কি না- জানতে চাইলে খালিদ মাহমুদ বলেন, “বঙ্গবন্ধু সেতুর বিকল্প একটি সেতুর প্রয়োজন আছে।
“দ্বিতীয় একটি টানেলের সমীক্ষা কার্যক্রম চলছে। সেটার যদি সঠিক ফলাফল আসে, তাহলে ভবিষ্যতে সেখানে একটি টানেল নির্মাণ করা হবে। এ ধরনের একটি চিন্তাভাবনার কথা আমরা জেনেছি। এটি বাস্তবায়িত হলে কর্ণফুলীর পর দেশে দ্বিতীয় টানেল হবে যমুনায়।“