বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনার পর তিন সদস্যের উপ-কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির সদস্য মো. হাবিবর রহমানকে আহ্বায়ক করে গঠিত উপ-কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- মনোরঞ্জন শীল গোপাল ও উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কক্সবাজার জেলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের অফিস তৈরির জন্য ১০০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণে অনিয়ম হয়েছে। এটা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদও হয়েছে।
“কমিটি এটা নিয়ে আলোচনা করে উপ-কমিটি গঠন কয়েছে। উপ-কমিটি বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে স্থায়ী কমিটিতে প্রতিবেদন দেবে।”
সংসদীয় কমিটির কার্যপত্র থেকে জানা যায়, কক্সবাজারের ঝিলংজা মৌজায় পিবিআইয়ের এবং সিআইডির জেলা কার্যালয় নির্মাণে ১০০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ভূমি অধিগ্রহণের পর ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণের টাকাও বিতরণ করা হয়।
গত ৫ মে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ডেইলি স্টার। সেই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সংসদীয় কমিটির কার্যপত্রে বলা হয়, ‘২৯ কোটি টাকা ১৫ ভুয়া মালিকের পকেটে’ শিরোনামে ওই প্রতিবেদনের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে, ১০০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের টাকা ১৫ জন ভূয়া মালিককে দেওয়া হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয় সংসদীয় কমিটিকে জানায়, ওই খবর প্রকাশ পাওয়ার পর গত ৬ মে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়। কক্সবাজারের ডিসিকে মন্ত্রণালয় ওই জমির কাগজপত্র দিতে বলে।
তবে এ বিষয়ে দুদকে একটি মামলা থাকায় তার তদন্তের জন্য সকল নথি জব্দ করা হয়। সে কারণে সংশ্লিষ্ট সকল কাগজ না থাকায় পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা বা এ বিষয়ে কোন মতামত মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি দিতে পারেনি।
কার্যপত্রে বলা হয়, মন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি গঠন করার পর কক্সবাজারের ডিসি কার্যালয়ে জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক অনিয়মের বিষয়ে ২৪টি আবেদনের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়। তবে সেখানে অধিগ্রহণ নিয়ে অনিয়মের বিষয়ে উল্লেখ ছিল না।
সংসদীয় কমিটিতে উপস্থিত এক সদস্য বলেন, “মন্ত্রণালয়ের তদন্ত পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
সংসদীয় কমিটির বৈঠক নিয়ে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের যেসব কর্মচারীর চাকরি তিন বছর অতিক্রম করেছে, তাদের দ্রুত বদলির ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে কমিটি।
গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পে প্রকৃত বরাদ্দপ্রাপ্তরা বসবাস করছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করা এবং কৃষিকাজের জন্য জমি লিজ নিয়ে সেগুলো অন্যকাজে ব্যবহার হচ্ছে কি না- তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয় বৈঠকে।
কমিটির সভাপতি মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে এ বৈঠকে কমিটির সদস্য ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, মনোরঞ্জন শীল গোপাল, মো. হাবিবর রহমান, মো. শাহজাহান মিয়া, উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ও মো. আমিনুল ইসলাম অংশ নেন।