হত্যা মামলায় যাবজ্জীবনের আসামি ২৯ বছর পর ধরা

রংপুরের একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া এক আসামি ২৯ বছর পালিয়ে থাকার পর ঢাকার মিরপুরে র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Sept 2021, 09:27 AM
Updated : 6 Sept 2021, 09:27 AM

রোববার রাতে মিরপুর পাইকপাড়া থেকে আবুল কালাম আজাদ নামে ৫৩ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সোমবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৪ অধিনায়ক মোজাম্মেল হক জানান, ১৯৯২ সালে রংপুরের মিঠাপুকুরে মো. ইব্রাহিম ওরফে ইব্রা হত্যা মামলায় আজাদের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করেছিল আদালত।

ওই মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে ২০০১ সাল পর্যন্ত রংপুর বিভাগের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে থাকেন আজাদ। পরিচিতি লোকজনের কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করতে ২০০১ সালে তিনি ঢাকায় চলে আসেন।

র‍্যাব কর্মকর্তা মোজাম্মেল বলেন, “মাদ্রাসায় ফাজিল পাশ আজাদ চাকরি না করে নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করে আসছিলেন। জাতীয় পরিচয়পত্রে তিনি নাম দিয়েছেন আজাদ মিয়া। তবে বাবার নাম ও অন্য পরিচয় ঠিক ছিল।”

১৯৯২ সালের ২৪ জুন রংপুরের মিঠাপুকুর থানার গুটিবাড়ী সরকারপাড়া এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হামলার শিকার হয়ে মারা যান ইব্রাহিম।

বাজার থেকে ফেরার পথে প্রতিপক্ষের কয়েকজন মিলে ধারলো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে গুরুতর জখম করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনায় মিঠাপুকুর থানায় মো. আবুল কালাম আজাদসহ ৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন ইব্রাহিমের ভাই মো. মফিজ উদ্দিন।

সে বছর ডিসেম্বরেই আজাদসহ তিন জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এজাহারে নাম থাকা বাকি ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।

পরে আসামি মো. আবুল কালাম আজাদ, ফারাজ উদ্দিন এবং আবু ওরফে আবু ডাকাতকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক।

আদালতে সাজা ঘোষণার সময় ফারাজ উদ্দিন কারাগারে ছিলেন। আবু ডাকাতকে পুলিশ পরে গ্রেপ্তার করলেও আবুল কালাম আজাদ পলাতকই থেকে যান।

র‍্যাব কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, “বাকি দুই আসামি সাজা খেটে বেরিয়ে বর্তমানে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন, আর আজাদ ধরা পড়ল ঘটনার ২৯ বছর পর।”

জিজ্ঞাসাবাদে আজাদ র‌্যাবকে বলেছেন, তিনি মা-বাবার একমাত্র সন্তান এবং ১৯৯১ সালে ফাজিল পাস করেছেন। ২০১৪ সালে তার বাবা মারা যান। ২০০৭ সালে পরিচয় গোপন করে পাশের বদরগঞ্জ থানা এলাকায় তিনি বিয়ে করলেও তা টেকেনি।

এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাব জানায়, এই মামলার বাদী মো. মফিজ উদ্দিন মারা গেছেন। বাদীর এক ছেলে ছিল, তারও মৃত্যু হয়েছে। বাদীর এক মেয়ে থাকলেও তখন ছোট থাকায় এখন তার ঘটনা তেমন মনে নেই।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১৯৯২ সালে বর্তমান সময়ের মত প্রযুক্তি না থাকায় আবুল কালাম আজাদের ‘আত্মগোপনে’ থাকতে সুবিধা হয়েছে।