তবে ভারতে তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে পাসপোর্ট আইনে মামলা হওয়ায় ফিরিয়ে আনার বিষয়টি কিছুটা বিলম্বিত হতে পারে বলে মনে করছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
ই-অরেঞ্জের মালিকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গত ৩১ অগাস্ট ঢাকার হাকিম আদালতে একটি মামলা করেন এক ভুক্তভোগী। সেখানে আসামির তালিকায় সোহেল রানার নাও ছিল।
আদালত তখন গুলশান থানাকে মামলাটি ‘এফআইআর’ হিসাবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেয়। ২ অক্টোবর থানা ওই আবেদনকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করে তদন্ত শুরু করে।
এরপর শনিবার পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানার ভারত-নেপাল সীমান্তে বিএসএফের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার খবর আসে সে দেশের সংবাদমাধ্যমে। পরে ভারতের পুলিশও তা নিশ্চিত করে।
সোহেল রানাকে এখন দেশে ফিরিয়ে আনার ‘চেষ্টা চলছে’ জানিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে, মানে শুক্রবার প্রথম প্রহরে মামলা নথিভুক্ত করার পর সোহেল রানাকে গ্রেপ্তারের কোনো সুযোগ আমরা পাইনি।
“থানায় নথিভুক্ত হওয়ার আগেই আদালতে আবেদনের খবর কোনোভাবে তার কাছে যায়। এরপর সে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।”
বিজিবির মাধ্যমে বিএসএফের সাথে যোগাযোগ করার কথা জানিয়ে ঢাকার পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, “তারা (বিএসএফ) বলেছে যে চেষ্টা করে দেখবে। বিজিবি থেকে যদি ফরমাল রিকোয়েস্ট পায়, তাহলে সেটা প্লেস করে দেখবে যদি সম্ভব হয়।”
তবে ভারতে সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় তাকে শিগগিরই দেশে ফেরানোর আশা ক্ষীণ হয়ে এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ওই মামলার আসামিকেতো তারা বিচার না করে দেবে না। তারপরেও আমরা ট্রাই করে দেখব।”
এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল ইসলাম বলেন, “সে ওখানে অবৈধ অনুপ্রবেশ করেছে। তবে এটা কোন বিষয় না। মাছ ধরতে অনেকেই সমুদ্রে ঝড়ে পড়ে এদেশে ঢুকে পড়ে, মানবিক কারণে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এটা এরকম না। সে একাধিক দেশ ভ্রমণ করেছে। ভিসা ছাড়া ঢুকে গেছে, এটা যে অপরাধ সে জানে। ফলে অন্য কিছু করা সমস্যা হবে।”
এভাবে না হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কিছু করার চেষ্টা করা যেতে পারে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
সেটা রোববারই হয়ে যেতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, ই অরেঞ্জ নিয়ে আগের মামলাগুলোতে যারা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন, তাদের বাইরে নতুন করে কাউকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়নি।
এ মামলার বাদী ইসতিয়াক হোসেন টিটু অভিযোগ করেছেন, ই-অরেঞ্জের মালিক, কর্মচারীরা বিভিন্ন ধরনের পণ্য সরবরাহ ও বিক্রির নামে নগদ, বিকাশ, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় অর্থ নিলেও পণ্য না দিয়ে তার ৭৬ লাখ ৪১ হাজার ১০২ টাকা আত্মসাত করেছেন।
ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, কোম্পানির চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) আমান উল্লাহসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়।
এই মামলার প্রধান আসামি সোনিয়া, তার স্বামী মাসুকুর এবং সিওও আমানউল্লাহ ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
পরিদর্শক সোহেল রানা ওই কোম্পানির মালিক সোনিয়া মেহজাবিনের ভাই। অভিযোগ আছে, ই-অরেঞ্জ প্রতিষ্ঠানটিতে কাগজে কলমে কোনো মালিকানা বা শেয়ার না থাকলেও শেখ সোহেল রানাই সেটা চালাতেন।