মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এই নারাজি আবেদন দাখিল করে অন্য কেনো সংস্থার মাধ্যমে মামলাটি তদন্তের আবেদন করেছেন তিনি।
নথি পর্যালোচনা শেষে বিচারক বিষয়টি বুধবার আদেশের জন্য রেখেছেন বলে বাদীপক্ষের আইনজীবী মাসুদ সালাউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
শুনানিতে তিনি বলেন, “তদন্তে পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। বিভিন্ন অডিও ভিডিও সারাদেশে ভাইরাল হয়েছে। তদন্তে মুনিয়ার পরিবার ন্যায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাই অন্য কোনো তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে পুনরায় তদন্ত না করা হলে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ন্যায় থেকে বঞ্চিত হবে।”
আলোচিত এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গত ১৯ জুলাই আদালতে ‘ফাইনাল রিপোর্ট’ দাখিল করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সে সময় বলেছিলেন, “মুনিয়ার আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলায় বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তাই চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”
এরপর ৮ অগাস্ট আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হলে পুলিশের দেওয়া প্রতিবেদন এখনই গ্রহণ না করে নারাজি আবেদন জমা দেওয়ার জন্য সময় চেয়ে আবেদন করেন তানিয়ার আইনজীবীরা। তা মঞ্জুর করে আদালত সেদিন চূড়ান্ত প্রতিবেদনের গ্রহণযোগ্যতার শুনানির জন্য ১৭ অগাস্ট দিন ধার্য করেন।
গত ১৯ এপ্রিল রাতে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ২১ বছর বয়সী মোশারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
সেই রাতেই আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে আনভীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন ওই তরুণীর বোন নুসরাত জাহান তানিয়া।
সেখানে বলা হয়, ‘বিয়ের প্রলোভন’ দেখিয়ে সায়েম সোবহান আনভীর সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন মুনিয়ার সঙ্গে। ওই বাসায় তার যাতায়াত ছিল। কিন্তু বিয়ে না করে তিনি উল্টো ‘হুমকি’ দিয়েছিলেন মুনিয়াকে।
অভিযোগের বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কখনো কথা বলেননি বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি। এপ্রিলের শেষ দিকে তার আগাম জামিনের জন্য হাই কোর্টে একটি আবেদন করা হলেও মহামারীর মধ্যে লকডাউনে সে আবেদনের শুনানি তখন আর হয়নি।
মুনিয়া ঢাকার মিরপুর ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি কুমিল্লার মনোহরপুরে; পরিবার সেখানেই থাকেন। মৃত্যুর মাস দুয়েক আগে এক লাখ টাকায় ভাড়া নেওয়া ওই ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন তিনি।
মুনিয়ার মৃতদেহ উদ্ধারের পর সেখান থেকে তার মোবাইলসহ বিভিন্ন ধরনের আলামত উদ্ধার করে পুলিশ, যার মধ্যে ছয়টি ডায়েরি ছিল। সিসিটিভির ভিডিও পরীক্ষা করে মুনিয়ার ফ্ল্যাটে আনভীরের যাতায়াতের ‘প্রমাণ পাওয়ার’ কথাও সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল।
আইনজীবী সরোয়ার হোসেন বলেন, “তদন্ত কতৃপর্ক্ষ সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে তার বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে উল্লেখ করেনি। অটোপসি রিপোর্ট দেখেননি অথবা গুরুত্ব দেননি। তদন্তে কী পাওয়া গেল তা নিয়ে বাদীর সঙ্গে আলাপ আলোচনাও করেননি।”
পুরনো খবর