পরীমনি ও রাজ ফের রিমান্ডে

মাদক মামলায় চার দিনের রিমান্ড শেষে চিত্রনায়িকা পরীমনি ও প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ চারজনকে ফের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2021, 09:09 AM
Updated : 10 August 2021, 09:27 AM

বনানী থানার মাদক আইনের মামলায় পরীমণি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও দুই দিন করে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।

আর প্রযোজক রাজ এবং তার ব্যবস্থাপক সবুজ আলীকে মাদক ও পর্নগ্রাফি আইনের দুই মামলায় মোট ছয়দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত।

তিন মামলায় সিআইডি ও বনানী থানা পুলিশের রিমান্ড আবেদেনের শুনানি করে ঢাকার মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস মঙ্গলবার এই আদেশ দেন।

আগের রিমান্ড শেষে পরীমনি, রাজসহ চারজনকে মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে মালিবাগের সিআইডি কার্যালয় থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়।

বনানী থানায় পরীমনি ও দীপুর বিরুদ্ধে করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় তাদের আরও ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চাওয়া হয় মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডির পক্ষ থেকে। শুনানি শেষে বিচারক দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন৷

একই থানায় মাদক আইনে দায়ের করা আলাদা মামলায় রাজ ও সবুজকেও নতুন করে ৫ দিনের রিমান্ডে চেয়েছিল সিআইডি। এছাড়া বনানী থানা পুলিশের পক্ষ থেকে পর্নগ্রাফি আইনের মামলায় তাদের ১০ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল।  

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি আব্দুল্লাহ আবু রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ঢাকা বারের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক সিকদার আক্তারুজ্জামান হিমেল রিমান্ডের বিরোধিতা করেন।

শুনানি শেষে বিচারক মাদক মামলায় দুই দিন এবং পর্নগ্রাফির মামলায় চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

নড়াইলের মেয়ে শামসুন্নাহার স্মৃতি ঢাকার চলচ্চিত্রে পরীমনি নামে অভিষিক্ত হন ২০১৫ সালে। সম্প্রতি এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ তুলে তুমুল আলোচনার জন্ম দেন তিনি।

আর রাজ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার। প্রযোজকদের সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক ও পরিবেশক সমিতির সদস্য রাজ অভিনয়ও করেন।

‘ডিজে পার্টি’ আয়োজনের আড়ালে অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৩ অগাস্ট ঢাকায় শরিফুল হাসান (মিশু হাসান) ও মাসুদুল ইসলাম ওরফে জিসান নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার পরদিন র‌্যাব যায় পরীমনির বনানীর বাসায়।

কয়েক ঘণ্টা অভিযান শেষে পরীমনি এবং তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুকে আটক করে নিয়ে যায় র‌্যাব। এরপর অভিযান চলে বনানীতে চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের বাড়িতে। সেখান থেকে রাজ এবং তার ব্যবস্থাপক সবুজ আলীকে র‌্যাব আটক করে।

৫ অগাস্ট উত্তরায় র‌্যাব সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, পরীমনি ও রাজের বাড়িতে ‘মদ ও মাদকদ্রব্য’ পেয়েছেন তারা। পরীমনির একটি মদের লাইসেন্স পাওয়া গেলেও তার মেয়াদ ছিল না। এছাড়া রাজকে গ্রেপ্তারের সময় কম্পিউটারে 'পার্ন কনটেন্ট' পাওয়া গেছে।

মিশু ও জিসানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই পরীমনি ও রাজের বাড়িতে অভিযান চালানো হয় বলে কমান্ডার আল মঈন সেদিন জানান।

এরপর চারজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়, বনানী থানায় দায়ের করা হয় মাদক আইনে দুটি মামলা। এছাড়া রাজ ও সজুজের বিরুদ্ধে পর্নগ্রাফি আইনে আরেকটি মামলা করা হয়।

র‌্যাবের করা জব্দ তালিকায় পরীমনির বাসা থেকে ‘বিপুল পরিমাণ মদ এবং আইস ও এলএসডির মতো মাদকদ্রব্য’ উদ্ধারের কথা বলা হয়। আর রাজের ফ্ল্যাট থেকে মদ ও ইয়াবার সঙ্গে ‘সেক্স টয়’ এবং একটি সাউন্ড বক্স জব্দ করার কথা বলা হয়।

৫ অগাস্ট সন্ধ্যায় চারজনকে আদালতে তোলা হলে মাদক আইনের দুই মামলায় চারজনকে চার দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন ঢাকার মহানগর হাকিম মো. মামুনুর রশিদ।

পরে মাদক আইনের দুই মামলার তদন্তভার সিআইডির হাতে যায়। তবে পর্নগ্রাফি আইনের মামলা এখনও বনানী থানা পুলিশই তদন্ত করছে।

পুরনো খবর