বাল্যবিয়ে: কিশোর-কিশোরীর মুক্তি চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন

বাল্য বিয়ের অভিযোগে নেত্রকোণার আটপাড়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে দণ্ড দেওয়া দুই শিশুর তাৎক্ষণিক মুক্তির আদেশ চেয়ে হাই কোর্টের কাছে আবেদন করেছেন এক আইনজীবী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 August 2021, 08:49 AM
Updated : 4 August 2021, 10:18 AM

বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের একক ভার্চুয়াল বেঞ্চে চিঠি আকারে ওই আবেদন পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

চিঠিটি আবেদন হিসেবে গণ্য করে তিনি দুই শিশুর তাৎক্ষণিক মুক্তি অথবা উপযুক্ত আদেশের আরজি জানিয়েছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ আইনজীবী বলেন, “আজকের প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি খবর নজরে এলে সে খবর ও আইন-নীতিমালা যুক্ত করে চিঠিটি পাঠিয়েছি। আশা করি মাননীয় বিচারপতি এটি আবেদন হিসেবে গণ্য করে কাল এর শুনানি করবেন।”

বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ‘২০১৭-এর ৭ (২) ধারায় শর্ত আরোপ করে বলা হয়েছে, অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাল্যবিয়ে করলে তাদের শাস্তি দেওয়া যাবে না। বিচার বা শাস্তির ক্ষেত্রে ২০১৩ সালের শিশু আইন প্রযোজ্য হবে।

‘রাষ্ট্র বনাম আইন মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য’ মামলার সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে আবেদনে বলা হয়েছে, শিশু আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের এখতিয়ার নাই। ফলে গত রোববার নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়া ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনের ৭(২) ধারায় দুই শিশুকে যে আটকাদেশ দিয়েছেন, তা ‘এখতয়িারবহির্ভূত’ বলে আবেদনকারী আইনজীবীর ভাষ্য।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, জেএসসির নিবন্ধন কার্ড অনুযায়ী শিশু দুটির বয়স ১৫ বছর। অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে প্রায় দুই বছর ধরে তারা লেখাপড়ার পাশাপাশি ঢাকায় তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি করছিল। সে সময় দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্প্রতি মেয়টি বিয়ে করার জন্য ছেলেটিকে চাপ দেয়। কিন্তু ছেলেটি তা প্রত্যাখ্যান করে। গত কোরবানির ঈদে তারা গ্রামের বাড়িতে যায়। মেয়েটি বিয়ের দাবিতে গত সপ্তাহের বুধবার রাত থেকে ছেলের বাড়িতে অবস্থান নেয়।

এরপর গত রোববার ছেলেমেয়ের পরিবার তাদের বিয়ের আয়োজন করে। বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়া সেখানে পুলিশ পাঠান। এরপর দুজনকে তার কার্যালয়ে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে এক মাসের আটকাদেশ দেন বলে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।   

সেখানে বলা হয়, খবরটি গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ওই কিশোর কিশোরী নেত্রকোণা জেলা কারাগারে ছিল।