হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে গুলশানে আরেকটি মামলা

র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় আরেকটি মামলার পর মিরপুরের পল্লবী থানায় তৃতীয় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2021, 04:36 PM
Updated : 30 July 2021, 06:21 PM

শুক্রবার এর আগে গুলশান থানায় দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় আওয়ামী লীগ থেকে পদ হারানো এই ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদে তিন দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।

গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম শুক্রবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন এবং টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো একত্রিত রেখে দ্বিতীয় মামলা করা হয় হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে।”

এই মামলাতেও রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

এছাড়া হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় আরেকটি মামলা করার প্রস্ততির কথা জানান র‌্যাব এর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আল মইন।

শুক্রবার রাতে তিনি জানান, মীরপুরে এই ব্যবসায়ীর মালিকাধীন ‘জয়যাত্রা’ প্রতিষ্ঠানে যেসব সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলোর ভিত্তিতে পল্লবী থানায় মামলা করা হবে।

তিনি বলেন, “এই মামলা হবে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে।”

‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামের একটি ‘ভূইফোঁড়’ সংগঠনে হেলেনা জাহাঙ্গীরের সভাপতি হওয়ার খবর চাউর হলে সম্প্রতি তাকে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য পদ থেকে বাদ দেয় আওয়ামী লীগ।

এরপর ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিতে আসা এফবিসিসিআই এর এই পরিচালককে বৃহস্পতিবার রাতে তার গুলশানের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। শুক্রবার তাকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়, দায়ের করা হয় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা।

র‌্যাবের অভিযোগ, নানা ধরনের ‘এজেন্ডা’ বাস্তবায়নে সোশাল মিডিয়ায় ‘অপপ্রচার চালানোর একটি সংঘবদ্ধ চক্র’ গড়ে তুলেছিলেন হেলেনা জাহাঙ্গীর।

গুলশান থানায় দায়ের করা মামলা দুটির এজাহার থেকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের বিষয়ে বলা হয়, র‌্যাব সাইবার পেট্রোলিং এর মাধ্যমে জানতে পারে হেলেনা জাহাঙ্গীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ‘মিথ্যা তথ্য প্রকাশ ও প্রচার’ করে আসছে। এরপর তার অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর বাসায় অভিযান চালানো হয়।

অভিযান না চালালে ‘আত্মগোপন’ বা ‘বিদেশে চলে যাওয়ার’ আশঙ্কার কথাও বলা হয়েছে এজাহারে।

তবে তার বাসায় মদ, ওয়াকিটকি, বৈদেশিক মুদ্রা, হরিণ বা ক্যাংগারুর চামড়ার কোনো আগাম তথ্য র‌্যাবের কাছে ছিল না।

এজাহারের ভাষ্য, “অভিযান চালানোর পর তার হাতে দুইটি ফোন পাওয়া যায়। একটিতে হেলেনা জাহাঙ্গীরের নামে ফেইসবুক রয়েছে। সেখানে মন্ত্রী, সংস্থা, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করাসহ মিথ্যা তথ্য প্রকাশ এবং প্রচার করার প্রমাণ পাওয়া যায়।“

এতে অভিযোগ করা হয়েছে, তার বাসার শয়নকক্ষে কাঠের আলমারিতে ১৯ বোতল বিদেশি মদ, মালয়েশিযান, আমেরিকান ডলার, ইউরো পাওয়া যায়।

এছাড়া সাতটি পরিবার সঞ্চয়পত্র, স্ট্যান্ডার্ট চাটার্ড ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ডাচ বাংলা প্রিমিয়াম ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংকের ১৯টি চেক বই পাওয়া যায়।

পাশাপাশি এটিএম কার্ড, ছয়টি পাসপোর্ট (যার একটি হেলেনা মারজান শরীফ নামে, অন্যগুলো হেলেনা জাহাঙ্গীর নামে), জুয়া খেলার সরঞ্জাম, ওয়াকিটকি, হরিণের ও ক্যাঙ্গারুর চামড়া উদ্ধারের কথা বলা হয়েছে এজাহারে।

র‌্যাব কর্মকর্তা কমান্ডার মইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, হেলেনা মারজান শরীফ তার বিয়ের আগের পাসপোর্ট। বাকিগুলো বিয়ের পরের।

আরও পড়ুন