লকডাউনের সকালে সুনসান রাজধানীর পথে কেউ বের হচ্ছেন শুধু হাঁটাহাঁটি করতে; কেউ নাস্তা খেতে, কেউবা এমনিতেই বের হচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জেরার মুখে বেরিয়ে আসছে ‘অদ্ভুত’ সব কারণ।
সোমবার সকালে নয়াবাজার ঢালে তল্লাশির সময় এমন নানা অজুহাত শুনতে হয় পুলিশকে।
সকাল সোয়া ১১টার দিকে কেরানীগঞ্জ থেকে আসা সোহেল নামেও এক যুবককে পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হয়। সোহেল জানান, চেক নিয়ে ব্যাংকে এসেছেন টাকা তুলতে।
পুলিশ তার চেক পরীক্ষা তাতে কোনো নাম, তারিখ আর টাকার অঙ্ক পায়নি।
কারণ জানতে চাইলে সোহেল বলেন, একজনের টাকা পাওনা তিনি। ওই লোক তাকে এই চেক দিয়েছেন। ব্যাংকে গিয়ে তাকে ফোন করে টাকার অঙ্ক জেনে চেকে বসিয়ে নেওয়ার কথা জানান তিনি।
কিন্তু তার যুক্তিতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি পুলিশ সদস্যরা। তাই তাকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় তল্লাশি চৌকির এক পাশে।
ওই তল্লাশি চৌকিতে সোহেলের সঙ্গে আরও কয়েকজনকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল, যারা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বেরিয়ে আটক হয়েছেন।
সেখানে রিফাত নামের এক যুবক জানান, তিনি বংশাল থাকেন। কদমতলীতে বোনের বাসা থেকে ফেরার পথে পুলিশ তাকে আটক করেছে।
লকডাউনে দূরপাল্লার সব যানবাহন থাকলেও শাকিল নামের আরেকজন জানান, তিনি গ্রামে বাড়ি সাতক্ষীরা যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত আসার পর আটকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন মোল্লা বলেন, “যারা অতি প্রয়োজন বের হচ্ছেন, তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ঠুনকো অজুহাতে যারা বের হচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যু ঠেকাতে কঠোর বিধিনিষেধ চললেও এভাবেই প্রতিদিন অপ্রয়োজনে ঘর বের হয়ে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে আটক হচ্ছে মানুষ। জেল-জরিমানা করা হলেও কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না।
পুলিশের উপ-কমিশনার জসিম উদ্দিন মোল্লা বলেন, “সবার আগে নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে। তাদের বুঝতে হবে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা।”
এদিকে র্যাব-১০ পুরান ঢাকার রায়সাহেব মোড়ে তল্লাশি চৌকি বসিয়ে ১৫ জনকে আটক করেছে।