বর্জ্য অপসারণে ‘শতভাগ’ সফলতার দাবি

ঈদুল আজহার পশু কোরবানির প্রথম দিনের বর্জ্য অপসারণে শতভাগ সফলতার দাবি করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2021, 10:04 AM
Updated : 22 July 2021, 10:04 AM

তবে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন এলাকায় অলি-গলিতে কোথাও কোথাও বর্জ্য দেখা গেছে। পাশাপাশি দ্বিতীয় দিনের বর্জ্যও জমেছে রাস্তায় কোথাও কোথাও।

সিটি করপোরশন বলছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যেই সব বর্জ্য অপসারণ হবে।

কোরবানির দ্বিতীয় দিনেও নির্ধারিত স্থান রেখে বাসার সামনে, ফুটপাতে পশু জবাই করতে দেখা গেছে অনেককে।

মিরপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন মোড়ে বা যেসব এলাকায় বেশি ময়লা হতে পারে সেসব এলাকায় আলাদা বিন রেখেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশেন। এসব বিন থেকে বর্জ্য ছোট ছোট ভ্যানে করে ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত গাড়ি এসে এসব ময়লা ঢাকার বাইরে গিয়ে নির্ধারিত স্থানে ফেলে দিয়ে আসছে।

আবার অনেক জায়গায় যেখানে কোরবানির বর্জ্য ফেলার জন্য বিন বসানো হয়নি, সেসব স্থানে প্রধান সড়কের পাশে বড় জায়গাজুড়ে ময়লা ফেলা হচ্ছে।

তবে এসব জায়গা থেকেও ময়লা সংগ্রহ করে সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ি গাড়ি এসে ময়লা নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

মিরপুর ১১ নম্বর ঘুরে দেখা যায়, সরকারি কর্মচারী আবাসিক এলাকার সামনে প্রধান সড়কের ওপর ময়লার স্তুপ হয়ে আছে। বৃহস্পতিবার সকালে সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি এসে সেসব ময়লা নিয়ে যায়।

মিরপুর রূপনগর আবাসিক এলাকার মণিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে ফেলার জন্য একটি বিশেষ বিন বসানো হয়েছে।

পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বিভিন্ন সড়ক থেকে ছোট ছোট ভ্যান নিয়ে ময়লা সংগ্রহ করে এই বিনে জমা করছে। পরে নির্ধারিত গাড়ি সেই ময়লা নিয়ে যাচ্ছে।

পরিচ্ছন্নতাকর্মী হুমায়ুন বলেন, “কুরবানি উপলক্ষে এই বিন বসানো হয়েছে। আমরা বিভিন্ন সড়কে জমা হওয়া ময়লা সংগ্রহ করে এই বিনে জমা করছি। এরপর খবর দিলে গাড়ি এসে নিয়ে যাচ্ছে।”

আবাসিক এলাকার অনেক সড়কের দুর্গন্ধ ছড়ানো বন্ধ করতে ব্লিচিং পাউডার ছিটাতে দেখা গেছে।

দ্বিতীয় দিন পুরান ঢাকার অলিগলিতে যত্রতত্র কোরবানি দেওয়া হচ্ছে; প্রায় প্রতিটি গলিতে দেখা গেল গরু জবাই করতে।

পুরান ঢাকার লালবাগ ওয়েস্ট এন্ড হাই স্কুলের সামনের সড়কে বুধবারের বর্জ্য পরে রয়েছে। ভেতরে বিভিন্ন অলিগলি ঘুরেও গতকালের কোরবানির বর্জ্য দেখা যায়।

পুরোনো বর্জ্যের সঙ্গে যোগ হচ্ছে দ্বিতীয় দিনের কোরবানির বর্জ্য। মোহাম্মদপুর, সাত মসজিদ রোড়, ধানমণ্ডি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ জায়গা পরিচ্ছন্ন রয়েছে। তবে কয়েকটি বাসার সামনে রয়ে গেছে বুধবারের বর্জ্য।

স্থানীয় বাসিন্দা আলম জানান, পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা অধিকাংশ বর্জ্য নিয়ে গেছে। ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্লিচিং পাউডার।

জাফরাবাদ এলাকার বাসিন্দা নেছার বলেন, “আমাদের এখানে বর্জ্য সব নিয়ে গেছে। কোনো ময়লা আবর্জনা নেই। নিজেরাও বাসার নিচে সব পরিষ্কার করে ফেলেছি। ব্লিচিং পাউজার দিয়েছিল- গতকাল ও আজকে তা ছিয়ে দিলাম।”

লালবাগ ও আজিমপুর কবরস্থান এলাকায় সড়কের পাশে বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল বাসার মুহাম্মদ তাজুল ইসলামের দাবি, বেঁধে দেওয়া সময়ে সব ধরনের বর্জ্য অপসারণ সম্ভব হয়েছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বুধবার রাত ১২টার মধ্যে কোরবানির প্রথম দিনের শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। আমরা সফলভাবে সব করতে পেরেছি।

“দ্বিতীয় দিনে যেসব এলাকায় কোরবানি হচ্ছে, এসব বর্জ্য আজ সন্ধ্যার মধ্যে অপসারণ করা হবে। আমাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য সর্বদা তৎপরতা রয়েছে এবং মাঠে একদল কর্মী কাজ করে যাচ্ছে।”

প্রথম দিন বুধবারের পশুর বর্জ্য রাত ১২টার মধ্যে অপসারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বলেন, নির্ধারিত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ সিটির ৭৫টি ওয়ার্ডেই কোরবানির পশুর বর্জ্য শতভাগ অপসারণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় দিনের বর্জ্য অপসারণের কাজও অব্যাহত রয়েছে।”

কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে এবার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের সাড়ে ২১ হাজার কর্মী নিয়োজিত রয়েছে। এ কার্যক্রমের তদারক করতে দুই সিটি করপোরেশন একাধিক মনিটরিং টিম গঠন করেছে। কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষও খোলা হয়েছে।

খোলা ট্রাক, পানির গাড়ি, ডাম্প ট্রাক, পে-লোডার, কন্টেইনার ক্যারিয়ার, টায়ার ডোজার, ট্রেইলার, স্কিড লোডারসহ যানবাহন ও যন্ত্রপাতি বর্জ্য অপসারণের কাজে রয়েছে সিটি এলাকায়।