মালিবাগ রেল গেইট, রামপুরা লিংক রোড, ঝিলপাড় এলাকা ঘুরে বিকালে দেখা মেলল এসব হাটের জমমজাট বেঁচাকেনা।
প্রধান সড়কের পাশেই বেচাকেনা দেখতে উৎসুখ মানুষজনও ভিড় করেছে।
‘কোরবানীর গোস্তের হাট’ নামে পরিচিত এসব জায়গায় কসাই ও দরিদ্র মানুষরা সংগৃহিত মাংস এনেছেন বিক্রি করতে। ‘দিন আনে দিন খায়’ ও ‘দিনমজুর’ ধরনের একেবারে নিম্ন আয়ের মানুষই এই হাটের মূল ক্রেতা।
রফিক বললেন, “স্যার আমরা গরিব মানুষ। এত মাংস কী করবো? আমাগো ফ্রিজও নাই। সেজন্য বিক্রি করতে আইছি। টাকাটা পাইলেই আমাগো লাভ।”
নিলফামারীর রিকশাচালক সম্রাট নামে সম্রাট হলেও দিনমজুর। মালিবাগ রেলগেইটের সামনে থেকে ৩০০ টাকায় হাড়সহ মাংস কিনেছেন।
নানা দামের মাংস বিক্রি হচ্ছে এসব হাটে। একেবারে ‘সলিড গোস্ত’ কেজি ৬০০ টাকা, হাঁড়সহ মাংস ৫০০ ও ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর চর্বি, হাঁড় নিয়ে একটু-আধটু মাংস বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।
যারা কিনতে আসছেন, দরদাম বেশি একটা না করে মাংস নিচ্ছেন তাদের সাধ্য অনুযায়ী।
মালিবাগ রেলগেইটের কাছে ছোট্ট একটা হোটেল চালায় রহিম মিয়া। তিনি তার হোটেলের জন্য দুজনের কাছ থেকে ৭ কেজি মাংস কিনলেন।
রহিম মিয়া বললেন, “আমার একটা ‘ইটালিয়ান’ হোটেল আছে। গরিব মানুষ এই হোটেল খায়। এই কয়েকদিনতো বাজারে গরুর মাংস পাওয়া যাবে না। সেজন্য এখান থেকে মাংস কিনে নিলাম। প্রতি ঈদেই আমি এখান থেকে মাংস কিনি।”
কোরবানীর মাংস এতো বড় বড় টুকরো কোথায় থেকে পাওয়া গেলো জানতে চাইলে বিক্রেতা জাফরউল্লাহ বলেন, “বিভিন্নজনের ভালো ভালো মাংসের টুকরোগুলো এক করে এখানে রাখা হয়েছে। কোনো হাড় নেই। চর্বিও একেবারে কম। এজন্য এই মাংসের কেজি ৬০০ টাকা।
“ আমার কাস্টমার কম। যারা কোরবানি দিতে পারেন নাই বা কোরবানি দেওয়ার সামর্থ নাই তারাই আমার কাস্টমার।”
তিনি বলেন, “পশুর হাটে ৩০টা ছাগল বিক্রি করেছি কিন্তু এই ৫/৬টা রয়ে গেছে বলে বিক্রির জন্য বসে আছি। বিকাল ৩টা থেকে বসে আছি, কাস্টমার পাই নাই।
“একজন মাদ্রাসার হুজুর এসেছিলেন একটা ছাগলের জন্য। কিন্তু দামে মেলেনি।”